শিরোনাম
শুক্রবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
অঙ্গসাজ

রাঙা দুই হাত

নূরজাহান জেবিন

রাঙা দুই হাত

গায়ে হলুদে দুই হাত মেহেদিতে রাঙিয়েছেন দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী পাওলি দাম

ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে বিয়ের অনুষ্ঠানের একটি বিশেষ অংশ মেহেদি। উৎসব আনন্দ ও মেহেদি যেন একই সুতোয় গাঁথা। হিন্দু, মুসলমান এমনকি বিভিন্ন ধর্মের সংস্কৃতিতে মেহেদির প্রভাব লক্ষণীয়। আসলে হাত-পা রঞ্জিকার মেহেদির প্রধান কাজই হলো নবদম্পতির জীবন রাঙানো।

 

আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে বিয়ের মতো বড় অনুষ্ঠানের একটি বিশেষ স্থানে আছে মেহেদি। উৎসব আনন্দ ও মেহেদি যেন একই সুতোয় গাঁথা। এই নখ রঞ্জিকার প্রধান কাজই হলো আসলে জীবনকে রাঙানো। মেহেদির নতুন সব নকশা কনের হাতকে করে তুলবে আকর্ষণীয়। মেহেদির ব্যবহার প্রচলন প্রায় পাঁচ হাজার বছরের পুরনো। সে সময় রমণীরা মেন্দি পরলেও বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানে পুরুষরাও বাদ যেত না।

 

মেহেদিতে আদি ও আধুনিক অলঙ্করণে নকশার পার্থক্য চোখে পড়ে। তবে মূল উদ্দেশ্য পরিবর্তন হয়নি। আমাদের উপমহাদেশে দারুণ জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ার কারণ— গ্রীষ্মে এটি ত্বককে শীতল রাখে। আর ত্বক থাকে সজীব ও সতেজ। মেহেদি গাছ অনেকটা চা গাছের মতো। এর গুণাবলিও অনেক। পাতা শুকিয়ে পাউডার বানানো হয়। এই পাউডারের সঙ্গে পানি, ইউক্যালিপটাসের তেল, চা, কফি, লেবু, আরও অনেক কিছু মেশানো হয়। হাতের জন্য এক রকম আবার চুলের জন্য অন্যরকম মেহেদি। মেহেদি গরমে শরীরকে ঠাণ্ডা রাখে। এ ছাড়া রূপচর্চা, প্রসাধন এবং চিকিৎসা সব ক্ষেত্রেই মেহেদি অনন্য।

হাত-পায়ের নকশায় টিউব মেহেদি বেশ জনপ্রিয়। সস্তা এবং সহজলভ্য বলে চাহিদাও ব্যাপক। তবে বাটা মেহেদি দেওয়ার ক্ষেত্রে গতানুগতিক রীতি বেশ প্রচলিত। এতে নখের ত্বক রঙিন হওয়ার পাশাপাশি উজ্জ্বল হয় এবং ভালো থাকে। ট্যাটু হিসেবেও মেহেদির ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে।

 

বিভিন্ন শপিং মলে রঙের মেহেদি পাওয়া যায়। কালো, নীল, বেগুনি, কমলা, গোলাপি, হলুদ ইত্যাদি। সঠিক উপায় না নিলে এসব বাহারি রংয়ের ব্যবহারে হাত ও পা অনেক আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।

 

কীভাবে দিবেন মেহেদি?

প্রথমেই মেহেদির প্রাথমিক রং অর্থাৎ লাল রং দিয়ে কীভাবে মেহেদিতে বৈচিত্র্য আনতে পারেন। মেহেদিতে হাত রাঙাতে লাল রং দিয়ে নকশা করে নিতে পারেন। এরপর লাল রংয়ের বাইরে দিয়ে কালো মেহেদির বর্ডার দিয়ে দিন। নকশা অনুযায়ী মেহেদিতে রাঙিয়ে তুলুন আপন ভুবন। মেহেদির নকশা শেষ হলে এর ওপর বিভিন্ন রঙের কুন্দন, পাথর, গ্লিটার ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়াও নেল পলিশের রঙে মিলিয়ে পাথর, কুন্দন ও গ্লিটার লাগালে দেখবেন বেশ ভালো মানাবে।

 

ময়ূর ডিজাইন

হাতের পাতায় ময়ূরের পেখমের সাজ বহু আগে থেকেই মেয়েদের পছন্দের মেহেদির ডিজাইনের তালিকার শীর্ষে। ঈদ তো বটেই; বিয়ে, পয়লা বৈশাখ, পয়লা ফাল্গুনসহ বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠানে ময়ূরের ডিজাইন মেয়েদের অন্যতম পছন্দের মেহেদির সাজ।

 

পেইসলি ডিজাইন

নামটা পরিচিত না হলেও মেহেদির এই ডিজাইন মেয়েদের হাতে শোভা পায়। এই ডিজাইনের বৈশিষ্ট্য হলো যে এতে ছোট ছোট সূক্ষ্ম ডিজাইন একত্রে যোগ করে তৈরি করা হয় নজরকাড়া সব মেহেদির সাজ। পেইসলি ডিজাইনগুলো হয় সূক্ষ্ম এবং আকর্ষণীয়।

 

ফ্লোরাল ডিজাইন

বিভিন্ন আকারের নানান সব ফুলের সমাহার যেন মেহেদির ফ্লোরাল ডিজাইন। গাঢ় লাল বর্ণের মেহেদির রং-এ যখন ডিজাইনটি ফুটে ওঠে তখন মনে হয় ফুলগুলো সব জীবন্ত।

 

বর্ডার ডিজাইন

এই ডিজাইন সাধারণত ব্যবহার হয় পায়ের পাতায়। পাতার চারপাশ সুন্দর ডিজাইনের একটি আউটলাইন তৈরি করতে এই ডিজাইনের জুড়ি নেই। খুব সাধারণ ও সহজ প্যাটার্ন দিয়ে চমৎকার সব ডিজাইন তৈরি করা যায়।

 

মেহেদির ডিজাইনে রং, গ্লিটার ও স্টোনের ব্যবহার সাজ-কে দিয়েছে নতুন মাত্রা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর