শুক্রবার, ৩১ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

প্রয়োজনে ফ্যাশনে সানগ্লাস

প্রয়োজনে ফ্যাশনে সানগ্লাস

♦ মডেল : তুষার ও মারজান সুমি ♦ পোশাক : পিজিয়ন ♦ ছবি : ফ্রাইডে ♦ মেকওভার : ওমেন্স ওয়ার্ল্ড

প্রকৃতিতে চলছে চৈত্রদিনের গান। এ সময় বাইরে ধুলাবালির প্রকট প্রচণ্ড। সেই সঙ্গে আছে রোদের ঝক্কি। রোদের তাপ থেকে ত্বক রক্ষা করার জন্য আজকাল ছেলেরাও মেয়েদের মতো সানস্ক্রিন ব্যবহার করে কিন্তু এতে কি চোখের সুরক্ষা হয়? ধুলাবালি আর রোদে চোখের বারোটা বেজে যায়। অনেকে টের না পেলেও অনেকের আবার চোখ জ্বলে এবং লাল হয়ে যায়। ধুলাবালি আর খোলা বাতাসে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া আক্রমণের শিকার হয় চোখ। এসব থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হচ্ছে সানগ্লাস। আবার তারুণ্যের ফ্যাশনেও সানগ্লাস একটি অন্যতম প্রিয় অনুষঙ্গ।

 

সানগ্লাস পরার জন্য দিন ও তিথি লাগে না। সব ঋতুতেই ফ্যাশনের এই অনুষঙ্গটির ব্যবহার মেলে।  আসলে সানগ্লাস শুধুই কি ফ্যাশন! না, আসলে এর সঙ্গে প্রয়োজনটাও জুড়ে আছে ওতপ্রোতভাবে। কেননা, চৈত্র্যের এই ক্ষরতাপে প্রকৃতিতে এখন ছড়িয়ে আছে ধুলোবালি। এ সময় বাইরে ধুলোবালির প্রকট অনেক বেশি। সঙ্গে রোদের তাপ তো আছেই।

 

আসলে একটা প্রচলিত ধারণা ছিল, সানগ্লাস মানেই গরমকালে পরার জিনিস। ভুল, সারা বছর সানগ্লাস ব্যবহার করা খুব জরুরি, কারণ মেঘলা দিনেও সূর্যের ইউভি রশ্মি চোখের পক্ষে ক্ষতিকর। তাছাড়া ধুলোবালি আর রোদে চোখের বারোটা বেজে যায়। অনেকে টের না পেলেও চোখ জ্বলে এবং লাল হয়ে যায়। ধুলোবালি আর খোলা বাতাসে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণের শিকার হয় চোখ। এসব থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হচ্ছে সানগ্লাস। আবার তারুণ্যের ফ্যাশনেও সানগ্লাস একটি অন্যতম প্রিয় অনুষঙ্গ।

 

রাজধানীর মগবাজারের সেঞ্চুরি আর্কিডের চশমার দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেল বাহারি ফ্যাশনের সানগ্লাসের কালেকশন। সানগ্লাসগুলো ফ্যাশন তো বটেই, ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখেও সানগ্লাসের কালেকশনগুলো রাখা হয়। এক বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ‘ফ্যাশনেবল তরুণ-তরুণীদের সাধারণত ওজনে হালকা-পাতলা এবং গাঢ় রঙের শেড সানগ্লাসের প্রতিই আগ্রহ বেশি। সূর্যের তাপ থেকে রক্ষার জন্য তো বটেই, ধুলোবালি থেকেও চোখকে সুরক্ষিত রাখতে প্রয়োজন বুঝে ফ্যাশনেবল সানগ্লাসটি বেছে নেয়।’

 

কেমন সানগ্লাস পরা উচিত?

সানগ্লাস কেনার আগে অনেকেই জানেন না আসলে কেমন সানগ্লাস কেনা উচিত। প্রয়োজনে বিক্রেতাদের পরামর্শও নিতে পারেন। সানগ্লাস কেনার আগে এমন সানগ্লাস কিনুন যা অন্তত ৯৯% থেকে ১০০% সূর্যের ইউভিএ এবং ইউভিবি রশ্মি থেকে আপনার চোখকে বাঁচাতে পারে। উইভি ৪০০ এর লেবেলযুক্ত সানগ্লাস চোখকে সুরক্ষিত রাখে, সুতরাং কেনার সময় এটা দেখে নেওয়া খুবই জরুরি। পোলারাইজড লেন্সযুক্ত সানগ্লাস সূর্যের কড়া আলো থেকে তো বাঁচায়ই, তা ছাড়া এর সাহায্যে চারপাশে পরিষ্কার দেখাও যায়। আপনি কতক্ষণ বাইরে কাটান, সেই অনুযায়ী বেছে নিন আপনার সানগ্লাস। পোলারাইজড লেন্স ওয়াটার, বরফ আর কাচ থেকে প্রতিফলিত আলোক রশ্মি কমাতে সাহায্য করে। এসব সানগ্লাস বেড়াতে গেলে বা ড্রাইভিংয়ের সময় খুবই কার্যকরী। আবার যারা বাইরে বেশির ভাগ সময় কাটান তাদের জন্য র‌্যাপ অ্যারাউন্ড সানগ্লাস চোখকে সবচেয়ে বেশি সুরক্ষিত রাখে। দেখতে হবে যে সানগ্লাসের টেম্পল আর্ম যথেষ্ট বড় কিনা, না হলে পাশ দিয়ে আলো ঢুকতে পারে। তবে ডার্ক শেডের সানগ্লাস মানেই যে তা লাইট শেডের সানগ্লাসের চেয়ে চোখকে বেশি প্রোটেশন দেবে, তার কিন্তু কোনো মানে নেই। বড় ফ্রেমের সানগ্লাস পরা নিঃসন্দেহে ফ্যাশনে ইন। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে মুখের অনেকটা অংশ যেন ঢেকে থাকে। আবার খেয়াল রাখতে হবে, মুখের তুলনায় খুব বেশি বড় ফ্রেমের সানগ্লাস ব্যবহারে মাথা ব্যথা হতে পারে। চাপ পড়তে পারে কানের পাশে, নাকের ওপরও। সুতরাং সানগ্লাস হওয়া চাই সামঞ্জস্যপূর্ণ। খুব বেশি দাম দিয়ে ডিজাইনের সানগ্লাস কেনা মানেই চোখের পক্ষে তা দারুন ভালো, এ ধারণাও ভুল। নির্ভরযোগ্য দোকান থেকে আপনার বাজেট অনুযায়ী কিনে ফেলুন পছন্দমতো সানগ্লাস। যে কোনো চশমা কিংবা সানগ্লাস পরার পর চারদিক দেখে নিশ্চিত হবেন যেন কোনো ইমেজ-ডিসটিশন না হয়। গ্লাস বা চশমা অনলাইন না কেনাই ভালো, আগে ট্রাই করে তবেই কিনবেন। চশমার ফ্রেম মেটাল বা প্লাস্টিকের হতে পারে, কিন্তু যদি আপনার স্কিনে ইরিটেশন বা অ্যালার্জির সম্ভাবনা থাকে, তা হলে স্টেইনলেস স্টিলের ফ্রেম নিন। এমন চশমাও আজকাল পাওয়া যায়, যার ফ্রেমও বদলে বদলে পরা যায়। চশমা তো পরা হবেই সঙ্গে স্টাইলও করা হলো।

প্রেসক্রিপশন সানগ্লাস 

বেড়াতে গিয়ে সবাই সানগ্লাস পরে দারুণ স্টাইলিশ লুকে একের পর এক সেলফি তুলে চলেছে দেখে আপনার মনটা একটু খারাপ হয়ে যায়। সত্যি, চোখে পাওয়ার থাকলে কি আর চশমা খুলে রঙিন সানগ্লাস পরে ঘুর বোড়নো যায়? হ্যাঁ, যায় তো। যারা সব সময় চশমা পরে থাকেন আবার সানগ্লাস পরতে চান তাদের মুশকিল আসান করবে প্রেসক্রিপশন সানগ্লাস। চোখের পাওয়ার অনুযায়ী লেন্স থাকায় এই বিশেষ সানগ্লাস পরে আপনি পরিষ্কার দেখতেও পাবেন আর সূর্যের আলো থেকে চোখ সুরক্ষিতও থাকবে। বাড়তি পাওনা স্টাইলিশ লুক! যে কোনো বড় অপটিক্যাল স্টোরে পেয়ে যাবেন প্রেসক্রিপশন সানগ্লাস।

 

ফ্যাশনে সানগ্লাস

সানগ্লাসের ফ্যাশনে এখন গাঢ় রং খুব ট্রেন্ডি। নীল, সবুজ, লাল, কমলার মতো রঙের প্রাধান্য দেখা যায়। চাইলে কয়েকটা শেডের সানগ্লাসও মিলবে। আয়োজন কিংবা পার্টিভেদে সানগ্লাস কিনে নিতে পারেন। ক্লাব মাস্টার ফ্রেম, ফরমাল কিংবা ঘরোয়া দুই ধরনের অনুষ্ঠানেই মানিয়ে যায়। আর এভিয়েটর ফ্রেম ফরমাল পোশাকে বেশি মানানসই। ২০১৬-এর লেটেস্ট ট্রেন্ড অনুযায়ী এখন ফ্যাশনে ইন ওভারসাইজড সানগ্লাস, রেট্রো স্টাইল আর সেমি রিমলেস সানগ্লাস। তাছাড়া, উজ্জ্বল রঙের শেড্স পরলেও স্টাইলিশ দেখাবে। এক্সপেরিমেন্ট করলেও সানগ্লাস বা চশমা পরার পর সেকেন্ড ওপিনিয়ন নিতে ভুলবেন না। মুখের গড়ন ও চুলের স্টাইলের সঙ্গে মিল রেখে বেছে নিন পছন্দের সানগ্লাস। সঙ্গে দরকারমতো পাওয়ারটিও যুক্ত করে নিন।

 

কোথায় পাবেন এবং দরদাম

বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মধ্যে রেব্যান, ফার্স্ট ট্র্যাক, লুইস বাটন, গুচি, আরমানি, আমেরিকান অপটিক্যালের চাহিদা রয়েছে। এদের মধ্যে রেব্যানের সানগ্লাসের দাম পড়বে ১২ হাজার থেকে ৩০ হাজার। ফার্স্ট ট্র্যাক সানগ্লাসের দাম পড়বে ১ হাজার থেকে ১৫ হাজারের মধ্যে। আর গুচি এবং আরমানি সানগ্লাসের দাম পড়বে ২ হাজার থেকে ১৪ হাজার টাকা। একটু সাশ্রয়ী মূল্যে সানগ্লাস কিনতে চাইলে ঢুঁ মারতে পারেন এলিফ্যান্ট রোডে। এখানে ৩০০ থেকে শুরু করে ৫ হাজার টাকা দামের মধ্যে পাওয়া যাবে পছন্দের সানগ্রাস।  এ ছাড়া নিউমার্কেট, ফার্মগেট, সীমান্ত স্কয়ার, মগবাজার, বিজয় নগরসহ রাজধানীর বিভিন্ন শপিং মলে পাওয়া যাবে বিভিন্ন ধরনের নামিদামি সানগ্লাস।

সর্বশেষ খবর