শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
সুস্বাস্থ্য

শীতে শিশুদের চর্মরোগ

শীতে শিশুদের চর্মরোগ

ছবি: ফ্রাইডে

শিশুর জন্মের পরপরই কয়েকটি চর্মরোগে আক্রান্ত হতে পারে। শিশুর ত্বক খুবই স্পর্শকাতর। তাই এ রোগগুলো সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখা প্রয়োজন। সঠিক পরিচর্যা ও চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব হলে অনেক জটিলতাই এড়ানো সম্ভব। যেমন—

 

ন্যাপকিন র‌্যাশ

সব শিশুই বার বার প্রস্রাব করে। কখনো বিছানায়, কখনো কোলে থাকা অবস্থায় করে বলে বেশির ভাগ মা-ই অনেক সময় ন্যাপকিন পরিয়ে রাখতে পছন্দ করেন। এ ন্যাপকিন পরানোর সুবিধার পাশাপাশি অসুবিধাও রয়েছে। সেটাও কিন্তু মায়েদের জানা থাকা প্রয়োজন। ন্যাপকিন প্রস্রাবে ভেজা মাত্রই পরিবর্তন করা প্রয়োজন। কারণ দীর্ঘ সময় ন্যাপকিন পরিয়ে রাখলে ওর মধ্যে জমে থাকা প্রস্রাবের ইউরিয়া ও পায়খানার জীবাণু মিলে অ্যালার্জি সৃষ্টি করে থাকে। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, ন্যাপকিনে আচ্ছাদিত স্থানটুকুতেই এ র‌্যাশ হচ্ছে। যেমন— ঊরুতে, ঊরুর ভাঁজযুক্ত স্থানে, কুচকি ইত্যাদি স্থানে এ র‌্যাশ দেখা দিয়ে থাকে। এ স্থানগুলো দীর্ঘ সময় ধরে কাপড়ে বা ন্যাপকিনে আচ্ছাদিত থাকলে এটির পাশাপাশি এক ধরনের ছত্রাকেরও আক্রমণ ঘটে থাকে। যেমন— ক্যানডিডা।

এ রকম ছত্রাকের আক্রমণ ঘটেছে— ধারণা করলে কাপড় সাময়িকভাবে বর্জন করে স্থানটি সম্পূর্ণ শুষ্ক রাখার চেষ্টা করতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। এ ক্যানডিডার আক্রমণ ত্বক থেকে মুখে জিহ্বায়ও ছড়িয়ে পড়তে পারে। জিহ্বায় এ ক্ষেত্রে সাদা সরের মতো আস্তরণ হতে দেখা যায়। শিশুরা এ ক্যানডিডা জাতীয় ছত্রাকে ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে গলার ভাঁজ থেকে শুরু করে পায়খানার রাস্তার আশপাশ বা কুচকি পর্যন্ত যে কোনো ভাঁজযুক্ত ত্বক আক্রান্ত হয়ে থাকে।

 

খোসপাঁচড়া

অন্যের কারণে এ রোগে অনেক শিশুই আক্রান্ত হয়ে থাকে। যেমন— যে কোনো ব্যক্তি (শরীরে এমন চুলকানি আছে) যদি শিশুকে আদরের ছলে কোলে তুলে নেয়, তবে ওই শিশুটি খুব সহজে খোসপাঁচড়ায় আক্রান্ত হবে। কারণ রোগটি জীবাণু সংক্রমণের কারণে হয়ে থাকে। যার দেহে এ কীট জাতীয় জীবাণু (সারকপটিস স্কেবিয়া) আছে, সে যদি শিশুকে আদর করে কিংবা তার বিছানায় শুইয়ে রাখে, তা হলে এ রোগের সংক্রমণ খুব সহজে ঘটে থাকে। এ রোগে প্রথমে শিশুর শরীরে দারুণভাবে চুলকানি হতে দেখা যায়। তারপর একের পর এক পাঁচড়া এবং সময়মতো চিকিৎসা না হলে এ থেকে অ্যাকজিমাও হতে দেখা যায়। এসব ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, শুধু শিশুর চিকিৎসা হলেই রোগ সারানো যাবে না। শিশুর মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন অথবা যারা শিশুর পরিচর্যার দায়িত্বে নিয়োজিত, তাদের সবার একসঙ্গে চিকিৎসা নিতে হবে। নয়তো এ রোগ কিছুতেই সারিয়ে তোলা যাবে না।

 

লেখক—

ডা. দিদারুল আহ্সান

চর্ম, যৌন ও অ্যালার্জি রোগবিশেষজ্ঞ

সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আল-রাজি হাসপাতাল, ফার্মগেট, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর