শুক্রবার, ২৮ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা
জেনে নিন

ধূমপান ছাড়ার উপকারিতা

হেলথ জার্নাল

ধূমপান ছাড়ার উপকারিতা

সেই শুরু থেকেই ডাক্তাররা বলে আসছেন ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এমনকি ধূমপানের প্যাকেটেও মার্ক করে কথাটি লেখা থাকে। কিন্তু তাই বলে তো ধূমপান ছাড়ছেন না! এবার অবশ্যই ছেড়ে  দেবেন। কেননা, ছেড়ে দেওয়ার পর কিছু বছরের মধ্যে শরীর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে বলে জানিয়েছেন ডাক্তার।

 

এক গবেষণায় দেখা গেছে, আমাদের দেশে আড়াই কোটি মানুষ ধূমপানে আসক্ত। উন্নত দেশগুলোতে যেখানে তামাক সেবন কমছে, সেখানে আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রতিবছর ৩ দশমিক ৪ শতাংশ হারে তামাকসেবী বাড়ছে। ধূমপান বন্ধে চাই সঠিক সচেতনতা।

 

ধূমপানের ক্ষতিকারক দিকসমূহ :

আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, ধূমপায়ীদের ৪০ বছরের পর হৃদরোগ এবং হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বেশি থাকে। ধূমপানের কারণে হতে পারে সিওপিডি-এমফাইসেমা, ক্রোনিক ব্রঙ্কাইটিস। শ্বাসনালির ইনফেকশনও বাড়ায় ধূমপান। ধূমপায়ীদের যক্ষা হওয়ার আশঙ্কা থাকে দুই থেকে চারগুণ বেশি। প্রতিবছর ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণে বেশি আক্রান্ত হয় এরা। এ ছাড়া ঘন ঘন ফুসফুসের ইনফেকশন হয়। তা ছাড়া ফুসফুসের ক্যানসারের শতকরা ৯০ ভাগ কারণ ধূমপান। এ কারণে হতে পারে মুখ, গলা, খাদ্যনালি, অগ্ন্যাশয়, পাকস্থলী, যকৃৎ, মূত্রথলি, বৃহদান্ত্র ও মলাশয়, স্তন ও জরায়ুমুখ ক্যানসার।

 

ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পর আমাদের শরীরে কী পরিবর্তন হয়?

 

♦ ২০ মিনিট : সিগারেট খাওয়ার ২০ মিনিটের মধ্যেই আমাদের রক্তচাপ কমে গিয়ে স্বাভাবিক হয়ে যায়। হাত ও পায়ে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে।

♦  ৮ ঘণ্টা : শেষ সিগারেট খাওয়ার ৮ ঘণ্টার মধ্যে আপনার শরীরে জমে থাকা কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাবে। অক্সিজেনের মাত্রা বাড়ায় ফুসফুস থেকে ক্ষতিকারক ও অস্বস্তিকর ব্যাকটেরিয়া দূর হবে। 

♦ ৪৮ ঘণ্টা : এই সময়ের মধ্যে ফুসফুসে জমে থাকা নিকোটিন শরীর থেকে বেরিয়ে যাবে। ফলে ঘ্রাণ ও স্বাদ বোধ বাড়বে।

♦ ৩ দিন : ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার ৩ দিনের মধ্যে আপনার ব্রঙ্কিয়াল টিউব প্রসারিত হবে। ফলে অনেক স্বাভাবিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস চালাতে পারবেন, এনার্জি ফিরে আসবে, স্ট্রেস কমবে।

♦ ২ সপ্তাহ থেকে ২ মাস : এই সময়ের মধ্যে শরীরে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক হয়ে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা ৩০ শতাংশ বাড়ে। ফলে হাঁটাচলা করতে হাঁপিয়ে ওঠার সমস্যা কমে গিয়ে এনার্জি ফিরে পাবেন। 

♦ ৩ থেকে ৯ মাস : এই সময় থেকেই বুঝতে পারবেন আপনার আর নিঃশ্বাস নিতে বিশেষ কষ্ট হচ্ছে না। ধূমপানের কারণে যে খুকখুকে কাশি হতো তাও অনেক কমে এসেছে। এই সময় থেকে ব্রঙ্কিয়াল টিউবের ফাইবার আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসতে থাকে। যা ফুসফুস থেকে ব্যাকটেরিয়ার দূর করে পরিষ্কার রাখে।  

♦  ১ বছর : ধূমপান ছাড়ার ১ বছর পরও যারা কোনো দিন ধূমপান করেননি তাদের তুলনায় আপনার হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি থাকে দ্বিগুণ।

♦  ৫ বছর : সিগারেট ছেড়ে দেওয়ার ৫ বছরের মধ্যে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। কোনো দিন ধূমপান না করলেও যে ঝুঁকি থাকে, ৫ বছর পর ঝুঁকির পরিমাণ ঠিক ততটাই কমে আসে।

♦  ১০ বছর : ধূমপানের ফলে ফুসফুসের যে ক্ষতি হয়, ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পর ১০ বছর সময় লাগে ফুসফুস আগের অবস্থায় ফিরে আসতে।

♦ ১৫ বছর : ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার ১৫ বছর পর হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ততটা, যতটা এমন কারও যিনি কোনো দিন ধূমপান করেননি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর