শুক্রবার, ১০ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা
সচেতনতা

ছোঁয়াচে রোগ জলবসন্ত

ছোঁয়াচে রোগ জলবসন্ত

আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসকের পরামর্শে জলবসন্ত রোগের ভ্যাকসিন দেওয়া যেতে পারে ছবি : ইন্টারনেট

জলবসন্ত হলে ভয়ের কিছু নেই। হাঁচি-কাশি, এমনকি ত্বকের সংস্পর্শেও অন্যেরা আক্রান্ত হতে পারেন। ভাইরাসজনিত রোগ বলে আক্রান্ত রোগীকে আলাদা থাকতে দিন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। রোগের প্রতিষেধক হিসেবে আক্রান্ত রোগীকে টিকা দিন

আমাদের দেশে সাধারণত শীতের পর বসন্তের শুরুতে চিকেন পক্স বা জলবসন্তের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। অন্য সময়ে দেখা দিলেও আক্রান্তের হার খুব একটা বেশি থাকে না। জলবসন্ত বা চিকেন পক্স ছোঁয়াচে রোগ, ভেরিসেলা জোস্টার নামের ভাইরাস এর জন্য দায়ী। ছোট-বড়, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব

বয়সী এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে আক্তান্তের মধ্যে শিশু রোগীর সংখ্যাই বেশি থাকে। একবার আক্রান্ত হলে সাধারণত শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়ে যায়। অনেক সময় পরবর্তীবার এ রোগের জীবাণুর আক্রমণে ‘হারপিজ জোস্টার’ নামে আরেকটি রোগের প্রকাশ ঘটে থাকে।

 

কীভাবে ছড়ায়

কাশি-হাঁচি, এমনকি ত্বকের সংস্পর্শে এলেও অন্যরা এতে আক্রান্ত হতে পারেন। রোগটি ছড়াতে শুরু করে ত্বকে গুঁটি দেখা দেওয়ার দুই দিন আগে থেকেই। আর ছড়াতে থাকে যতদিন না সব কটি গুঁটি শুকিয়ে যায়। তাই আক্রান্ত রোগী অনেক সময় নিজে বুঝে ওঠার আগেই রোগ ছড়াতে থাকে।

 

লক্ষণসমূহ

আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসার ১০-২১ দিনের মধ্যে এ রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। ত্বকে ফুস্কুড়ি দেখা দেওয়ার ২/৩ দিন আগে জ্বরের ভাব হয়, শরীর ব্যথা করে। এমনকি পেট ব্যথাও হয়ে থাকে। ফুস্কুরিতে চুলকানি ও জ্বালা-পোড়া হতে পারে। ফুস্কুরিতে পানি আসে এবং সব শেষে শুকনো কালো বর্ণের খোসা তৈরি হয়ে থাকে। এর স্থায়িত্ব ১৫/৩০ দিন হতে পারে।

 

চিকিৎসা

রোগটি ভাইরাসজনিত বিধায় এ রোগের কোনো চিকিৎসা প্রয়োজন হয় না। কিছুটা সাবধানতা অবলম্বন করলেই রোগী সেরে উঠতে পারেন। তবে লক্ষণ দেখা দিলে রোগীকে প্রশান্তি দেওয়ার জন্য চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে। রোগের তীব্রতা বেশি হলে অ্যান্টিভাইরাল বা অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়ে থাকে।

জটিলতা

আক্রান্ত শিশুর ক্ষেত্রে অনেক সময় শ্বাসনালির সংক্রমণ, পাতলা পায়খানা দেখা  দিতে পারে, যা মৃত্যুর কারণ হতে পারে। ত্বকে ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ হতে পারে। পরবর্তীতে ত্বকে গর্ত থেকে যেতে পারে।

 

প্রতিরোধ : আক্রান্ত রোগীকে পৃথক করার মাধ্যমে এর সংক্রমণ কমানো সম্ভব। আক্রান্ত শিশুকে এ রোগের প্রতিষেধক টিকা দিন। রোগীকে প্রচুর পানি ও পুষ্টিকর খাবার খেতে দিন। জলবসন্তে মাছ-মাংস খাওয়া নিষেধ বলে প্রচলিত আছে। এটি ভুল ধারণা। বরং এগুলো বেশি খেতে দিন। ত্বকের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হতে পারে। সম্ভব হলে প্রতিদিন গোসল করান। ফুস্কুড়িগুলো খুঁটবেন না। স্বাভাবিকভাবেই শুকাবে এগুলো। হালকা আরামদায়ক সুতির কাপড় পরান। শিশু, গর্ভবতী নারী, ডায়াবেটিস ও ক্যান্সার এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, এমন রোগীর ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা নিন। এদের জলবসন্ত থেকে মারাত্মক নিউমোনিয়া বা অন্য জটিল অবস্থা হতে পারে, কাজেই আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর