শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

অল্পতেই গ্ল্যামারাস

তানিয়া তুষ্টি

অল্পতেই গ্ল্যামারাস

মডেল: জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়া

দিনের বেশির ভাগ সময় যাদের বাইরে কাটাতে হয়, ফিটফাট থাকতে তাদের আলাদা সময় কোথায়? কিন্তু ব্যস্ততার মাঝেও যে ফিট থাকা চাই। নিজের ইমেজ ধরে রাখতে টুকটাক কিছু বিষয়ে সচেতন হলেই অল্পতেই আপনি হয়ে উঠতে পারেন গ্ল্যামারাস।

 

প্রতিদিনের ব্যস্ততায় কাজের সঙ্গে সময়কে ভাগ করে নেওয়া দুরূহ ব্যাপার। সেখানে নিজেকে ফিটফাট রাখতে আলাদা করে সময় বের করা তো আরও কষ্টসাধ্য। তাড়াহুড়া করে ক্লাস বা অফিসে যাওয়া। নিয়মিত রুটিন মেনে যানজট টপকানো। অবশেষে গরমে ঘেমে নেয়ে গন্তব্যে পৌঁছানো। কিন্তু এখানেই কী শেষ? সেখানে গিয়েও হয়তো দেখলেন হঠাৎ কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হচ্ছে। বিশেষ করে চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে এই ব্যাপারটি প্রায়ই সামাল দিতে হয়। অফিশিয়াল মিটিংও থাকে যখন-তখন। আর তাই আপনার ইমেজ ধরে রাখতে ঘামে যবুথবু হয়ে এসবে যোগ দিতে পারবেন না। এ তো গেল অফিস টাইমের ব্যস্ততা। এ ছাড়াও অধিকাংশ দিন অফিস শেষে দাওয়াতে বা কোনো অ্যাসাইনমেন্টে ছুটতে হয় ওই এক পোশাকেই। পর্যাপ্ত সময় থাকে না যে বাসায় এসে কাপড় বদলে যাবেন। ভাবতে পারেন সকালেই জমকালো সাজে বের হবেন। কিন্তু এমন সাজে অফিস যাওয়াটাও রুচিকর নয়— এমন যখন আপনার পরিস্থিতি তখন অল্পতেই নিজেকে গ্ল্যামারাস রাখার ব্যবস্থা করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

 

নিজেকে একটু গুছিয়ে রাখলেই এই ধরনের পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সহজ ব্যাপার। এজন্য প্রথমেই পোশাকের দিকে নজর দিতে হবে। কোনোটা খুব দামি আবার কোনোটা খুব সস্তা, কোনোটা খুব বেশি ওয়েস্টার্ন আবার কোনোটা খুবই ফরমাল এমন না হয়ে এর মাঝামাঝি ব্যালান্স করে পোশাক কেনাটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। অর্থাৎ আপনার সংগ্রহে থাকা বেশিরভাগ পোশাককে যে কোনো এক ক্যাটাগরিতে রাখলে প্রায় সব সময়ই একই ইমেজে চলতে পারবেন। এর জন্য বার বার পোশাক বদলের ঝামেলায় পড়তে হবে না।

 

চুলের কাট মেয়েদের লুককে সবচেয়ে বেশি তাৎপর্য এনে দেয়। তাই আপনার লুকে যে হেয়ারকাট মানিয়ে যায় সেটি সব সময় রক্ষা করার চেষ্টা করুন। তাহলে চুলের সাজ নিয়ে চিন্তায় পড়তে হবে না। যখন যেখানে যেভাবেই থাকুন না কেন, আপনার চুলে থাকবে স্টাইলিস লুক। আজকাল তো অধিকাংশ মেয়ে চুলে পছন্দের কালার করিয়ে নিচ্ছেন। পুরো ব্যাপারটিই তখন ফিক্সড সাজে পরিণত হয়ে যায়।

 

যারা নখে নেইলপলিস ব্যবহার করেন, তারা রাতের বেলায় নেইলপলিস লাগিয়ে রাখতে পারেন। দুদিন আগে লাগানো থাকলে নখের পাশ থেকে একটু আধটু রং চটে গেলে সেটা দেখতে বাজে লাগে। তাই রাতে আর একবার নখপালিস বুলিয়ে নিতে পারেন। সকালে তাড়াহুড়ায় নেইলপলিস লাগানোর ঝামেলা থাকবে না।

 

সকালে ওয়াসরুমে ঢুকে মুখ ধোয়ার সময় চাইলে স্ক্রাবিংটা করতে পারেন। মাঝে মাঝে হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল সারুন। মুখ ধোয়ার সময় হালকা লেবু চিপে দিতে পারেন। পুরোপুরি ফ্রেশ লাগবে।

যাদের বেশিরভাগ সময় বাইরে কাটাতে হয়, খুব স্বাভাবিকভাবে তাদের ত্বকে ধকল যায় বেশি। ধুলাবালি, রোদ এবং বাইরের খাবারের প্রভাব ত্বককে নানা সমস্যায় ফেলে দেয়। সেজন্য নিয়মিত ফেসিয়াল করিয়ে নিতে হবে। এতে ত্বকের উজ্জ্বলতা যেমন থাকবে তেমনি র‌্যাশ, ফুসকুড়ি বা ব্রণের উৎপাত থাকবে না। এ ছাড়া বাসায় ফিরে যখনই সময় পান একটু আধটু রূপচর্চা বজায় রাখলে মেকআপ ছাড়াই দিনভর থাকবেন সতেজ।

 

আজকাল মেয়েরা অনেক সচেতন। বেশিরভাগ সময় যারা বাইরে থাকেন তারা একটু বড় ব্যাগ বেছে নেন। ব্যাগে থাকবে ছোট ছাতা, মিনি সাইজ একটি পারফিউম, ছোট মেকআপ বক্স আর দুয়েকটি লিপস্টিক, কাজল। রাস্তায় চলার সময় ত্বকে লেগে যাওয়া ধুলা দূর করতে অবশ্যই সঙ্গে মিনি ফেসওয়াশ আর ক্রিম থাকবে। সেখানে চিরুনি আর ছোট মিরর না থাকলেই নয়। সাজগোজের এই টুলসগুলো একটি মিনি ব্যাগে ভরে হাতের ব্যাগটার মধ্যে রাখতে পারেন। যখন সাজগোজ করবেন একবারে সব পেয়ে যাবেন। ব্যস আপনি এগুলোতেই মোটামুটি ফ্রেশ।

 

বাইরে চলার সময় সানগ্লাস অবশ্যই থাকবে, কম্পিউটারে বসতে চশমা, মোবাইল আর এয়ারফোন হবে সঙ্গী। আপনার ক্লান্তি কাটাতে ব্যাগে পানির বোতল রাখতে ভুলবেন না। আজকাল যে কোনো পোশাকের সঙ্গে মেয়েদের মালা পরার প্রতি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। সেটা হতে পারে পুঁতি, স্টোন বা অ্যান্টিক। লকেট সর্বস্ব মালারও প্রচলন রয়েছে বেশ। হাতের ব্রেসলেট, ঘড়ি থাকতে পারে আপনার পছন্দ অনুযায়ী।

 

আপনার মনে হতে পারে অল্পতেই গ্ল্যামারাস হতে এ এক বিশাল আয়োজন, আসলে তা নয়। প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো গুছিয়ে একবার নিজের ব্যাগে নিয়ে নিন, দেখবেন বারবার আর ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে না। গ্ল্যামারাস আপনিই এতে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর