শুক্রবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

যত্নে থাকুক কনুই-গোড়ালি

রচি জামান

যত্নে থাকুক কনুই-গোড়ালি

মডেল : ফাহিমা মিম - ছবি : ফ্রাইডে

অনেকে মনে করেন, শুষ্ক মৌসুম শুধু শীতে বিরাজ করে। কিন্তু না, শরতেও ত্বক শুষ্কতার সূক্ষ্ম টান অনুভব করে। গুরুত্ব না দিলে এক সময় দেখা যায় ত্বক খসখসে, কালো ও উসকো-খুসকো হয়ে গেছে। অথচ এই সময়ে প্রকৃতিতে বিরাজ করে মৃদুমন্দ গরম। কখনো কখনো ঘেমে-নেয়ে সৃষ্টি হয় একাকার অবস্থা। তাই তো এই সময়ে ত্বকের যত্নে সোচ্চার হতেই হয়। বিশেষ করে হাত, পা, কনুইয়ের যত্ন নিশ্চিত করা জরুরি। কারণ কুচকুচে কালো কনুই কিংবা ফাটা গোড়ালি এক মুহূর্তে ম্লান করে দিতে পারে আপনার সব সৌন্দর্য। জেনে নেওয়া যাক, ঘরে বসে খুব অল্প সময়ে হাত-পায়ের যত্নে কিছু প্রয়োজনীয় কৌশল।

 

কনুই ও হাঁটু

শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় কনুই ও হাঁটুর মতো পুরু ত্বক দ্রুত শুষ্ক, খসখসে ও কালো হয়ে যায়। তাই কনুই ও হাঁটুর দরকার বিশেষ যত্ন। কারণ মরা চামড়া দূর করে ত্বক মসৃণ রাখাটা আসল। সেজন্য নিয়মিত স্ক্রাব দিয়ে হাঁটু ও কনুই পরিষ্কার করতে হবে। বিশেষ করে প্রতিদিন গোসলের সময় একদম ভুলে যাওয়া চলবে না। গোসলের পর অলিভ অয়েল বা আমন্ড অয়েল দিয়ে কনুই ও হাঁটুতে ভালোভাবে ম্যাসাজ করতে হবে। এতে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে। লেবুর রস পুরু ত্বককে নমনীয় করতে দারুণ উপযোগী। লেবুর রসের সঙ্গে সামান্য লবণ মিশিয়ে হাঁটু ও কনুইতে ভালোভাবে ঘষুন। কিছু সময় পর দেখবেন মরা চামড়া আস্তে আস্তে উঠে যাচ্ছে। পাঁচ মিনিট স্ক্রাব করার পর এবার ভালো করে ধুয়ে আলতোভাবে মুছে নিন। তারপর গ্লিসারিন বা পেট্রোলিয়াম জাতীয় জেলি দিয়ে ম্যাসাজ করুন। প্রতিদিনকার এই অভ্যাসে ত্বকের কালোভাব দূর হবে সহজে। এ ছাড়া নিয়মিত ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার অভ্যাসও আপনার ত্বকের সৌন্দর্য বজায় থাকবে।

 

পায়ের গোড়ালি

সুন্দর ও মসৃণ পায়ের গোড়ালি সবার নজর কাড়ে। নিজের কাছেও ভালো লাগা কাজ করে। পায়ের সঙ্গে মানানসই যে কোনো জুতা পরতেও আর আপত্তি থাকে না। কিন্তু একবার ভেবে দেখুন তো, ফাটা গোড়ালিতে পা বন্ধ সু বাদে স্লিপার বা অন্য যে কোনো জুতা পরার বিড়ম্বনা কতখানি? তবে নজর কাড়া গোড়ালি পেতে পারেন আপনিও। সেজন্য অবলম্বন করতে হবে সামান্য কিছু পদ্ধতি। হালকা গরম পানিতে লিকুইড সাবান মিশিয়ে তার ভিতর পা দিয়ে কিছু সময় বসে থাকুন। এতে পায়ের মরা চামড়া নরম হয়ে যাবে। এবার ফুট স্ক্রাবার দিয়ে পায়ের গোড়ালি ভালো মতো ঘষে নিন। দেখবেন মরা চামড়া উঠে পায়ের পরিষ্কার ও নতুন চামড়া ভেসে উঠেছে। এবার ভেজা পা তোয়ালে দিয়ে মুছে গ্লিসারিন বা পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে ম্যাসাজ করুন। নিয়মিত ম্যাসাজে গোড়ালি মসৃণ থাকবে।

এ ছাড়াও লবণ ও লেবুর ব্যবহারে আপনার পায়ের গোড়ালি নরম রাখা সম্ভব। খসখসে বা ফাটা ভাব থেকে পায়ের গোড়ালি রক্ষা পাবে। পায়ের নিয়মিত যত্নে ব্যবহার করতে পারেন লেবু ও লবণ। প্রথমে একটি পাত্রে ৩ টেবিল চামচ লবণ ও ২ টেবিল চামচ নারিকেল তেল নিন। এবার ১টি লেবুর রস চিপে দিয়ে দিন। পায়ের গোড়ালি স্ক্রাব করে কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন ১০ মিনিট। তারপর আবার স্ক্রাব করে নিন। এবার পা ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলেই হলো।

ভিন্নভাবেও লবণ ও লেবুর ব্যবহারে উপকার পাওয়া সম্ভব। সেজন্য একটি বড় পাত্রে কুসুম গরম পানি নিন। তাতে আধা কাপ মোটা দানার লবণ মেশান। এরপর আধা কাপ লেবুর রস ও কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল মেশান। এবার পায়ের গোড়ালি পানিতে ভিজিয়ে রাখুন ১০ মিনিট। তারপর পিউমিস স্টোন দিয়ে ঘষে ধুয়ে ফেলুন। ব্যস, পায়ের গোড়ালি পরিষ্কার হয়ে গেল। এবার তাতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

রাতে ঘুমানোর আগে ২০ মিনিট পা গরম পানিতে ডুবিয়ে রাখুন। পানিতে শ্যাম্পু বা লিকুইড সাবান মিশিয়ে নিন। গরম পানি পায়ের মরা চামড়া নরম করতে সাহায্য করবে। এবার হিল স্ক্রাবার দিয়ে গোড়ালি হালকা করে ঘষে নিন। এতে মরা চামড়া উঠে আসবে। এবার পা ধুয়ে নিয়ে পায়ে ক্রিম লাগিয়ে নিন। এবার পায়ে সুতির মোজা পরিয়ে রাখুন ঘণ্টা দুয়েক, ব্যস, সমস্যা সমাধান।

স্ক্রাব ছাড়াও অন্যভাবে পায়ের গোড়ালির নিয়মিত যত্ন নেওয়া সম্ভব। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পায়ের গোড়ালিতে ভ্যাসিলিন লাগিয়ে কিছু সময় ম্যাসাজ করে নিন। তারপর পরিষ্কার সুতির মোজা লাগিয়ে রাখুন কিছু সময়। এবার ঘুমানোর আগে মোজাটি খুলে ফেলুন। ফাটা গোড়ালির সমস্যা দূর করতে ১ সপ্তাহের ট্রিটমেন্ট মেনে চললেই উল্লেখযোগ্য উপকার আসে। গোড়ালির জন্য বিশেষ ক্রিমও পাওয়া যায়, সেটা ব্যবহার করতে পারেন।ূ গোড়ালি যদি বেশি ফেটে রক্ত বের হয় তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর