শুক্রবার, ৩১ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

ফ্যাশনের নিপুণ কারিগর

ফ্যাশনের নিপুণ কারিগর

মার্চ ১৯৭৩। স্বাধীনতার বয়স তখন মাত্র দুই। আর স্বাধীন বাংলাদেশ মাত্র এক বছর দুই মাসের। চারদিকে যুদ্ধের বিভীষিকাময় স্মৃতিচিহ্ন। সরকার এবং মানুষ সদ্যজাত দেশকে পুনর্গঠিত করার চেষ্টা করছে আপ্রাণ। সবার মধ্যেই অবাক উৎসাহ; প্রত্যেকেই আশাবাদী। অন্ন ও বাসস্থানের মতো পরিধেয়র প্রয়োজন অস্বীকারের জো না থাকলেও সেই সময়ে ফ্যাশন হাউস করার কল্পনাটা ছিল নিছকই দিবা স্বপ্ন। অথচ সেই স্বপ্নটাই দেখেছিলেন আশরাফুর রহমান ফারুক। এমনই এক ক্রান্তিতে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন নিপুণ; দেশ গঠনের প্রয়াস হিসেবেই। সঙ্গে জুড়ে যায় বাংলাদেশের প্রথম ফ্যাশন হাউস প্রবর্তনের গৌরব। উদ্দেশ্য ছিল দেশের মানুষকে মায়ের দেওয়া মোটা কাপড়কে আরও আধুনিক উপস্থাপনায় উপহার দেওয়া। অর্থাৎ খাদিকে জনপ্রিয় করা। সেভাবেই মন্দাক্রান্তালয়ে এগিয়েছে নিপুণ। তারপর ১৯৮৬ সালে অধুনালুপ্ত বিচিত্রায় দেশি ফ্যাশনকে প্রাণিত করতে ঈদ ফ্যাশন প্রতিযোগিতার প্রবর্তন হলে প্রথম বছরেই বিচিত্রা কাপ পেয়েছে দীর্ঘ প্রয়াসের স্বীকৃতি হিসেবে। সেই প্রথমবার বাংলাদেশের ফ্যাশনের দূরদর্শী ব্যক্তিত্ব বিচিত্রা সম্পাদক প্রয়াত শাহাদাত চৌধুরী নিপুণের গায়ে লাগিয়ে দেন প্রশংসার তকমা। ফ্যাশনের নিপুণ কারিগর; ট্যাগলাইনে আজও শ্রদ্ধা ও গর্ব বহন করছে নিপুণ। ‘বিচিত্রা কাপ’ এবং পরবর্তীতে ঈদ ফ্যাশন প্রতিযোগিতার ধারাবাহিকতা নিপুণের সৃজনশীলতা বেগবান। সেই সময়েই নিপুণ দেশের মানুষকে, বিশেষত রাজধানীবাসীকে জানাতে তৈরি করে টেলিভিশন বিজ্ঞাপন। বাংলাদেশের দেশীয় ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে সেটাই প্রথম এই ধরনের পদক্ষেপ। নব্বই দশকের গোড়ায় ধানমন্ডির সোবহানবাগের হোসেন প্লাজার বিশাল ফ্ল্যাগশিপ শপও নিপুণের সাফল্যের মুকুটে যোগ করে নতুন পালক। সময়ের ধারায় নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে নিজের অবস্থান অক্ষুণ্ন রেখেছে বাংলাদেশের প্রথম ফ্যাশন হাউস নিপুণ ক্রাফটস লিমিটেড। কর্মসংস্থান সৃষ্টি আর কারুশিল্পীদের প্রণোদিত করার পাশাপাশি অবদান রাখছে দেশের অর্থনীতিতে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর