মানব দেহের চাহিদার থেকে বেশি পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ করলে কিংবা খাবারে যদি এলকোহল জাতীয় উপাদানের পরিমাণ বেশি থাকলে, তা থেকে দেহে পিউরিন নামক নন এসেনশিয়াল এমাইনো অ্যাসিড তৈরি করে। এই পিউরিনের শেষ উৎপাদন হলো ইউরিক অ্যাসিড। এই ইউরিক অ্যাসিড প্রথমে রক্তে চলে যায়। সেখান থেকে কিডনির মাধ্যমে প্রস্রাবের সঙ্গে দেহ থেকে বের হয়ে যায়। রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পায় এই অবস্থাকে বলা হয় হাইপারইউরিসেমিয়া। এই অতিরিক্ত ইউরিক এসিড সূক্ষ্ম স্ফটিক (ক্রিস্টাল) আকারে জয়েন্টের মধ্যে বিশেষ করে পায়ের আঙ্গুলে ব্যথা সৃষ্টি করে। প্রাথমিক অবস্থায় শুধু পায়ে ব্যথা হয়। আস্তে আস্তে এর তীব্রতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পা ফোলা, হাঁটু ও হাঁটুর জয়েন্টে ব্যথা হয়। ফলে ইউরিক অ্যাসিড আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁটতেও সমস্যা হয়। হাইপারইউরিসেমিয়ার কারণে শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। যেমন : বাত, কিডনিতে পাথর, কিডনি অকার্যকর হওয়া, উচ্চরক্তচাপসহ নানা রোগ হতে পারে।
সচেতনতা :
অধিক চর্বিযুক্ত মাংস খাওয়া যাবে না। এমনকি অর্গান মিটও (কলিজা, মগজ, জিহ্বা ইত্যাদি খাওয়া যাবে না। চিংড়ি মাছ, শামুক, কাঁকড়া পরিহার করতে হবে। এ ছাড়া সামুদ্রিক মাছ, ডিমের কুসুম এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। সব রকমের ডাল, বাদাম, মটরশুঁটি এবং কাঁঠালের বিচি পরিহার করতে হবে। এলকোহোল, ক্যাফেন জাতীয় বেভারেজ যেমন— চা, কফি, কোমল পানীয়, খাওয়া যাবে না। চর্বিহীন মাংস যেমন— মুরগির মাংস খেতে পারেন। মাছ, কুসুম ছাড়া ডিম পরিমাণমতো খাওয়া যাবে। এন্টি অক্সিডেন্ট জাতীয় খাবার যেমন— লেবু চা, পেয়ারা, আমলকী, কমলা, মাল্টা, গ্রিন-টি ইত্যাদি খেতে পারেন। অধিক পরিমাণে সবজি-শাক এবং পানি পান করতে হবে।