শিরোনাম
শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

স্লিমে জাদু

স্লিমে  জাদু

♦ মডেল : জাকিয়া মুন ♦ পোশাক : ক্যাটস আই ♦ সাজ : ওমেন্স ওয়ার্ল্ড ♦ ছবি : সামির খান

ডায়েটের আসল উদ্দেশ্য স্বাস্থ্যকর ওজন নিয়ন্ত্রণ ও শারীরিকভাবে ফিট থাকা। স্লিম আর ফিট থাকতে লাইফস্টাইলের সঙ্গে অবশ্যই খাওয়া-দাওয়ার ধরনে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। শুরুতেই বদভ্যাস ত্যাগ করুন। মিষ্টি ও ভাজাভুজি বাদ দিন। ভাত খান নামমাত্র। প্রতিদিন হাঁটা, সাঁতার বা ফ্রি-হ্যান্ড ব্যায়াম যে কোনো একটি বেছে নিন।

মেদবিহীন সুন্দর স্বাস্থ্যের জন্য জিমে যাওয়ার সময় নেই। এ জন্য আফসোস না করে নিজেই একটু উদ্যোগী হোন। মূলকথা, ডায়েটের আসল উদ্দেশ্য স্বাস্থ্যকর ওজন নিয়ন্ত্রণ ও শারীরিকভাবে ফিট থাকা। স্লিম আর ফিট থাকতে লাইফস্টাইলের সঙ্গে  অবশ্যই খাওয়া-দাওয়ার ধরনে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। শুরুতেই বদভ্যাস ত্যাগ করুন। মিষ্টি ও ভাজাভুজি বাদ দিন। ভাত খান নামমাত্র। প্রতিদিন হাঁটা, সাঁতার বা ফ্রি-হ্যান্ড ব্যায়াম যে কোনো একটি বেছে নিন। আরও জানতে বিস্তারিত পড়ুন। লিখেছেন— আবদুল কাদের

 

মানুষের দুটি বিষয়ে চরম আগ্রহ। জ্যোতিষচর্চা আর ডায়েট। যে কোনো আড্ডায় কিংবা পার্টিতে মানুষের এসব বিষয় নিয়ে আগ্রহের কমতি নেই। আসলে মূলকথা হলো আমাদের সবারই ভালো থাকার ইচ্ছা। কিন্তু সেই ইচ্ছা পূরণের আন্তরিক তাগিদও থাকতে হবে। সঙ্গে চাই সুস্থ এবং

সঠিক নিয়মের লাইফস্টাইল।

 

স্লিম ফিট নিয়ে আজকাল মানুষের নিরন্তর চর্চা চোখে পড়ার মতো। আর এই বিষয়টির ওপর মেয়েদের চর্চা, সাধনা একটু বেশিই পরিলক্ষিত হয়। এ জন্য হরেকরকম ডায়েট প্ল্যান তো আছেই, সঙ্গে নিত্যনতুন থিওরি আর ফ্যাশনেবল পোশাকের ভাবনা। সকালে ঘুম থেকে উঠে চা না ফল, নাস্তায় ডিম নাকি শুধুই দুধ আর ড্রাইকেক? টোস্ট আবার ব্রাউন ব্রেড তো? এমন হাজারো প্রশ্নে অনেকেই বিভ্রান্ত। আসল কথা হলো প্রতিটি বিষয়েরই নির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে। সেটা বোঝা প্রয়োজন। স্লিম থাকা ফিগারের ক্ষেত্রেও সেই একই কথা প্রযোজ্য। ডায়েট করার আগে একবার ভেবে দেখুন কেন ডায়েট করতে চাইছেন?

 

নানা প্রয়োজন থাকতে পারে, যারা সিনেমা, সিরিয়াল, মডেলিং জাতীয় পেশায় যুক্ত, তাদের যে ধরনের কঠোর পরিশ্রমের প্রয়োজন, ভিন্ন কোনো পেশার মানুষ বা একজন সাধারণ মানুষের কিন্তু সেই প্রয়োজন নেই। তবে নির্দিষ্ট ওজন নিয়ন্ত্রণ না করলেই নয়। সুস্থ থাকার প্রয়োজনীয়তা তো সবারই আছে। আসল কথা হলো, জীবন একটাই। তাই সুন্দর থাকতে হবে, সুস্থ থাকতে হবে, নিয়ম মেনে চলতে হবে, সুঅভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। খুব কিন্তু কঠিন নয় ব্যাপারটা। শুধু ছোট ছোট পরিবর্তন, যাকে বলে লাইফস্টাইল মডিফিকেশনস। যেমন— চিনি যতটা সম্ভব কম খাওয়া, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মিষ্টি খাওয়ার পরিমাণ একেবারে কমিয়ে ফেলা, সারা দিনের খাবারটা যদি ৬-৭ ভাগে ভাগ করে ফেলা যায়, ভাত দিয়ে তরকারি, মাছ না খেয়ে উল্টে দিন অভ্যাসটা, মানে তরকারি দিয়ে ভাত খান। বুঝলেন না?

 

ভাত হবে সামান্য, তরকারি, সালাদ, চিকেন কিংবা মাছ দিয়ে তৈরি ভাজা খাবার কমাতে থাকুন। রাতের খাবার সাড়ে ৮টার মধ্যে সারতে চেষ্টা করুন। হ্যাঁ, এত নিয়মের বেড়াজালে হাঁসফাঁস লাগছে? একবার অভ্যাস হয়ে গেলে দেখবেন এই নিয়মের নড়চড়ে মন খারাপ হবে। তবে, অনেকেই মনে করেন স্লিম হতে না খেলেই চলবে। এমনটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। আবার ডায়েট মানে সারাক্ষণ ক্যালরির হিসাবে নয়। এই সংখ্যাতত্ত্বের গোলকধাঁধায় একবার ঢুকলে জীবন দুর্বিষহ। তখন আর কোনো কিছুই ভালো লাগবে না। তার চেয়ে সময়মতো খেতে চেষ্টা করুন, স্বাস্থ্যকর, সুস্বাদু খাবার খান। এক-আধ দিন নিয়ম ভাঙলে মহাভারত অশুদ্ধ হবে না। আর সব থেকে জরুরি হলো একবারে বেশি খাবেন না। পেটে জায়গা রেখে খান।

ওজন কমানোর চেয়ে বেশি সমস্যা হয় ওজন কমানোর বিষয়টি ধরে রাখার ক্ষেত্রে। কষ্ট করে ব্যাপক পরিশ্রম করে ওজন কমিয়ে এনে পরে পরিশ্রম করা ছেড়ে অর্থাৎ ব্যায়াম ও ডায়েট করা ছেড়ে দিয়ে আবার মোটা হয়ে যান। এক্ষেত্রে নিজেকে স্লিম কিংবা ডায়েট নিয়ন্ত্রণে উৎসাহী হতে হবে। আপনি যদি মন শক্ত রাখতে না পারেন তাহলে কিছুই কাজ করবে না। আপনি মন শক্ত রেখে ডায়েট এবং ব্যায়াম করে গেলেই আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রেখে চিরকাল স্লিম থাকতে পারবেন। কিন্তু আপনি যদি মাঝ পথেই উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন তাহলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলবেন।

 

অস্বাস্থ্যকর সব খাবারকে না বলে স্বাস্থ্যকর খাবারের দিকে নজর দিন। তবে এর মানে এই নয় যে আপনি একেবারেই কেক, পেস্ট্রি, আইসক্রিম বা ফাস্টফুড খেতে পারবেন না। শুধু পরিমাণ কমিয়ে সপ্তাহে ১ দিন এমন খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন, তাও পরিমিত। প্রয়োজনে ৩ বেলার পরিবর্তে ৪ বেলা অল্প করে খাবার খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন। তবে ৩ বেলায় যা খেতেন সেটাই ভাগ করে ৫-৬ বেলাতে নিয়ে আসুন। একবারে বেশি খেলে খাবার হজম হতে দেরি হয়, যার কারণে দেহে মেদ জমে। ৫-৬ বার খাবার খেলে একবারে কম খাওয়া হবে, মেদও জমবে না। ব্যায়াম করার জন্য আলাদা সময় বের না করতে পারলেও শারীরিক পরিশ্রমকে না বলবেন না কখনোই। স্লিম হওয়ার ব্যাপারটা ধরে রাখতে চাইলে পরিশ্রমের অভ্যাস তৈরি করে ফেলুন।

 

শুধু লাইফস্টাইল-ই নয়, পোশাকের ওপরও নির্ভর করে আপনার স্লিম ম্যাজিক। এক্ষেত্রে নারীদের সচেতনতাই একটু বেশি। পোশাক পরার পর যদি মোটা দেখায়, তা একেবারেই কাম্য নয়। বিশেষ করে যদি পেটের মেদ ড্রেসের ওপর দিয়ে উঁকি মারে!  পোশাকের ধরন অনুযায়ী অনেক সময় মোটা ও পাতলা দেখায়। সেই মতো বেছে নিতে হবে আপনার পরিধেয় কাপড়। স্লিম লুক পেতে নিয়মিত ডায়েটের পাশাপাশি আপনার ফ্যাশনে যোগ করুন কয়েকটি টিপস।

 

ভি-নেক ড্রেস : বডি শেপ যাই হোক না কেন, ভি-নেক ড্রেসে প্রত্যেক মেয়েকেই ভালো মানায়। মোটা দেখার হাত থেকে বাঁচতে বেছে নিতে পারেন ভি-নেক ড্রেস।

 

প্রিন্টেড টপ : শরীরের গড়ন ভারি হলে টপ পরতে একটু ইতঃস্তত বোধ হয়। এমনটা হলে বেছে নিন প্রিন্টেড টপ। আপনাকে শুধু সুন্দরী নয়, স্লিমও দেখাবে।

 

টিউনিক টপ : লম্বা টিউনিক টপ ঢেকে দিতে পারে শরীরের মোটা ভাব।

 

টপ : অনেক সময় মনের মতো টপ পরার পর নিজেকে মোটা লাগে। টপের ওপর দিয়ে গলিয়ে নিতে পারেন হালকা কোনো টপ। শরীরের কাঠামো তাতে সুন্দর দেখাবে।

 

জ্যাকেট : মেয়েদের ফিগার সুন্দর দেখানোর অন্যতম পোশাক বেল্ট দেওয়া জ্যাকেট। লম্বা বা ছোট লেন্থের জ্যাকেটে বেশ স্লিম দেখাবে।

 

স্কার্ফ : পেট দিনকে দিন সামনের দিকে ঝুঁকে আসছে। পশ্চাৎ অংশও বেশ স্ফিত। এমন হলে একটি স্কার্ফ আপনার লুকসকে বদলে দিতে পারে। মনের মতো একটি স্কার্ফ জড়িয়ে নিলে ঢাকা পড়ে যাবে ভারি গড়ন।

 

স্লিমলাইন ট্রাউজার : স্লিম লুকস্ পেতে বেছে নিতে পারেন স্লিমলাইন ট্রাউজার। কিন্তু ট্রাউজারে বাড়তি পকেট ও বোতাম এড়িয়ে চলাই ভালো।

 

ফিট ও ফ্লেয়ার ড্রেস : সবার চোখে নিজের ভারি গড়ন এড়াতে চান? বেছে নিতে পারেন সুন্দর কারুকার্যের পোশাক। পোশাকটি একদম ফিট হলেও ডিজাইনে ঢাকা পড়ে যাবে ভারি গড়ন এবং আপনাকে বেশ স্লিম দেখাবে।

 

স্লিম ফিট থাকতে সুন্দর লাইফস্টাইল তো বেছে নেবেনই, সঙ্গে প্রফেশনালের পরামর্শও নিন। আপনার জন্য রইল সুন্দর, সুস্থ জীবনের কামনা।

 

স্মার্ট ডায়েট চার্ট

সকাল : পানি, ডিমের সাদার অমলেট, সবজি, ১-২টা টোস্ট বা সবজি।

দুপুর : সালাদ, সবজি, ডাল, রুটি বা ভাত।

বিকাল : ঝালমুড়ি মাঝারি বাটি।

রাত : সালাদ, স্যুপ, সবজি, মাছের কারি, ভাত বা রুটি। সারাদিনে অবশ্যই একটি ফল খাবেন।

 

ওজন কমানোর ড্রিঙ্কস!

যাদের ‘পানি পান করলেও ওজন বাড়ে’ তারা পানি পান করেই ওজন কমাতে পারবেন। ঘরে বসেই বানিয়ে নিতে পারেন এমন সব ড্রিঙ্ক

যা কিছুদিনের মধ্যেই আপনাকে করে তুলবে স্লিম আর দুনিয়া দেখবে ‘ম্যাজিক’।

 

ড্রিঙ্ক-১

উপকরণ : শসা, পাতিলেবু চাকা চাকা করে কাটা, আদা কুচি এবং দারুচিনির টুকরো, পুদিনা পাতা।

প্রণালি : এক বোতল পানির মধ্যে এসব উপকরণ সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন সকালে উঠে পানিটা ছেঁকে সারাদিন যখন ইচ্ছা খেতে পারেন। কিছুদিনের মধ্যেই দেখবেন ওজন ঝরছে ঝরঝর করে!

 

 

 

ড্রিঙ্ক-২

উপকরণ : টমেটো কুচি ২টা, ১ টেবিল চামচ মধু ও ১/৪ চা চামচ গোলমরিচ গুঁড়া।

প্রণালি : টমেটোটা মিক্সারে হালকা গরম পানির সঙ্গে ব্লেন্ড করে নিন। তারপর ছেঁকে নিয়ে মধু মিশিয়ে নিন বা গোলমরিচ গুঁড়া মেশাতে পারেন। সকালে উঠে খালি পেটে এই ড্রিঙ্ক ঢকঢক করে খেয়ে ফেলার অভ্যাস করুন, সুফল পাবেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর