শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

বর্ষায় পায়ের যত্ন...

সাদিয়া সারা

বর্ষায় পায়ের যত্ন...

মডেল: মেরিন

সকাল থেকেই আকাশের মুখ ভার। তবে, বাইরে বের না হয়ে উপায় নেই। ছাতা এবং রেইনকোট দিয়ে মাথা তো বাঁচালেন! কিন্তু পা? ত্বক ও চুলের যত্ন নিয়ম করেই হয়। বর্ষাকালের স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় পায়ের জন্য চাই স্পেশাল কেয়ার। রইল বর্ষায় পায়ের গাইডলাইন।

 

সারা দিন রাস্তায় পানি বা কাদা থাকায় পায়ের নানা সমস্যা হতে পারে। এমনিতেই বর্ষায় রোগ-বালাইয়ের কমতি নেই। জুতার ভিতরে পানি ঢুকে নাজেহাল অবস্থা। আর সেই ভেজা জুতা বেশিক্ষণ পরে থাকলে পায়ে জন্মাতে পারে নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়া। আবার সব সময় পা ধুয়ে রাখাও সম্ভব নয়। ফলে পায়ে হতে পারে নানা ইনফেকশন। তাই পায়ের যত্নে কয়েকটা বিষয় খুব নজরদারি করা দরকার।

 

বর্ষাকালীন সময়টায় যথাসম্ভব কাদা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। এমনটাই বলেন ওমেন্স ওয়ার্ল্ডের পরিচালক ও রূপ বিশেষজ্ঞ ফারনাজ আলম। তিনি আরও বলেন, ‘বর্ষায় যেহেতু দীর্ঘক্ষণ ভেজা জুতা পরে থাকতে হয়, এতে নানা ধরনের ইনফেকশন হতে পারে। তাই প্রতিদিনই পায়ের বিশেষ যত্ন নিলে এসব সংক্রমণ এড়ানো সম্ভব। বাইরে থেকে ঘরে ফিরে হাল্কা গরম পানিতে শ্যাম্পু এবং অল্প পরিমাণে খাবার সোডা মিশিয়ে পা কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর আলতোভাবে পা ঘষে ধুয়ে নিয়ে, শুকনা করে মুছে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিতে হবে। এতে পায়ের ত্বক শুষ্ক হয়ে যাবে না।’

 

বর্ষায় পায়ের নখ বড় না রাখাই ভালো। আর যদি বড় রাখাও হয় তাহলে প্রতিদিন ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। কারণ নখের ভিতরে কাদা এবং ময়লা পানি জমে ব্যাকটেরিয়া এবং ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। নখ পরিষ্কার করার জন্য পা হালকা গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে নেইল ব্রাশ দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করে নিতে হবে। নখের ভিতরেও ভালোমতো পরিষ্কার করতে হবে, যেন কোনো ধরনের ময়লা জমতে না পারে।

 

প্রতি সপ্তাহে পেডিকিউর করানো গেলে পা পরিষ্কার থাকবে। পেডিকিউর করা হলে পা এবং নখের ভিতর সঠিকভাবে পরিষ্কার করা হয়। তা ছাড়া ঘরোয়া উপায়ও বেছে নিতে পারেন। যদি কারও পা ফাটার সমস্যা থাকে তাহলে বাড়তি কেয়ার করা উচিত। এক্ষেত্রে অ্যাভোকোডা একসঙ্গে চটকে পায়ের ফাটা অংশে লাগিয়ে রাখুন। কিছুক্ষণ পর পা ধুয়ে ফেলুন। পায়ের কাটা ছেঁড়ার সমস্যা থাকলে পায়ে নানা ইনফেকশন হতে পারে। আর বর্ষাকালে খালি পায়ে হাঁটবেন না।

 

যেহেতু সারা দিন বাইরে বাইরে থাকতে হয় তাই অফিস বা কোথাও গেলে জুতা খুলে ভালো করে পা ধুয়ে ফেলুন। চেষ্টা করুন সব সময় টিস্যু রাখার। বাড়ি ফিরে অবশ্যই উষ্ণ গরম পানিতে কয়েক ফোঁটা শ্যাম্পু এবং অ্যান্টিসেপটিক লিক্যুইড ফেলে দিন। এতে ১৫-২০ মিনিট পা ভিজিয়ে রাখুন। এরপর কোনো ব্রাশ দিয়ে ভালো করে পা ঘষে নিন। এরপর পা ধুয়ে ফেলুন। পায়ে কোনো ব্যথা বা ক্লান্ত লাগলে ১ চামচ লবণ ঢেলে পা ডুবিয়ে রাখুন। আরাম পাবেন।

 

দুই মাস অন্তর অন্তর পারলারে পেডিকিউর করাতে পারেন। চাইলে ঘরোয়া উপায়ে মাঝে মাঝে পা স্ক্রাব করাতে পারেন। ৩ টেবিল চামচ ওটমিল ও ৩ টেবিল চামচ দুধ নিয়ে একসঙ্গে মিশিয়ে পায়ে লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে এলে পা ধুয়ে ফেলুন। সম্ভব হলে সপ্তাহে একদিন ফুট ম্যাসাজও করাতে পারেন। এক্ষেত্রে সামান্য গরম পানিতে ৪ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি, ২ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল বা যেকোনো এসেনশিয়াল অয়েল দিয়ে ১ চা চামচ হলুদ গুঁড়া, ১ চা চামচ হলুদ গুঁড়া, ১ চা চামচ শুকনো নিমপাতা গুঁড়া দিয়ে পেস্ট বানান। নিম ও হলুদের গুঁড়া ব্যাকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাল ইনফেকশন সারাতে বেশ কার্যকরী। ২০ মিনিট প্যাক লাগিয়ে রেখে পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে পা ধুয়ে ফেলুন। এরপর অলিভ অয়েল ম্যাসাজ করিয়ে নিন। উপকার পাবেন। বর্ষায়ও ঘর থেকে বের হওয়ার ২০ মিনিট আগে মুখ ও হাতের পাশাপাশি পায়ের ত্বকেও সানস্ক্রিন ক্রিম বা লোশন লাগিয়ে নিতে যেন ভুল না হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর