শুক্রবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বিয়ের আগে জেনে নিন

বিয়ের আগে জেনে নিন

ছবি : ড্রিমি ওয়েডিং

বর-কনের বয়স

বিয়ের বিষয়ে বয়স খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বেশি বয়সে বিয়ে করার ফলে ছেলেদের ইনফার্টিলিটি বা বন্ধ্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর মেয়েদের ক্ষেত্রে বেশি বয়সে বিয়ে হলে সন্তান মানসিক ও শারীরিক ত্রুটিসহ প্রতিবন্ধীও হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। ত্রিশ বছরের পর মেয়েদের প্রথম সন্তান নেওয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এসব দিক বিবেচনা করে বিয়ের আগে বয়সের দিকটা বিবেচনা করতে হবে। বয়সের দিক ভাবতে গিয়ে অল্পবয়সে মেয়েদের বিয়ে দেওয়াও ঠিক নয়। কম বয়সে মেয়েদের গর্ভধারণ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।

 

রক্তরোগের ঝুঁকি

রক্ত পরীক্ষার প্রধান উদ্দেশ্যই হলো ভবিষ্যতে সন্তান সুস্থ হবে কিনা, তা দেখা। তাই হবু মা ও বাবার নির্দিষ্ট কিছু রক্ত পরীক্ষা করানো একান্ত প্রয়োজন। টিসি, ডিসি, ইএসআর, কোলেস্টেরল, আরএইচ ফ্যাক্টর, এইচআইভি, আয়রন লেভেল ইত্যাদি কিছু রুটিন পরীক্ষা ছেলেমেয়ে উভয়েরই করানো উচিত। এ ছাড়া থাইরয়েড, সুগার, থ্যালাসেমিয়া, এসটিডি, হেপাটাইটিস বা টিউবারকিউলোসিসের মতো সমস্যা রয়েছে কিনা, তা জানার জন্য বিয়ের আগেই রক্ত পরীক্ষা আবশ্যক।

 

বন্ধ্যত্ব সমস্যা

আমাদের দেশে অসংখ্য নারী ও পুরুষ বন্ধ্যত্ব নামক এক ধরনের রোগে আক্রান্ত হন। যৌন অক্ষমতা, অ্যাজোসপারমিয়া এবং সন্তানধারণে অক্ষমতার কারণে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়। বন্ধ্যত্ব পুরুষ ও নারী উভয়েরই হতে পারে। এ ধরনের সমস্যা পরবর্তীতে সংসার জীবনে নানা ধরনের অশান্তির সৃষ্টি করে।

 

বংশগত রোগ

বংশগত রোগগুলো হলো—মৃগী, ডিপ্রেশন, কার্ডিওভাসকুলার ডিজিস, সিস্টিক ফাইব্রোসিস, বিশেষ কয়েক ধরনের ক্যান্সার যেমন ফুসফুসের ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার, ব্রেস্ট ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, আর্থাইট্রিস, গ্লুকোমা, ওবেসিটি, অস্টিওপোরেসিস, অ্যাজমা, মানসিক অসুস্থতা, প্রভৃতি। সব ক্ষেত্রে বংশগত রোগ শারীরিকভাবে প্রকাশ নাও পেতে পারে। যেসব ক্ষেত্রে শারীরিকভাবে প্রকাশ হয় না সেসব রোগের জন্য পরীক্ষা করা প্রয়োজন। একই গোত্রের ছেলেমেয়ের মধ্যে বিয়ে হলে বিয়ের আগে শারীরিক পরীক্ষা করা খুবই গুরুত্বপর্ণ। তাই বিয়ের আগে রক্ত ও টিস্যু নিয়ে ডিএনএ পরীক্ষা করে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়াই ভালো।

 

যৌন-সংক্রান্ত রোগ

নারী বা পুরুষের আগে কোনো যৌন রোগ থাকলে বিয়ের পর শারীরিক সম্পর্কের ফলে এই রোগের জীবাণু একজনের শরীর থেকে অন্যজনের শরীরে মিশে যায়। সিফিলিস, গনোরিয়া, শ্যানক্রয়েড, জেনিটাল হারপিসসহ মরণঘাতী এইডসও এই প্রক্রিয়ায় একজনের শরীর থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়ায়। পরবর্তীতে এসব রোগের প্রভাব পরবর্তী প্রজন্মের ওপরও পড়ে। তাই বিয়ের আগে এসব বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিলে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব।

লেখক—

ডা. সমীরণ কুমার সাহা

এমবিবিএস, পিএইচডি (মেডিসিন)

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর