শুক্রবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
যত্নআত্তি

হেলমেটের যত্ন

সাইফ ইমন

হেলমেটের যত্ন

♦ মডেল : নাজমুল সুজন ♦ ছবি : নেওয়াজ রাহুল

মোটরসাইকেলে নিরাপত্তার প্রসঙ্গ আসতেই প্রথমেই চলে আসে হেলমেটের কথা। মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীরা নিজেদের মোটরসাইকেল নিয়ে ব্যাপক উৎসাহী। ব্যস্ততম রাস্তায় ট্রাফিক আইন তো বটেই, দুর্ঘটনা এড়াতেও সবারই রয়েছে হেলমেট। কিন্তু পরতে নারাজ। অতিরিক্ত বোঝা, বাতাস না লাগা, মাথা ঘেমে যাওয়া, ঘাম ও ধুলাবালিতে ময়লা সেই সঙ্গে বিশ্রী গন্ধ এমনকি হেলমেটের কাচ ঘোলা এমন অজুহাত তো আছেই! তাই বলে কী নিজের সেফটি নিবেন না?

 

বর্তমানে মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীরা তাদের নিরাপত্তায় বেশ সচেতন হয়ে উঠেছেন। আর তাই সেফটি গিয়ার ব্যবহারে সচেতনতাও অনেক বেড়েছে। ফ্যাশন ডিজাইনার সুমন চৌধুরী। ফিলহাল ফ্যাশন ডিজাইনে মত্ত থাকলেও বিভিন্ন কোম্পানিতে দৌড়ঝাঁপে তার একমাত্র সঙ্গী মোটরসাইকেল। ব্যস্ততম রাস্তায় বিপদ এড়াতে সব সময় সঙ্গে রাখেন হেলমেট। তার ভাষায়, ‘হেলমেট শুধু আমাদের প্রয়োজনই নয়, বিপদের বন্ধুও। কিন্তু এর যত্নটায় যত অবহেলা। পেছনে ঝুলিয়ে রাখার কারণে অনেক সময় ঘষাঘষিতে তার ছাল-চামড়া উঠে যায়, কাচ ঘোলা হয়ে যায় খুবই দ্রুত। দৃশ্যমান ময়লা ও ছাল-চামড়া ওঠা হেলমেট আবার মাথায় তুলতে তো সত্যি রুচিতে বাধে।’ এসব কারণে ঘোলা কাচ আর দুর্গন্ধযুক্ত হেলমেটের মালিকের সংখ্যাও কম নয়। মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীরা পোশাক-আশাকের প্রতি যতটা যত্নবান, হেলমেটের প্রতি অতটা যত্নবান হন না। হেলমেট পরার উপকারিতা আর এর যত্নটা জানা থাকলে অভ্যাসটা গড়ে উঠত সহজেই। হেলমেট ব্যবহারে রয়েছে অনেক উপকারিতা। এটা আমাদের চোখ, কান, নাক, মুখ ও মস্তিষ্কের সুরক্ষা প্রদান করে। হেলমেটের কাচের কারণে সরাসরি চোখে ধুলোবালি ঢুকতে পারে না। হেলমেট পরিধানে ত্বক ও চুল সূর্যের আলো থেকে সুরক্ষিত থাকে। এতে ত্বক ও চুলের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা সহজে হারায় না। সুতরাং সবসময় ব্যবহার্য এই হেলমেট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যসম্মত ভালো অবস্থায় রাখা একটি আবশ্যিক বিষয়। এ কারণেই হেলমেটের ভিতর এবং বাহির দুই দিকেরই যত্ন নিতে হয়।

 

হেলমেটের যত্নআত্তি

হেলমেটের মোট চারটি স্তর। সবার ওপরে প্লাস্টিক বা ফাইবারের শক্ত খোলস, তার নিচে কর্কশিটের আবরণ, এর নিচে ফোম, সবার নিচে থাকে কাপড়ের আচ্ছাদন। তাই তো যত্নটাও প্রয়োজন একটু বেশি। মোটরসাইকেল হেলমেট সবসময়ই শুকনো আর অপেক্ষাকৃত উষ্ণ স্থানে রাখুন। বাসায় ফিরে হেলমেটের কাচ কিছুটা তুলে রাখুন। এতে ভিতরে বাজে গন্ধ ও লাইনিঙ্গে ফাঙ্গাস পড়তে পারে না। অনেক হেলমেটে ফোমসহ কাপড়ের আচ্ছাদন খুলে ধুয়ে পরিষ্কার করা যায়। চাইলে হেলমেটের ভিতরটা ডিটারজেন্টে ডুবিয়ে, ডেটল বা স্যাভলন দিয়ে ধুয়ে নিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ব্যবহারের আগে ভিতরটা খুব ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। হেলমেটের সামনের কাচ পরিষ্কার রাখতে প্রতিদিন একবার হলেও পরিষ্কার করে নিন। সপ্তাহে এক দিন হাতে সামান্য সাবান লাগিয়ে কাচটার দুই পাশে পরিষ্কার করে আবার শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিতে পারেন। সাবান ব্যবহার করতে না চাইলে পানি আর হালকা শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। ময়লা তোলা ও পরিষ্কারের পর মোছার ক্ষেত্রে টিস্যু বা পরিষ্কার নরম সুতি কাপড় ব্যবহার করুন। হেলমেটের এয়ার-ফ্লো ভেন্টগুলো নরম রং করা ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করুন। প্রয়োজনে হালকা শক্তির এয়ার ব্লোয়ারও ব্যবহার করতে পারেন।

 

এভাবে হেলমেটের পরিচর্চা করতে পারলে আপনার হেলমেট দিনে ও রাতে, দুই সময়ই থাকবে স্বচ্ছ, সুরক্ষিত। ভিতরটা পরিষ্কার করাটা ঝামেলা মনে হলে হেলমেটের নিচে পাতলা রুমাল বা সুতি কাপড় ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে হেলমেটের একেবারে নিচের আচ্ছাদনটা আপনার মাথার সংস্পর্শে থাকবে না। আর ঘেমে গেলে বা ময়লা হলে রুমাল নিয়ে ধুয়ে ফেললেই হলো।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর