শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

এই সময়ে গাছের যত্ন

নূরজাহান জেবিন

এই সময়ে  গাছের যত্ন

♦ মডেল : জান্নাতী নাঈম ♦ ছবি : রিয়াজ খান

গাছের যত্ন-আত্তির কোনো নির্দিষ্ট দিনক্ষণ নেই। সারা বছর কম-বেশি পরিচর্যা তো প্রয়োজনই। তবে গরমের এ সময়টা বৃক্ষপ্রেমীদের বেশ সচেতনতার। কেননা, এই গরমে গাছের চারা শুকিয়ে মারা যাওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। সূর্যের উত্তাপ গাছের চারা বেড়ে ওঠায় বাধার সৃষ্টি করে। দীর্ঘ সময় সূর্যের আলো চারা গাছের উপর পড়লে মাটির উর্বরতা নষ্ট হয় এবং কুঁড়ি ও ফুল মরে যায়।

 

আমাদের চারপাশের প্রকৃতিতে আপনা-আপনি বেড়ে ওঠা গাছগুলো শীত-গ্রীষ্মে নিজেদের মতো করেই নিজেকে মানিয়ে নেয়। কিন্তু ছাদে তৈরি টবের সবুজের সমারোহের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এখানে মাটি, পানি, আলো-বাতাস সব কিছুই সীমিত। বাগানের গাছগুলো প্রতিদিন পানি না পেলেও কোনো না কোনোভাবে হয়তো বেঁচে যায়, কিন্তু টবের গাছগুলো তো আর বাঁচবে না। এ সময় গাছের পুষ্টির জন্য অল্প পরিমাণে প্রাকৃতিক সারও ব্যবহার করা যেতে পারে।

 

অতিরিক্ত তাপমাত্রায় দুই-এক ঘণ্টা রোদ লাগার পর গাছগুলোর জন্য ছায়ার ব্যবস্থা করতে হবে। কোনো মৌসুমেই চারাগাছে অতিরিক্ত পানি দেওয়া উচিত নয়। নিয়মিত পানি সেচও দেওয়া চাই। এ মৌসুমে সকাল-বিকাল দুই বেলা সেচ দিলে ভালো। তবে, পানি দেওয়ার আগে মাটির অবস্থা দেখে নিন। যদি মাটি স্যাঁতসেঁতে হয়, তাহলে শুধু চারার ওপর পানি আলতো করে ছিটিয়ে দিন। রাতে গাছে পানি দেওয়া উত্তম, তাহলে সকাল পর্যন্ত তার স্থায়িত্ব থাকে।

 

গরমে সবচেয়ে বেশি নজরদারি রাখতে হয় টবে রোপণ করা মৌসুমি শাকসবজির। এই মৌসুমে চাষ করা শাকসবজির মধ্যে বরবটি, করলা, শসা, ক্যাপসিকাম, ডাঁটাশাক, কলমিশাক, ঢেঁড়স, পুঁইশাক, পাটশাক, পুদিনা ও

 

থানকুনি। আশপাশের বিভিন্ন নার্সারিতেও এসব গাছের চারা মোটামুটি সহজলভ্য। এ ধরনের শাকসবজির জন্য খুব বেশি মাটি বা বেড প্রয়োজন হয় না। যদি বেড করার কোনো সুযোগ না থাকে, তাহলে বড় মাপের টবে থাকা গাছের গোড়ায় বুনে দিতে পারেন এসব শাকসবজি।

 

গ্রীষ্মকালীন শাকসবজিতে পোকামাকড়ের আক্রমণটা একটু বেশিই থাকে। সুতরাং কীটনাশক ব্যবহার জরুরি। মাটির সঙ্গে প্রয়োজনীয় সার মেশান, তাহলে বাগান হবে আরও সবুজ ও সমৃদ্ধ। রাসায়নিকের চেয়ে প্রাকৃতিক এবং স্বাস্থ্যসম্মত কীটনাশক ব্যবহার করা ভালো। চা-পাতা, ডিমের খোসা, গোবর আর শুকনো

 

পাতা একসঙ্গে কয়েকদিন রোদে রেখে দিন। খুব ভালো সারে পরিণত হবে। এ ছাড়া রাতে ১০০ গ্রাম শুকনো মরিচের গুঁড়া ১০ লিটার পানিতে ভিজিয়ে সকালে কাপড় দিয়ে ছেঁকে নিন। এবার অল্প পরিমাণ গুঁড়া সাবান মিশিয়ে ঝাঁকিয়ে একটু ফেনা করে নিলেই স্প্রে করা যাবে। রোদ থাকা অবস্থায় এই স্প্রে ভালো কাজে আসে। আগাছা চারার বড় শত্রু। তাই আগাছার হাত থেকে চারাকে রক্ষা করতে আগাছা ছাটাই করুন। এসব আগাছা ছাঁটাইয়ে চারার বিকাশ ত্বরান্বিত হবে এবং চারা সতেজ হবে। তাই খুব বেশি কিছু নয়, একটু নজরদারি। বিনিময়ে পাবেন নির্মল বাতাস আর প্রাণভরে অক্সিজেন নেওয়ার মতো স্থান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর