শুক্রবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

দূষণমুক্ত অন্দর

সাইফ ইমন

দূষণমুক্ত অন্দর

♦ ছবি : ইন্টারনেট

দূষণের প্রভাব ঘরের বাইরে যেমন আছে তেমনি আছে ঘরের ভিতরেও। তাই ঘর দূষণমুক্ত রাখাও খুবই জরুরি। বাইরে দূষণমুক্ত করতে না পারলেও নিজের বাসস্থান আমরা দূষণমুক্ত রাখতে পারি সহজেই। ঘরের ব্যবহার্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর মাধ্যমেই ভিতরের বাতাস হয়ে উঠতে পারে দূষিত, ক্ষতি হতে পারে আমাদের। আর যদি ঘরে ছোট কোনো শিশু থাকে তাহলেও খেয়াল রাখতে হয় আরও বেশি। ঘরের ভিতরের বাতাস দূষিত হওয়ার কারণ মূলত ধুলা-ময়লা। এমনকি ত্বকের ঝরে পড়া মৃত কোষও ঘরের ভিতরের বাতাস দূষিত করে। ঘরের জানালা খোলা রাখলে ভিতরে জমা হওয়া বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ বেরিয়ে যেতে পারে। স্যাঁতসেঁতে ভাব দূর হয়ে ঘরে সতেজতা ফিরে আসে। তাই ঘরের জানালা  খোলা রেখে ভিতরে আলো-বাতাস চলাচল করতে দেওয়া উচিত।

আমরা বাইরে থেকে ফেরার সময় কিছু ধুলাবালি আমাদের সঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে। আবার ধূমপায়ী ব্যক্তির তামাক সেবনের কারণে ঘর দূষিত হয়। অর্থাৎ ধূমপায়ী ব্যক্তি নিজের স্বাস্থ্যের ক্ষতি তো করেই, সঙ্গে তার আশপাশে থাকা অধূমপায়ীরাও পরোক্ষ ধূমপানের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হন। দীর্ঘদিন এই ধোঁয়ার মাঝে থাকলে এটি সরাসরি ধূমপানের মতোই ক্ষতি করে। দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট, ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া ও ফুসফুসের ক্যান্সারের মতো মারাত্মক সব রোগ। ফলে ধূমপান করা একেবারেই উচিত নয়, সেটা হোক ঘরে কিংবা বাইরে। রান্না, বাসনকোসন ও কাপড় ধোয়া, গোসল— এসব কাজের সময়ে এডজাস্ট ফ্যান চালু রাখা বা জানালা খোলা রাখা। ঘরে পোকা-মাকড়ের আনাগোনা ঠেকানোর জন্যে ময়লা ফেলার ঝুড়ি সবসময় ঢেকে রাখলেই হবে। সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ রান্নাঘর দূষণমুক্ত রাখা। গ্যাসের চুলার সঙ্গে কিচেন হুড ব্যবহার করতে পারলে ভালো। অবশ্যই চুলার আশপাশে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখুন। বাইরে থেকে ফিরে জুতা রাখার বক্সে জুতা রাখার অভ্যাস করুন। এতে জুতার ময়লা ছড়াবে না। ঘরের পাপোশ নিয়মিত ধুয়ে পরিষ্কার রাখুন। আসবাবপত্রের উপরিভাগ নিয়মিত ঝেড়ে মুছে পরিষ্কার রাখুন। বিছানা, বালিস, তোষক প্রতি সপ্তাহে পরিষ্কার করতে হবে।

আবার ঘরে গাছ নিয়ে আসতে পারেন। মানিপ্ল্যান্ট, পিস লিলি, ব্যাম্বু পাম, ইংলিশ আইভি, ফার্ন, স্পাইডার প্ল্যান্ট, অ্যালো ভেরা বা ঘৃতকুমারী— এসব গাছ সৌন্দর্য বর্ধনের পাশাপাশি বাতাসও পরিশুদ্ধ করে। ঘরে গাছ থাকলে তাতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি না দেওয়া। পানির সংযোগে কোনো ত্রুটি থাকলে তা সারানো। এয়ারকন্ডিশনার ও ডিহিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা। ঘরের ভিতর আর্দ্রতা বেশি হলে বিভিন্ন ধরনের ছত্রাক জন্মাতে পারে। এদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ঘরের কার্পেট নিয়মিত পরিষ্কার করতেই হবে। কারণ কার্পেটেই সবচেয়ে বেশি ময়লা আটকায়। ইদানীং অনেক বাসায় কার্পেট ব্যবহার করা হচ্ছে না। তার বদলে ভালো মানের টাইলসের প্রচলন শুরু হয়েছে। কার্বন মনোক্সাইড, নাইট্রোজেন-ডাই অক্সাইড মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। জ্বলন্ত মোমবাতি থেকে শুরু করে ওয়াটার হিটার, গ্যাস স্টোভ থেকে কার্বন মনোক্সাইড ও নাইট্রোজেন-ডাই অক্সাইড নির্গত হয়। সিসা অত্যন্ত বিষাক্ত একটি ধাতু। সাধারণত পুরনো দিনের বাড়ির দেয়ালে ব্যবহূত রঙে সিসা থাকে। তাই বাড়ি পুরনো হলে নতুন করে রং করিয়ে নিন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর