শীত এসেছে মাত্র কয়েকদিন হলো। হেমন্তের বাতাসে এখন শীতল পরশ। তাই তো ত্বক হয়ে যায় শুষ্ক। তখন প্রয়োজন হয় ময়েশ্চারাইজারের। শীতের এ সময়ে তেলে করতে পারেন ত্বক তাজা। আর এর ব্যবহারও বেশ পুরনো। এ জন্য অলিভ অয়েল, বাদাম আর নারকেল— এই তিনটি তেলই যথেষ্ট। রইল পরামর্শ।

অলিভ অয়েল

রূপচর্চায় প্রায় ৫ হাজার বছর ধরে সারা পৃথিবীতে অলিভ অয়েলের ব্যবহার হয়ে আসছে। এ তেল আপনার ত্বককে করবে কোমল ও উজ্জ্বল। শুষ্ক ত্বকে রোজ গোসলের অন্তত ১৫ মিনিট আগে অলিভ অয়েল ম্যাসাজ করুন। ময়েশ্চারাইজড ত্বক পাওয়ার জন্য সারাদিন পরে বাড়ি ফিরে যখন গোসল করবেন তখন পানিতে (বাথটাব থাকলে ১/৪ কাপ অলিভ অয়েল অন্যথায় বড় বালতি পানিতে ২০-২৫ ফোঁটা তেল মেশালেই যথেষ্ট) অলিভ অয়েল ও কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল ফেলে দিন। ত্বক ময়েশ্চারাইজের পাশাপাশি সারাদিনের ক্লান্তিও দূর করবে। যাদের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক, তারা ১ চা চামচ অলিভ অয়েলের সঙ্গে ১ চা চামচ মধু ও ১টা ডিমের কুসুম ভালোভাবে ফেটিয়ে মুখে লাগিয়ে রাখুন। ১৫ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এ প্যাকে ত্বক নরম থাকবে। এ ছাড়া পা ফাটার সমস্যায় রোজ রাতে শুতে যাওয়ার আগে কুসুম গরম পানি দিয়ে পা ধুয়ে শুকনো করে মুছে নিন। এবার পায়ে ভালোভাবে অলিভ অয়েল ম্যাসাজ করে সুতির মোজা পরে নিন। 

আমন্ড অয়েল

বাদামের তেলে রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিড, মিনারেল, ভিটামিন (এ, বি১, বি২, বি৬ এবং ই) এ প্রোটিন। এ তেল ত্বকের স্বাভাবিক ব্যালান্স মেইটেন করতে সাহায্য করে। ফলে ত্বকে কোমলতা ও ময়েশ্চার বজায় থাকে। আমন্ড অয়েলের ব্যবহারে ত্বকের তারুণ্য দীর্ঘদিন অটুট থাকে। শুষ্ক ত্বক, ডার্মাটাইটিস, সোরিয়াসিস, এরিথিমার মতো ত্বকের নানা সমস্যা কমাতেও আমন্ড অয়েল সাহায্য করে। এ ছাড়া ডার্ক সার্কেলের সমস্যায় নিয়মিত আমন্ড বা বাদামের তেল ব্যবহারে উপকার পাবেন।

নারকেল তেল

নারকেল তেলে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা ফ্রি র‌্যাডিকলসের বৃদ্ধি রোধ করে এবং নানা রকম ড্যামেজ থেকে ত্বককে বাঁচায়। শীতে ত্বকের রুক্ষতা দূর করতে নারকেল তেলের সঙ্গে গুঁড়া দুধ, গোলাপজল ও গ্লিসারিন মিশিয়ে লাগাতে পারেন। রোদ থেকে বাড়ি ফিরে অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে নারকেল তেল মিশিয়ে ত্বকের খোলা অংশে লাগান। খুব তাড়াতাড়ি উপকার পাবেন। এ তেল মেকআপ দূর করতেও সাহায্য করে। এ সময় দুই চা চামচ কালিজিরার তেল, ১ চা চামচ নারকেল তেল, ১ চা চামচ গ্লিসারিনের সঙ্গে মধু আর লেবুর রস মিশিয়ে লাগালে তা দীর্ঘক্ষণ ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়তা করবে। পাশাপাশি দূর হবে ত্বকের কালো দাগও। পায়ের গোড়ালি ফাটার সমস্যা থাকলে পেট্রোলিয়াম জেলির সঙ্গে নারকেল তেল মিশিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অংশে ভালোভাবে মালিশ করুন। উপকার পাবেন।

এদিকে তেলের চিটচিটে ভাবের জন্য যারা তেল লাগাতে অস্বস্তিবোধ করেন, তারা তেলের সঙ্গে কিছুটা পানি মিশিয়ে নিতে পারেন। এ ছাড়া তৈলাক্ত ত্বকেও তেল ব্যবহার করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে তেলের সঙ্গে টকদই আর লেবুর রস মিশিয়ে গোসলের আগে লাগাতে পারেন।