শুক্রবার, ১১ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

বর্ষায় চুল ঝরলে

সাদিয়া সারা

বর্ষায় চুল ঝরলে

মডেল : সিঁথি ছবি : ফ্রাইডে

বর্ষাকাল মানেই চুলের রুক্ষ, তেলতেলে ভাব। সঙ্গে চুল পড়ার সমস্যা তো আছেই। আর ইনফেকশন তো বর্ষাকালের ইউএসপি। সব মিলিয়ে স্ক্যাল্প এবং চুলের বারোটা বাজার অবস্থা। চুল পড়া বন্ধ করতে কী করবেন, একনজরে দেখে নেওয়া যাক।

 

বর্ষাকালের আর্দ্রতার উপস্থিতির কারণে চুল অগোছালো, অমসৃণ, নির্জীব ও সহজেই ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। মাথার ত্বক ক্রমাগত ঘামতে থাকে, যার ফলে যন্ত্রণা ও চুলকানি বেড়ে যায়। বৃষ্টির পানিতে বায়ু দূষণকারী উপাদান যুক্ত থাকে, যা চুলের গোড়াকে দুর্বল করে দিয়ে চুল পড়া বাড়িয়ে দেয়। বর্ষাকালের চিত্র মাথায় রাখলে, এ ব্যাপারটা মেনে চলা একটু কঠিন। তবে অসম্ভবও কিছু নয়।

 

চুল শুকনো থাকলে, বর্ষাকালে হওয়া সমস্যাগুলোর অর্ধেকের ওখানেই ইতি ঘটবে। কারণ, বর্ষায় বৃষ্টি মানেই নানা জীবাণুর আশ্রয়। আর বৃষ্টির পানি লাগালে, চুলের কতটা ভালো হবে তা আলাদা করে বলে দিতে হবে না। তা ছাড়া বর্ষার পানিতে অ্যাসিডের পরিমাণও সাধারণ পানির তুলনায় বেশি। এতেও চুলের বেশ ক্ষতি হয়। তাই চেষ্টা করুন, যতটা সম্ভব চুল শুকনো রাখতে। বিউটি জোন ওমেন্স ওয়ার্ল্ডের পরিচালক ও রূপবিশেষজ্ঞ ফারনাজ আলম বলেন, ‘এ সময় ব্যাকটেরিয়া, ফাংগাস বা ছত্রাক সংক্রমণে সৃষ্ট তীব্র যন্ত্রণাময় ক্ষতের কথা না বললেই নয়, যা শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায় এবং আক্রান্ত স্থানের চুল পড়ে যায়। অনেকেরই আবার এই সময়ে উকুনের উপদ্রবও বেড়ে যেতে দেখা যায়।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘এ সময় ভালো শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। মাথা ধোয়ার পর পরিষ্কার ও শুকনো তোয়ালে দিয়ে চুল যেন ভালো করে শুকানো হয়। পরিষ্কার ও বড় দাঁতের চিরুণি দিয়ে আঁচড়ানো উচিত। এ ছাড়া চুল ভালো রাখার প্রথম মন্ত্রই হলো অয়েল ম্যাসাজ। অয়েল ম্যাসাজে স্ক্যাল্পে রক্ত চলাচল ভালো হয়, চুলের পুষ্টি জোগায়। এর ফলে চুল পড়া কমে এবং চুল হয়ে ওঠে ঝরঝরে ও চকচকে।’

 

বর্ষায় চুলের সবচেয়ে বড় সমস্যা খুশকি। এ সমস্যার সমাধান খুব দ্রুত করা উচিত। এ সময় চুল না শুকিয়ে বাঁধবেন না। সেই সঙ্গে বৃষ্টিতে ভেজা বাদ দিন। প্রয়োজনে স্কার্ফ কিংবা রেইন কোট ব্যবহার করুন। এ সময় চুল উষ্ণ করে বিভিন্ন ধরনের চিকিত্সা (হট-হেয়ার ট্রিটমেন্ট), যেমন— পারমিং, স্ট্রেইট করা অথবা চুল রং করা থেকে বিরত থাকুন।

এ সময় চুলে হেয়ার প্যাকও ব্যবহার করতে পারেন। এসব হেয়ার প্যাক আপনার চুলকে রুক্ষ এবং বৈরী আর্দ্রতা থেকে রক্ষা করবে। এ জন্য পার্লারে দৌড়ঝাঁপের প্রয়োজন নেই।  বাড়িতে বসেই চুল পড়ার সমস্যার সমাধানের কয়েকটি উপায় ঝটপট করে জেনে নিন।

 

গ্রিন টি মাস্ক : টাটকা গ্রিন টি-র সঙ্গে একটা ডিমের কুসুম মিশিয়ে সারা মাথায় লাগান। ১৫-২০ মিনিট লাগিয়ে রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

 

ভিটামিন ই ক্যাপসুল মাস্ক : আমন্ড অয়েল, কাস্টর অয়েল, নারকেল তেল, ল্যাভেন্ডার অয়েল ও ক্রাশড ভিটামিন ই-ক্যাপসুল একসঙ্গে মিশিয়ে বোতলে ভরে রাখুন। সপ্তাহে তিন দিন গোটা চুল, মাথার স্ক্যাল্পে লাগান। সারা রাত রাখুন। পর দিন সকালে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

 

অ্যাভোকাডো মাস্ক : পাকা অ্যাভোকাডোর সঙ্গে এক কাপ দুধ ও এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল ও আমন্ড অয়েল মিশিয়ে নিন। গোটা চুল ও স্ক্যাল্পে লাগান। ১৫ মিনিট রেখে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

 

স্ট্রবেরি মাস্ক : টাটকা স্ট্রবেরি, নারকেল তেল ও মধু একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। চুলের গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত লাগান। ২০ মিনিট রেখে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

 

এ ছাড়া চুল পড়া কমাতে এবং সেই সঙ্গে নতুন চুল গজাতে পিয়াজের রস ঝটপট কাজ করে। পিয়াজে আছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল গুণাগুণ, যা চুল পড়া কমায়। এটি করার জন্য কয়েক টুকরো পিয়াজ নিয়ে সেটা ভালো করে পেস্ট করে রস বের করে নিন। এ পিয়াজের রস চুলের স্ক্যাল্পে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে ভালো করে শ্যাম্পু করে নিন। এ ছাড়া অয়েলে ম্যাসাজ করার জন্য নারকেল তেল, আমন্ড অয়েল, অলিভ অয়েল, কাস্টর অয়েল, আমলা অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। এসব তেলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা রোজমেরি এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে সেই তেল  চুলে ও স্ক্যাল্পে ভালো করে লাগিয়ে আঙ্গুলের ডগা দিয়ে ম্যাসাজ করুন। সপ্তাহে অন্তত এক দিন এ ম্যাসাজে চুল  পড়া কমে আসবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর