শুক্রবার, ২৮ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

বর্ষায় চুলের যত্ন

সাদিয়া সারা

বর্ষায় চুলের যত্ন

মডেল : ববি

বর্ষা এলেই চুলের রফাদফা অবস্থা। বর্ষার স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় সবচেয়ে বড় সমস্যা চুল পড়া। সমাধান রইল ভিতরের পাতায়।

এই সময় প্রধান সমস্যা হলো চুল পড়ে যাওয়া, যা নিয়ে অল্পবিস্তর প্রত্যেকেই চিন্তিত। একে তো আবহাওয়ার জন্য চুল শুকানো দায়। তার ওপর ড্রায়ার ব্যবহার করে শুকাতে হলে, চুলের আর্দ্রতা হারিয়ে প্রাপ্তি শুষ্কতা। তাই কীভাবে করবেন সাধের চুলের যত্ন। জেনে নিন টিপস।

 

বর্ষার এই সময়টায় কখনো অতিরিক্ত আর্দ্রতায় কখনো বা বৃষ্টিতে বার বার ভিজে চুল হারায় প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা। তাই নিয়মিত শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, অয়েল ম্যাসাজ ছাড়াও চুলের চাই বিশেষ যত্ন।

 

বৈজ্ঞানিকদের মতে, ‘প্রথম বর্ষার জলে না ভেজাই ভালো। কারণ, সেই জলের সঙ্গে বাতাসের প্রচুর জীবাণুও ঝরে পড়ে। এমন ভাবনাটা চুলের স্বাস্থ্যের জন্য একেবারেই ঠিক নয়। কেননা, এই স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায়, মাথার ঘাম, চুল ঠিকমতো না শুকানোর কারণে চুলে নানা জীবাণু দেখা দিতে পারে। এসব জীবাণু চুলের গোড়ায় ইনফেকশন, খুশকি, চুল পড়াসহ নানা সমস্যার সৃষ্টি করে।

 

ওমেন্স ওয়ার্ল্ডের পরিচালক ও রূপ বিশেষজ্ঞ ফারনাজ আলম বলেন, ‘বর্ষায় স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া ফ্যাশন-সচেতন নারীদের মাথাব্যথার কারণ। এ সময় অনেকেই চুলের প্রতি অযত্ন অবহেলা করে মাথার স্ক্যাল্পে বাধিয়ে বসেন নানা সমস্যা। অনেকেই আবার অতিরিক্ত যত্নের খাতিরে বাজারের হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করে চুলের নানা সমস্যায় ভুগেন। বর্ষার সময় চেষ্টা করুন যথাসম্ভব কম হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে। অর্থাৎ হালকা কোনো শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করলে ভালো, আর হেয়ার স্প্রে না লাগানোই ভালো। রঙিন চুলের অধিকারীরা বর্ষাকালে হিট একদমই দেবেন না।’

 

বর্ষায় বৃষ্টিতে চুল ভিজে গেলে ঘরে ফিরে দ্রুত শুকাতে হবে। একইভাবে গোসলের পর পরই সাধের চুলকে শুকিয়ে ফেলতে হবে। চুল শুকানোর ক্ষেত্রে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার না করে ফ্যানের বাতাসে শুকিয়ে নিতে পারেন। বর্ষায় যেনতেন শ্যাম্পু ব্যবহার না করে অ্যান্টিফাঙ্গাল শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য মাইল্ড বা প্রোটিন শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। এতে চুলের গোড়া ভাঙার মতো সমস্যাগুলো কমবে। তা ছাড়া খাদ্যাভ্যাসেও পরিবর্তন করতে হবে। তেলের খাবার একেবারেই কম খান এবং প্রচুর পানি পান করুন। যাদের রঙিন চুল তারা তেলের সঙ্গে ভিটামিন-ই ক্যাপসুল মিলিয়ে চুলের গোড়ায় মালিশ করুন। শ্যাম্পু ও ডিপ কন্ডিশন করুন। সপ্তাহে একবার নিউটিলাইজার ক্রিম ব্যবহার করুন।

 

বর্ষায় চুলের যত্নে টিপস :

♦  এ সময় ঘামে ভেজা ও চিটচিটে স্ক্যাল্পের সমস্যা বেশি থাকে। এ জন্য সপ্তাহে দুই দিন শ্যাম্পু করা ভালো।

♦  নরম তোয়ালে দিয়ে চুল মুছবেন, ফলে তোয়ালের সঙ্গে ঘর্ষণে চুল কম উঠবে।

♦  খুব টাইট করে চুল বাঁধবেন না, হালকা পনিটেল অথবা বান করতে পারেন।

♦  সবসময় মোটা দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করবেন। সবচেয়ে ভালো হয় যদি মোটা দাঁতের কাঠের চিরুনি ব্যবহার করেন।

♦  নিজেকে ভিন্ন লুক দিতে চাইলে এই সময়টা বেস্ট। কোনো স্টাইলিশ শর্ট হেয়ারকাট ট্রাই করুন।

 

বাড়িতে বসেই চুল পড়া সমস্যা সমাধানের কয়েকটি উপায় রপ্ত করে নিন। উপাদান মিলবে ঘরেই।

 

অয়েল ম্যাসাজ : চুল ভালো রাখার প্রথম মন্ত্র অয়েল ম্যাসাজ। অয়েল ম্যাসাজের ফলে স্ক্যাল্পে রক্ত চলাচল ভালো হয়, চুলের পুষ্টি জোগায়। ফলে চুল পড়া কমে এবং চুল হয়ে ওঠে ঝরঝরে ও চকচকে। অয়েল ম্যাসাজের জন্য নারিকেল তেল, আমন্ড অয়েল, অলিভ অয়েল, ক্যাস্টর অয়েল, আমলা অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। সপ্তাহে অন্তত এক দিন অয়েল ম্যাসাজ করলে চুলের সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে।

 

মেথি : চুলের পুষ্টিতে মেথির অ্যান্টি অক্সিড্যান্টস প্রোটিন, নিকোটিনিক অ্যাসিড হেয়ার স্ক্যাল্পে পুষ্টি জুগিয়ে চুলকে করে সুন্দর। এ জন্য মেথি সারা রাত ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সেটা পেস্ট করে নেবেন। এই মেথি পেস্ট চুলের স্ক্যাল্পে ৪০ মিনিট লাগিয়ে রেখে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।

 

পিয়াজের রস : চুল পড়া কমাতে এবং নতুন চুল গজাতে পিয়াজের রস ঝটপট সমাধান। এ জন্য কয়েক টুকরো পিয়াজ ভালো করে পেস্ট করে রস বের করে নিন। এই পিয়াজের রস চুলের স্ক্যাল্পে লাগিয়ে ৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে ফেলুন।

 

বর্ষায় চুলের সমস্যা দূর করার জন্য হেয়ার প্যাকও ব্যবহার করতে পারেন।

— তিনটা পাকা কলা ও এক টেবিল চামচ মধু একসঙ্গে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে মাথায় ৩০ মিনিট লাগিয়ে রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন। এরপর কন্ডিশনিং করে নিন। এতে চুলের রুক্ষতা কমে ঝলমলে ও মসৃণ হয়ে উঠবে।

— বর্ষাকালে অনেক সময় স্ক্যাল্পে খুব অয়েলি হয়ে যায়। এর সমাধানের জন্য একটা পাতিলেবুর রস স্ক্যাল্পে ভালো করে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর