শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
প্রচ্ছদ

বসন্ত এসে গেছে

বসন্ত এসে গেছে

♦ পোশাক : মেয়র ♦ ছবি : মেহেদি হাসান হমডেল : দীপ্তি ও নেহা

বসন্ত এসে গেছে— ফুলে ফুলে, ডালে ডালে পাখির কলতানে। প্রকৃতির এই হিসাব দিনপঞ্জির পৃষ্ঠাতেও স্পষ্ট। পাতা ঝরার এই দিনে মন তাই উড়ু উড়ু। মানবে না কোনো বাধা। দুরন্ত হবে চলা। পোশাকে থাকবে তার প্রত্যক্ষ প্রভাব। নিজেকে আর ভারী কাপড়ে মুড়ে রাখা নয়। পাতলা আর আরামদায়ক পোশাকেই হবে স্বস্তি খুঁজে নেওয়া।

 

না গরম না শীতের এই বসন্তে পোশাক হওয়া চাই স্বস্তিদায়ক। হরদম ছুটে চলায় পোশাক যেন কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াতে না পারে। কদিন আগের জাপটে ধরা শীতের অভ্যাস অনেকেই ছাড়তে পারেননি। তাই এখনো পুরু কাপড় পরে নেহাতই নিজেকে কষ্ট দিয়ে চলেছেন। এতে শুধু শারীরিক অস্বস্তি নয়, কাজের প্রতি অনীহা সৃষ্টি হওয়াও অবাস্তব কিছু নয়। বাইরে ঘোরাফেরা তো আরও কষ্টদায়ক। ঘোরার আনন্দটাই শেষে মাটি হয়ে যায়। তাই দেরি না করে পোশাক তালিকায় পরিবর্তন আনুন এখনই।  মজার ব্যাপার হলো, বসন্তের এই সময়ে কোন রঙে গরম ধরবে আর কোন রঙে স্নিগ্ধ থাকবেন তা নিয়ে খুব বেশি ভাবতে হয় না। শুধু পরিহিত পোশাকের ফেব্রিকের ব্যাপারে কিছুটা পরিবর্তনই যথেষ্ট। পরিহিত পোশাকটি যেন অবশ্যই পাতলা হয়। খুব গরমে যে পোশাকগুলো কিছুটা অস্বস্তি ধরায় সেগুলোও এ সময়ে পরে নিতে পারেন। শুধু খেয়াল রাখা প্রয়োজন কাপড়গুলো যেন খুব বেশি ভারী না হয়। সুতি কাপড়ের তৈরি পোশাক শরীরকে ঠাণ্ডা রাখে। এ ছাড়া হালকা রঙের সুতি পোশাক রোদ ও তাপ থেকে বাঁচিয়ে শরীরকে স্বস্তি দেয়। সুতির সালোয়ার-কামিজ এবং ফতুয়া ও জিন্স ব্যবহার করতে পারেন। আর যারা শাড়ি পরতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তারা সুতির হালকা রঙের শাড়ি, টাঙ্গাইলের শাড়ি অথবা ব্লক-বাটিকের সুতি ট্রেন্ডি শাড়ি বেছে নিতে পারেন। সেই সঙ্গে গরম থেকে রেহাই পেতে আপনি নির্ভর করতে পারেন হালকা রঙের ওপর। আজকাল মেয়েরা হালকা রঙের ফ্লোরাল প্রিন্টেড কুর্তি পরছেন। ক্লাস, অফিস বা যে কোনো অনুষ্ঠানেও এসব কুর্তি মানিয়ে যায় খুব সহজে। কাপড় হিসেবে প্রাধান্য পাচ্ছে সাটিন, ভয়েল, লিনেন। কুর্তিগুলো লম্বা হলেও মেয়েদের পরতে যেন কোনো সমস্যাই হচ্ছে না। একই সঙ্গে তারা সুতি ফতুয়া, টপস, শার্ট বেছে রাখছেন পছন্দের তালিকায়। সিনথেটিকেরও চল আছে সুতির সঙ্গে। শুধু মনে রাখতে হবে ভারী জামা সাদা হলেও আরাম পাওয়া যাবে না। জায়গা বুঝে কাপড় নির্বাচন করতে হবে। খুব বেশি চলাফেরা করতে হলে সুতির তৈরি পোশাক না পরাই ভালো। তাড়াতাড়ি কুঁচকে যাবে। এ ক্ষেত্রে লিনেন কাপড় বেছে নিতে পারেন। দিনের বেলায় হালকা হলুদ, হালকা গোলাপি, বিভিন্ন শেডের প্যাস্টেল রংগুলো দেখতে ভালো লাগবে। রঙের সঙ্গে কাপড়ের প্রাধান্য দিন বসন্তের পোশাকে।

ছেলেরা যেহেতু দিনের বেশির ভাগ সময় বাইরে কাটায় তাই আরামদায়ক ফেব্রিকের কথা মাথায় রাখা উচিত। সেক্ষেত্রে সুতির চেয়ে আরামদায়ক আর কিছুই হতে পারে না। সুতি বা তাঁতে তৈরি কাপড়ের পোশাক হতে পারে আপনার গরমের স্বস্তিদায়ক সঙ্গী।

আজকাল আরামদায়ক পোশাক হিসেবে তরুণ-তরুণী উভয়ের পছন্দ টি-শার্ট। বিশেষ করে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের কাছে এই পোশাকের কোনো বিকল্প নেই। কারণ টি-শার্ট জিন্স, গ্যাবার্ডিন কিংবা অন্য প্যান্টের সঙ্গে বেশ মানিয়ে যায়। আর সব বয়সের মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের পোশাকের তালিকায় রাখতে পারেন এই পোশাক। ফ্যাশনে এখন গোল গলা ও কলারসহ দুই ধরনের টি-শার্টই বেশি চলছে। সেগুলো ফ্যাশনেবল বটে। টি-শার্টের কাপড় সম্পূর্ণ সুতি হলে তা বেশ আরামদায়ক হবে। তবে টি-শার্টেও এসেছে নতুন ডিজাইন। হাফ হাতার নিচের দিকে ও কলারে ভিন্ন কাপড়ের ব্যবহার চলছে।

আবহাওয়ার এই সময়টাতে ছেলেরা বেছে নিতে পারেন ঘিয়ে, আকাশি, হালকা সবুজ, বাদামি, পার্পলসহ যে কোনো সহনশীল রং। তবে একেবারে যে গাঢ় রং পরাই যাবে না, বিষয়টি কিন্তু তেমন নয়। কালো এবং কালচে শেড, মেরুনও পরতে পারেন, তবে ফেব্রিক্স হতে হবে পাতলা। মেয়েদের পোশাকের ক্ষেত্রেও রঙের ব্যাপারটি মাথায় রাখা উচিত।

বসন্তের এই সময়ে টাইট ফিটিং শার্ট-প্যান্ট অন্তত বেছে নেওয়া উত্তম হবে না। ট্রেন্ডি ওয়ার্ল্ডের ছেলেরা বসন্তের ট্রেন্ড হিসেবে বেছে নিতে পারেন ঢিলেঢালা কার্গো বা থ্রি-কোয়ার্টার এবং সঙ্গে হাফ হাতা শার্ট বা টি-শার্ট। ব্লক, বাটিক বা টাইডাই করা সুতির হাফ হাতা শার্ট চলতে পারে ফ্যাশনের ট্রেন্ডে। আজকাল তো পাতলা ডেনিমের প্রিন্টেড শার্ট পাওয়া যাচ্ছে। এগুলোও হতে পারে আপনার পছন্দের পোশাকের একটি। জিন্সের ক্ষেত্রে ন্যারো কাটের বদলে স্ট্রেইট কাটের জিন্স হোক এবার আপনার নিউ লুক! আরামের জন্য বেছে নিতে পারেন গ্যাবার্ডিন প্যান্টও।

চাকরিজীবীদের জন্য এই বসন্তের পোশাকে ভাবার আছে অনেক কিছুই। এ সময় পোশাক হতে হবে এমন যাতে আপনিও স্বাচ্ছন্দ্যে থাকেন আবার অফিশিয়াল লুকটিও বজায় থাকে। পরতে পারেন হাফহাতা সুতি বা ব্লকের শার্ট, পোলো শার্ট অথবা ফতুয়ার সঙ্গে স্ট্রেইট কাটের জিন্স। কিন্তু, অফিস যদি আপনার এই ক্যাজুয়াল লুক মানতে না চায়, তাহলে আর কী করা! পরতে হবে সেই ফরমাল পোশাকই! তবে খেয়াল রাখুন শার্টের কাটিং যেন আপনার জন্য আরামদায়ক হয়। এক্সক্লুসিভ বা বেশি দামের শার্ট যত সুন্দরই হোক না কেন, এই নাতিশীতোষ্ণ মৌসুমে তা স্বস্তি দেবে না মোটেও। প্যান্টের বেলায় বেছে নিতে পারেন গাঢ় ধূসর, হালকা ধূসর, অফহোয়াইট, বাদামি বা ক্রিম রং। শার্ট পরতে পারেন একরঙা বা সুতির চেক। মেয়েরা সুতি, শিপন বা জর্জেট শাড়ি পরতে পারেন। পাতলা থ্রিপিস পরলে তো হলই। যে কোনো অনুষ্ঠানের হিসাব এলে ছেলেরা পাঞ্জাবিকেই প্রাধান্য দেন। পাতলা কাপড়ের পাঞ্জাবিতে যেমন স্বস্তি থাকবে আবার উৎসবমুখর লুকটাও থাকবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর