শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

টক দইয়ের ক্যারিশমা

টক দইয়ের ক্যারিশমা

♦ মডেল : নুসরাত ফারিয়া ♦ ছবি : আর্কাইভ

দুগ্ধজাত খাবারের মধ্যে টক দই হচ্ছে সবচেয়ে বেশি পুষ্টিকর। টক দইয়ে আছে প্রয়োজনীয় ভিটামিন, মিনারেল, আমিষ ইত্যাদি। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তো আছেই, সঙ্গে রূপচর্চায়ও টক দইয়ের কদর সেই আদিকাল থেকেই। জেনে নিন ত্বক ও চুলের যত্নে টক দইয়ের ব্যবহার। লিখেছেন— সুমাইয়া সিমি

 

ত্বকের যত্নে...

টক দই ত্বকের পরম বন্ধু। সুস্থ ও সুন্দর ত্বক পেতে চাইলে নিশ্চিত নির্ভর করতে পারেন টক দইয়ের ওপর। রূপচর্চায় অসাধারণ কার্যকরী উপাদান টক দই। এটি ত্বকের রোদেপোড়া ভাব দূর করে এবং ত্বকের গভীর থেকে ময়লা পরিষ্কার করে। এটি ত্বককে ময়েশ্চারাইজও করে। ত্বকের যত্নে টক দইয়ের কয়েকটি জাদুকরী ব্যবহার জেনে নিন।

 

♦  বেসন, মধু ও টক দই একসঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর মিশ্রণটি মুখসহ পুরো শরীরের ত্বকে লাগান। ২০ মিনিট পর ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের রং হয় উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত।

♦  ত্বকের রোদে পোড়া দাগ দূর করার জন্য ৪ চামচ টক দই, ১ চা চামচ মসুর ডাল বাটা একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। এই পেস্টটি মুখ, হাত এবং পায়ে লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে এলে ধুয়ে ফেলুন। ১ মাস এই প্যাকটি লাগিয়ে এর জাদুকরী ফলাফল দেখুন। যাদের ত্বক শুষ্ক তারা মধু মিশিয়ে নিতে পারেন।

♦ ত্বক ফর্সা করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন টক দইয়ের এই মাস্কটি। এর জন্য প্রয়োজন ৪ চামচ টক দই, আধা চামচ কাটা হলুদ বাটা এবং ১ চামচ বেসন। সবকটি উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করুন।

♦  ত্বকের অবাঞ্ছিত লোম নিয়ে অনেকে বিব্রত থাকেন। এই অবাঞ্ছিত লোম টক দইয়ের সাহায্যে কোনো প্রকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়া দূর করা সম্ভব। এ জন্য ১ টেবিল চামচ টক দই, ২ টেবিল চামচ, ময়দা, ১ চা চামচ লেবুর রস এবং ১ চা চামচ হলুদগুঁড়ো। এই সবকটি উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। পেস্টটি আপনার ত্বকে ঘন প্রলেপ দিন এবং শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। পানি দিয়ে ভালো করে ঘষে ঘষে ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে ২-৩ বার মিশ্রণটি ত্বকে ব্যবহার করুন। এই মিশ্রণটি ত্বকের লোমের রং পরিবর্তন করে এবং লোম ওঠার পরিমাণ কমিয়ে দেওয়ার জন্য অনেক কার্যকরী।

♦  স্টবেরি ফল ২টি ও ৪ চামচ টক দই একসঙ্গে ব্লেন্ড করে মুখে মাস্ক হিসেবে লাগাতে পারেন। এই মাস্ক ব্যবহারে ত্বক অনেক ফ্রেম হয়। ত্বকের কোলাজেনে সমতা, ব্রণ এবং বলিরেখা কমায়।

চুলের যত্নে...

নরম ও কোমল চুল কে না পেতে চায়! রইল পরামর্শ।

♦ টক দই, নারকেল তেল এবং অ্যালোভেরা জেল নিয়ে ভালো করে মিমিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এই প্যাকটি সম্পূর্ণ চুলে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। ২০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি নিয়মিত ব্যবহারে চুল হয়ে উঠতে নরম ও কোমল।

♦  মাথার তালুর রুক্ষতা এবং খুশকির জন্য অনেক সময় চুল পড়ার পরিমাণ বেড়ে যায়। এই সমস্যা সমাধানের জন্য টক দই অনেক কার্যকরী। পরিমাণমতো টক দই এর সাথে ৪ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল ভালো করে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। এটি মাথার ভালো করে ম্যাসাজ করে নিন। ৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন। এই প্রাকটি সপ্তাহে এক বার ব্যবহার করুন।

♦  ১ কাপ টক দই এর সাথে ২ চামচ মেথি গুড়ো মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। মাথার তালুসহ সম্পূর্ণ চুলে এই পেস্টটি ব্যবহার করুন। ১ ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে নিন। এটি সপ্তাহে ১ বার ব্যবহারে চুল পড়া কমে আসবে।

♦  ঝলমলে সিল্কি চুলের জন্যও ব্যবহার করতে পারেন টক দই। ১ কাপ টক দই এর সাথে ১টি কলা এবং ২ চামচ মধু ব্লেন্ড করে নিন। মিশ্রনটি চুলে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার দিয়ে ভালো করে চুলে ধুয়ে নিন।

♦  টক দই চুলের পুষ্টি জুগিয়ে চুলকে করে তোলে স্বাস্থ্য উজ্জল। ১ কাপ টক দই নিয়ে ভালো করে ফেটে নিন। এরপর এটি সম্পূর্ণ চুলে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে দিন। ২০ মিনিট পর চুল ভালোভাবে শ্যাম্পু করে ফেলুন। সপ্তাহে ১-২ বার ব্যবহারে চুল হয়ে ওঠবে ঝলমলে।

♦  যাদের চুল রুক্ষ প্রকৃতির তারা চুলে মেহেদি লাগালে চুল হয়ে ওঠে আরো রুক্ষ। ২ কাপ মেহেদির সাথে ১ কাপ টক দই মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করুন। এতে করে চুলের রুক্ষতা দূর হয়ে চুল হবে কোমল।

পার্লারে গিয়ে সময় ও টাকা নষ্ট না করে চুলের যত্ন ঘরে করুন। ঘরে তৈরি প্রাকৃতিক হেয়ার প্যাক আপনার চুলে তাত্ক্ষণিক কোন পরিবর্তন না দিলেও কিছুদিন ব্যবহারে অনেক ভাল ফল পাবেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর