শুক্রবার, ২৩ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

তারকার ঈদ রেসিপি

তারকার ঈদ রেসিপি

ফ্রাইডের জন্য নিজের পছন্দের ডিশ হাতে কণ্ঠশিল্পী আঁখি আলমগীর, ছবি তুলেছেন সামির খান বিল্লাল

দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। নতুন পোশাক পরে ঘুরে বেড়ানো আর মজার সব খাবারের আয়োজন নিয়ে প্রস্তুত সবাই। ঘরে হোক আর বাইরে— অতিথি আপ্যায়নে সবাই চান ভিন্ন স্বাদের খাবার। তাই বলে চিরায়ত মিষ্টি, কোরমা, বিরানি বাদ থাকছে না মোটেই। মুখরোচক খাবার নিয়ে ঈদের দিনটিতে উৎসবে মাতছেন তারকারাও। বিনোদন পাড়ার তারকাদের পছন্দের রেসিপি দিয়ে আপনি আপ্যায়ন করতে পারেন প্রিয়জনের...

 

আঁখির প্রিয় চিকেন লাজানিয়া

 

উপকরণ

♦  চিকেন কিমা ২ কাপ

♦  আদা ১ চা চামচ

♦  রসুন কুচি ১ চা চামচ

♦  মরিচ স্বাদমতো

♦  লবণ পরিমাণমতো

♦  কালো গোলমরিচ ৫-৭টি

♦  লাজানিয়া সিটস ৯-১২টি

♦  লাজানিয়া ক্রিম

♦  মোজারেলা চিজ গ্রেট করা

 

প্রণালি

চিকেন কিমা আদা, রসুন, মরিচ, গোলমরিচ ও স্বাদমতো লবণ দিয়ে সেদ্ধ করে নিতে হবে। কিমাটি যেন শুকিয়ে যায়। এবার একটি চারকোনা ডিশ বেছে নিন। তাতে প্রথমে এক পরত চিকেন কিমা দিতে হবে। কেউ চাইলে বিফ কিমাও দিতে পারে। তার ওপর মোজারেলা চিজ গ্রেট দিয়ে দিন এক পরত। সমান ভাবে লাজানিয়া ক্রিম দিয়ে তার ওপর লাজানিয়া সিটস তিনটি বা চারটি দিয়ে একটি পরত তৈরি করুন। ঠিক একইভাবে পরের সিটগুলো আবার কিমা দিতে হবে। তার ওপরে মোজারেলা চিজ গ্রেট, লাজানিয়া ক্রিম এবং লাজানিয়া সিটস দিয়ে সাজান। এইভাবে বাকি সিট দিয়ে লেয়ার করে সাজাতে হবে। সবার ওপরে মোজারেলা চিজ দিতে হবে বেশি করে।

এরপর ওভেনে দিতে হবে ১৫০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট। ব্যস রেডি। এই ডিশগুলো নাস্তা বা ডিনারে ব্যবহার করা যেতে পারে। চিজ থাকায় খাবারটি মোটামুটি ভারী হয়। তাই ডিনারেই খেতে পারেন মজাদার চিকেন লাজানিয়া। আর ঈদের খাবারে ভিন্নতা আনতে এর জুড়ি নেই।

 

গানের পাখির ঈদ

গানের পাখি আঁখি আলমগীর। আজ দেশে তো কাল বিদেশে। স্টেজ শো, প্লে ব্যাক, টিভি প্রোগ্রামসহ নানা কাজে ব্যস্ত থাকেন মাসজুড়ে। তাই অনেকে হয়তো ভাবতে পারেন এত ব্যস্ত মানুষের রান্নাবান্নার সময় কোথায়? কিন্তু তার সঙ্গে আড্ডার ফাঁকে জানা গেল, বাসায় অতিথি এলে কিংবা যে কোনো উৎসবে নিজ হাতে রান্না করতে বেশি পছন্দ করেন। বাসার সদস্য থেকে শুরু করে আগত অতিথি বা বন্ধুদের মাঝেও যারা তার হাতের রান্নার স্বাদ পেয়েছেন, তারা দাবি করে বসেন আঁখিকেই রান্না করে খাওয়াতে হবে। আঁখি আলমগীর একগাল হেসে বললেন, আমি রান্নাঘরে ঢুকলে সেদিন আর খুব সহজে বের হতে পারি না। রান্না করতে গেলে অল্পস্বল্পও পছন্দ না আমার। বড় পাতিলে বেশি করে রান্না করি। তাছাড়া রান্না শেষে দেখা যায় আইটেম হয়ে যায় ১২-১৪টা। আর তাই বাসায় অতিথি আসার কথা থাকলে আমি আগের রাতেই রান্না করে রাখি। নইলে পরদিন এত সময় পাওয়া যাবে না। তার কাছ থেকে জানা গেল, দেশের ভিতর বা বাইরে যেখানেই তিনি যান, ভিন্ন ভিন্ন মেন্যু দেখে খাবারের স্বাদ নেন। তারপর বাসায় এসে সেসব খাবারের প্র্যাকটিস চলে। রান্না বান্নার ব্যাপারে তার মেয়ে দুটিও খুব উৎসাহী। মেয়েদের অবশ্য বেশি পছন্দ জাপানি রান্না। তারা মায়ের সঙ্গে রান্না করতে ভালোবাসে। মায়ের হাতের কোরমা, রোস্ট আর গরুর ঝাল ফ্রাই তারা খুবই পছন্দ করে। এবারের ঈদের রান্নায় কী কী থাকছে এমন প্রশ্নের উত্তরে আঁখি বলেন, ঈদ মানেই আমার কাছে প্লেন সেমাই। ওটা ছাড়া ঈদ-ই মনে হয় না। তাই সেমাই থাকবে তবে ঘন দুধ, পেস্তা, কাজু, কিশমিশ দিয়ে খুব মজা করে রান্না করতে হবে। এদিন পোলাও, কোরমা, রোস্ট এগুলো থাকছে নিয়মিত মেন্যু হিসেবে। তাছাড়া বিদেশি কিছু আইটেম আমি খাবারের তালিকায় রাখি। এতে খাবারের স্বাদে ভিন্নতা যোগ হয়। এবার করব মিক্স সস উইথ পাস্তা ও চিকেন লাজানিয়া। ঈদের দিন ব্যস্ততা থাকে অনেক। তবে ঘোরাঘুরির মধ্যে বাবা ও মায়ের বাড়ি যাওয়াটা বাধ্যতামূলক। লাইভ প্রোগ্রাম থাকলে সেখানে সময় দিই। সবমিলে ঈদ মানে জমপেস খাওয়া-দাওয়া আর আপন মানুষকে সময় দেওয়া।

 

 

ন্যান্সির পছন্দের ইলিশ কোরমা

উপকরণ

♦  ইলিশ মাছ ৫-৬ টুকরা

♦  তেল আধা কাপ

♦  গোল করে কাটা পিয়াজ ২ টেবিল চামচ

♦  বাটা পিয়াজ ১ টেবিল চামচ

♦  এলাচ ৪টি

♦  দারুচিনি ২ ইঞ্চি

♦  মরিচ গুঁড়া পরিমাণমতো

♦  আদা, রসুন বাটা ২ চা চামচ

♦  জিরা আধা চা চামচ

♦  টকদই আধা কাপ

♦  ঘি ১ টেবিল চামচ

♦  গুঁড়ো দুধ গোলানো আধা কাপ

♦  বাদাম বাটা ১ টেবিল চামচ

♦  কিশমিশ ১ টেবিল চামচ

♦  পিয়াজ বেরেস্তা প্রয়োজনমতো

♦  কাঁচামরিচ কয়েকটি

♦  লবণ স্বাদমতো

প্রণালি

কড়াইয়ে তেল গরম হয়ে এলে কাটা ও বাটা পিয়াজ, এলাচ, দারুচিনি, আদা, রসুন, মরিচ গুঁড়া, জিরা দিয়ে একটু ভাজা ভাজা করে নিতে হবে। এবার টকদই, সামান্য ঘি, দুধ, বাদাম বাটা ও স্বাদমতো লবণ দিয়ে আরও কিছুক্ষণ নাড়তে থাকুন। হালকা বাদামি রং আসলে ধুয়ে রাখা মাছগুলো দিয়ে দিন।  সবশেষে কাঁচামরিচ দিয়ে মিনিট দশেক মাঝারি আঁচে রান্না করতে থাকুন। খেয়াল রাখতে হবে যেন কড়াইয়ের নিচে পুড়ে না যায়। নামানোর আগে কিশমিশ দিয়ে নামিয়ে আনুন। তারপর পরিবেশন ডিশে ঢেলে ওপরে পিয়াজ বেরেস্তা ছড়িয়ে দিন। ব্যস ঝটপট হয়ে গেল সুস্বাদু ইলিশ কোরমা। পোলাও অথবা সাদা ভাতের সঙ্গে ইলিশ কোরমার তুলনাই হয় না।

 

 

গরুর কালো ভুনা না হলে চলেই না

 

‘ঈদের দিন বড় আপুর হাতের গরুর মাংসের কালো ভুনা এবং মেজো আপুর তৈরি করা ফিরনি খেতে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করি। যে খাবারই সেদিন থাকুক না কেন এই দুটি খাবার আমার চাই.. চাই...’— বুবলী

 

 

উপকরণ

গরু মাংস ১ কেজি, তেল ১ কাপ, হলুদ ১ চা চামচ, মরিচের গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, জিরা বাটা ১ টেবিল চামচ, এলাচ, দারুচিনি ৩-৪টা, তেজপাতা ২টা, লবঙ্গ, গোলমরিচ ৩-৪টা, লবণ পরিমাণমতো, পিয়াজ কুচি মোটা করে ১ কাপ, পানি পরিমাণমতো।

 

 

 

প্রণালি

মাংস মাঝারি আকারে কেটে ধুয়ে পানি ঝরাতে হবে, তারপর একটা পাত্রে মাংসের সব মসলা দিয়ে কষাতে হবে। ভালোভাবে কষানো হলে মাংসের ওপর তেল উঠে গেলে আবার ২-৩ কাপ পানি দিয়ে মাংস সি করে নিতে হবে। এরপর আরেকটি পাত্রে তেল দিয়ে অল্প তাপে মাংস কালো করে ভাজতে হবে। কালো হয়ে গেলে মাংস নামিয়ে পরিবেশন করতে হবে।

 

 

 

মায়ের হাতের চিকেন রোস্ট পছন্দ করি

ঈদের দিন মায়ের হাতের চিকেন রোস্ট খেতে খুব ভালোবাসি। এ ছাড়া ছোটবেলা থেকেই হোম মেড চটপটি খেতে পছন্দ করি। এই আইটেমটি কখনো মিস করি না আমি।’— ববি

 

উপকরণ

মাঝারি সাইজের মুরগি ৩টা, ঘি ১০০ গ্রাম, তেল এক লিটার, জায়ফল বাটা এক চা চামচ, জৈত্রিক বাটা এক চা চামচ, আদা বাটা দুই চা চামচ, রসুন বাটা দেড় চা চামচ, পোস্তদানা বাটা আধা চা চামচ, কাঠবাদাম বাটা দুই টেবিল চামচ, কিশমিশ এক টেবিল চামচ, আলু বোখারা ৭-৮টি, এলাচ ৪টি, দারুচিনি ৪টি, কাঁচামরিচ ৭-৮টি, টক দই, পিয়াজ বাটা এক কাপ, চিনি অল্প, লবণ ১৫০ গ্রাম।

প্রণালি

মুরগি রোস্টের মতো করে কেটে লবণ, টক দই, আদা ও রসুন দিয়ে মাখিয়ে রাখুন। কড়াইতে তেল দিয়ে তাতে মুরগির টুকরাগুলো বাদামি রং করে ভেজে তুলুন। এবার কড়াইতে ঘি ও তেল দিয়ে সব রকম মসলা, পিয়াজ বাটা, টক দই, চিনি, এলাচ, দারুচিনি, লবণ, বাদাম, আলু বোখারা, কিশমিশ দিয়ে কষিয়ে ভাজা মুরগিগুলো রান্না করুন। মসলাগুলো ভালো করে মুরগির টুকরার গায়ে লেগে গেলেই মজাদার চিকেন রোস্ট তৈরি হয়ে যাবে।

 

 

 

ভুনা খিচুড়ির সঙ্গে গরুর মাংস...

 

‘ইচ্ছে থাকলেও গরুর মাংস খুব একটা খাওয়া হয় না। স্বাস্থ্য-সচেতনতার কথা চিন্তা করে মুখরোচক এই খাবারটি প্রায় এড়িয়ে যাই।

তবে ঈদের দিন ভুনা খিচুড়ির সঙ্গে গরুর মাংসের স্বাদই আলাদা। এ ছাড়া পায়েস খেতেও খুব ভালোবাসি’— পরীমণি

 

 

উপকরণ

গরুর মাংস এক কেজি, আদা বাটা এক টেবিল চামচ, পোলাওয়ের চাল চার কাপ, রসুন বাটা দুই চা চামচ, মুগ ডাল এক কাপ, মসুর ডাল এক কাপ, পিয়াজ বাটা চার টেবিল চামচ, গরম মসলার গুঁড়া দুই চা-চামচ, ধনেবাটা এক চা চামচ, এলাচ চারটি, পানি ১০ কাপ, দারুচিনি চার-পাঁচটি, কাঁচামরিচ ছয়-সাতটি, লবণ স্বাদমতো, সাদা তেল পরিমাণ মতো।

 

 

 

প্রণালি

প্রথমে চাল ও ডাল ধুয়ে আধা ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। মাংসে তেল ছাড়া বাকি সব উপকরণ দিয়ে মাখাতে হবে।

হাঁড়িতে তেল গরম করে মসলা মাখানো মাংস দিয়ে দিন। ভালোমতো কষিয়ে ৩ কাপ পানি দিয়ে সেদ্ধ হতে দিন। মসলা থেকে মাংস তুলে অন্য পাত্রে রাখুন।

মসলায় পানি ঝরানো চাল ও ডাল কষিয়ে ১০ কাপ পানি দিয়ে ঢেকে দিন। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচামরিচ ও মাংস দিয়ে নেড়ে রাখুন। সালাদ বা আচার দিয়ে পরিবেশন করুন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর