শিরোনাম
শুক্রবার, ৭ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

সব সময় যত্ন নিন

সাদিয়া সারা

সব সময়  যত্ন নিন

মডেল: সুষমি রহমান

রূপকাহনের প্রথম শর্তই হলো পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম আর স্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়া। এই রুটিনে সামান্য পরিবর্তনেই প্রভাব ফেলে ত্বক ও চুলে। তাই দরকার বিশেষ যত্ন-পরিচর্যা।

 

রমজান মাসে খাদ্যাভ্যাস এবং ঘুমের রুটিনে একটা বড় পরিবর্তন দেখা যায়। যার প্রভাব পড়ে ত্বক ও চুলে। আর সেই প্রভাব কাটিয়ে ওঠার জন্য পরবর্তী কিছুদিন প্রয়োজন আলাদা যত্ন। তবে তা কঠিন কিছু নয়।

 

সময় এখন বর্ষাকাল। রোজার শুরু থেকে বর্ষা শুরু হলেও ঈদ-পরবর্তী সময়ে বৃষ্টি অঝোরে ঝড়ছে পাড়া-মহল্লার অলিতে-গলিতে। পুরো দেশের বৃষ্টির দাপট জানিয়ে দিচ্ছে বর্ষার কথা। গরম, আর্দ্রতা ও ভ্যাপসা আবহাওয়ার এই সময়ে নানা ধরনের ছত্রাকের প্রকোপ বেড়ে যায়। এ ছাড়া বর্ষায় কিশোর-কিশোরীদের ব্রণের আক্রমণও বাড়ে। মুখের ত্বক তৈলাক্ত হওয়া ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণে ব্রণ পেকে ফুসকুড়ি হতে পারে। বর্ষাকাল তাই ত্বকের জন্য খুব সুবিধার নয়।

 

ঢাকার বিউটি জোন ওমেন্স ওয়ার্ল্ডের পরিচালক ও রূপ বিশেষজ্ঞ ফারনাজ আলম বলেন, ‘মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ। আর এই ঈদের জন্য আলাদা করে নিজেকে প্রস্তুত রাখেন সবাই। কিন্তু রূপ সচেতন নারীরা শুধু উৎসবেই নয়, উৎসব -পরবর্তী সময়েও ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে সদা থাকেন সচেতন। বাইরের রিমঝিম বৃষ্টি সহসাই জানান দেয় সময়টা বর্ষাকাল। আর বর্ষার এই মৌসুমে ত্বকের নানা সমস্যা দেখা দেয়। আর এসব কারণেই এবারের ঈদ-পরবর্তী সময়টা রূপ সচেতন নারীদের প্রয়োজন আলাদা প্রস্তুতির।’

 

রোজার পর দেখা যায় কারও কারও ত্বক অনুজ্জ্বল হয়ে গেছে। সে জন্য ব্যবহার করতে হবে ফেস মাস্ক। তৈরি করে নেওয়া যাবে ঘরেই। দুই টেবিল-চামচ অলিভ অয়েলের সঙ্গে মেশাতে হবে সমপরিমাণ মধু, লেবুর রস এবং কাজুবাদাম বাটা। মিশ্রণটি ত্বকে লাগিয়ে রেখে দিতে হবে বিশ মিনিট। এরপর ধুয়ে ফেলুন পরিষ্কার ঠাণ্ডা পানি দিয়ে। সপ্তাহে তিন দিন করলেই যথেষ্ট। 

 

এই সময়টা রোদ-বাদলের খেলা। হঠাৎ বৃষ্টি হঠাৎ রোদে জনজীবনে আনে অস্বস্তিকর আবেশ। তাই প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়াই ভালো। তা ছাড়া যদি খুব বেশি রোদ থাকে তবে বাইরে বের না হওয়াই শ্রেয়। তাতে ত্বক ক্লান্ত হয়ে যায়। তাই বলে তো ঘরে বসে থাকা দায়। তাই শরীরের ক্লান্তি রোধে একটু সময় পেলেই চোখ বন্ধ করে পনেরো মিনিট বিশ্রাম নিন। বাইরে থেকে ফিরে চেষ্টা করুন শাওয়ার নেওয়ার। তবে বৃষ্টির সময় হলে দিনে একবার শাওয়ার নিলেই যথেষ্ট। এক্ষেত্রে বাইরে থেকে ফিরে হাত ও পা ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। সঙ্গে মুখে স্ক্রাবও ব্যবহার করতে পারেন। এ সময় সাবানের পরিবর্তে ক্লিনজার ব্যবহার করাই শ্রেয়। সাবানে ত্বক কিছুটা রুক্ষ হয়ে যায়। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিষ্কার পানি থেকে ভালো ক্লিনজার আর কিছু হতে পারে না। বেশি পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য গরম পানি ও অন্যান্য ত্বকের জন্য কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে পারেন। অনেকেই বাইরে থেকে এসে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করেন, কিন্তু তাদের ত্বকে সমস্যা লেগেই থাকে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বেশির ভাগ মানুষের মুখ পরিষ্কারের আগে হাত ধোয়ার অভ্যাস নেই বলেই এমনটা হয়। নিয়ম হচ্ছে, প্রথমেই সাবান বা ক্লিনজার দিয়ে হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হয়। কারণ, হাত থেকেই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি হয়।

 

আবার যেহেতু সময়টা বৃষ্টির হাতেও বন্দী তাই বাইরে বেরোনোর আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। বছরের সারাটা সময়েই ত্বকের সুরক্ষায় সানস্ক্রিন ব্যবহার জরুরি। শীত, শ্রীষ্ম, বর্ষা কোনো সময়েই সানস্ক্রিন ক্রিম ব্যবহার বন্ধ করা উচিত নয়। রোদের ক্ষতিকারক সূর্যরশ্মি কম সময় থাকলেও তা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। একটি বিষয়ে সবার খেয়াল রাখতে হবে, তা হলো সঠিক সানস্ক্রিন ব্যবহার। তৈলাক্ত ত্বকে পানির মাত্রা বেশি থাকে। রুক্ষ ও শুষ্ক ত্বকের জন্য এসপিএফ ৩০ মাত্রার অধিক সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।

 

কেবল ত্বক নয়, উৎসব শেষে এর প্রভাব পড়ে চুলেও। অতিমাত্রায় শুষ্ক হয়ে যায়, পড়তে শুরু করে, খুশকিও দেখা দেয়। তাই চুল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সবচেয়ে জরুরি। পাশাপাশি এই রোদ-বৃষ্টির বর্ষায় নিজেকে একটু নতুনভাবে দেখতে চাইলে হেয়ার স্টাইলে পরিবর্তন আনা যেতে পারে। চুলের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনার জন্য ব্যবহার করতে হবে হেয়ারপ্যাক। একটি ডিমের সঙ্গে (চুল রুক্ষ হলে কুসুম এবং তৈলাক্ত হলে সাদা অংশ), এক কাপ দুধ, দুই টেবিল-চামচ অলিভ অয়েল এবং একটি লেবুর রস মেশাতে হবে। এবার মিশ্রণটি ঘষে ঘষে মাথার ত্বকে লাগিয়ে রাখতে হবে কমপক্ষে আধা ঘণ্টা। তারপর চুল ধুয়ে ফেলতে হবে হালকা কোনো শ্যাম্পু দিয়ে। চুলের সাধারণ সমস্যাগুলো কাটাতে এটি দারুণ কার্যকর। তবে প্যাকটি লাগানোর আগে অবশ্যই চুল ও মাথার ত্বক পরিষ্কার করে নিন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর