শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
প্রচ্ছদ

কর্পোরেট আউটফিট

কর্পোরেট আউটফিট

♦ মডেল : আলিশা প্রধান ♦ পোশাক : ইনফিনিটি
♦ মেকওভার : আকাঙ্খা’স গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ড ♦ ছবি : এনাম রেদোয়ান

কর্পোরেট দুনিয়ায় টিকে থাকতে হয় সবার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। ভাবতে হয় অনেক বিষয়ে। একই সঙ্গে পোশাক এবং সাজগোজও থাকে ভাবনার অনেকটা অংশজুড়ে। সবকিছু পরিকল্পনামাফিক না হলে পড়তে হয় বড় ধরনের ঝামেলায়। এখানে আবার আবহাওয়ার প্রভাব থাকে প্রত্যক্ষভাবে। উপযোগী কর্পোরেট লুক নিয়ে বিস্তারিত লিখেছেন— তানিয়া তুষ্টি

 

অফিসে কাজটাই মুখ্য, পোশাকে নজর না দিলেও চলে, এমন ধারণা কর্পোরেট যুগে একদমই অচল। আজকাল মানুষ অনেক বেশি সচেতন। কাজের দক্ষতা প্রদর্শনের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকেও উপস্থাপন করতে প্রস্তুত থাকে উপযোগী সাজ-পোশাকে। হাজার ব্যস্ততার মাঝেও নিজের প্রয়োজনীয় জিনিস ঠিকঠিক কিনে সংগ্রহে রাখেন। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে অনুষঙ্গ কিনতেও ভোলেন না। একজন কর্পোরেট লেডি যখন সবার বস, তখন তাকে কাজের প্রতি দিতে হয় সর্বোচ্চ মনোযোগ। ঠিক তেমনি ব্যবহৃত অনুষঙ্গের প্রতিও থাকতে হয় সচেতন। এখানেই প্রমাণিত হয় তিনি সময়, রুচি ও কাজের মিশ্রণে নিজেকে কতটা দক্ষ করে তুলেছেন।

যে কোনো নারীর এক দিনের সাজ-গোজেই যে পরিমাণ আয়োজন থাকে তাহলে প্রতিদিন এতকিছু কীভাবে সম্ভব? এমন প্রশ্ন অনেকের মাথায় আসতেই পারে। কিন্তু এসব প্রশ্নকে যারা তোয়াক্কা করতে চান না, তারা হাজার ব্যস্ততার মাঝেও প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সেরে নেন। আবার সপ্তাহের একেকটি দিন একেকভাবে সেট করে নেন। অফিস মিটিংয়ের দিনগুলোর প্রতি যে আয়োজন থাকে অন্যান্য দিনে তার কিছুটা কমতি থাকে। এমনকি পুরো লুকই বদলে যায়। কোনোদিন শাড়ি পরলেন তো কোনোদিন থ্রিপিস পরলেন। আবার মিটিং ডে তে পরতে পারেন বিজনেস স্যুট। আসলে পোশাকের এই ভিন্নতার বিষয়টি পুরোটাই নির্ভর করে কোন দিন কী কাজ করবেন তার গুরুত্বের ওপর। প্রতিদিন অফিসে যাওয়ার আগ মুহূর্তে অনেকেই সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন কোন পোশাকটি পরবেন, কোন লুক মানাবে আর সাজটাইবা কেমন হবে। ঠিকঠাক লুক পেতে সাজ-পোশাকে একটু স্বাতন্ত্র্যের ছোঁয়াটিইবা কীভাবে আনবেন। কারণ আপনার রুচি ও ব্যক্তিত্বের পরিচয়কে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করাটাই এখানে মুখ্য। যারা আধুনিক কর্পোরেট জবে নিয়োজিত তারা বিজনেস স্যুটেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। বসন্তের দিনে হালকা গাঢ় যে কোনো রঙের পোশাক মানানসই। খেয়াল রাখতে হবে, কর্পোরেট লুক আনতে গিয়ে যেন আপনার স্বাচ্ছন্দ্য ভাবটি হারিয়ে না যায়। সুতরাং কোন পোশাকে আপনাকে ভালো লাগবে এবং কোন পোশাকে আপনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন সেটা বিবেচনায় এনে চার-পাঁচ সেট পছন্দের পোশাক সংগ্রহে রাখুন।

 

মেকআপের ক্ষেত্রে কর্পোরেট লুকে বাড়াবাড়ি মানায় না। ন্যাচারাল লুকটাই অফিসের জন্য পারফেক্ট। স্কিন টোনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেস হিসেবে হালকা ময়েশ্চার বেসড ফাউন্ডেশন নিতে পারেন। তারপর লুজ ডাস্ট পাউডার দিয়ে দিন। এতে মেকআপ ভালোভাবে সেট হয়ে যাবে। মুখটাও অনেক ফ্রেশ দেখাবে। মেকআপ শেষ হওয়ার পর নো-মেকআপ লুকটিই যেন আসে। তবে ত্বকের কালো বা ছোপ দাগ ঢেকে যাবে। চোখের নিচের কালোভাব ও বলিরেখা লুকাবে। চোখের কাজলটি দিতে হবে পছন্দমতো। কালোর পাশাপাশি আজকাল অনেকেই ব্রাউন রঙের কাজল বেছে নিচ্ছেন। চোখের পাতা বরাবর সরু করে আইলাইনার লাগাতে পারেন, তবে অফিসে যাওয়ার সময় আইশ্যাডো না লাগানোই ভালো।

ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক লাগালে মন্দ লাগবে না। মৌসুমটি শুষ্ক হওয়ায় ব্রাইট গ্লসি হলে ভালো লাগবে।

কর্পোরেট লুকে অফিসে অলঙ্কার পরার ব্যাপারে সচেতনতা জরুরি। চওড়া নেকলেস, ঝুলন্ত দুল, বড় আংটি, হাতভর্তি চুড়ি মোটেই মানাবে না।  এমন সাজসজ্জায় একদমই মানায় না। হালকা ছোট আকারের অলঙ্কার উপযুক্ত হবে।

 

কর্মজীবী মেয়েদের ব্যাগ একটু বড় হওয়া উচিত। কারণ তাদের ব্যাগে প্রয়োজনীয় কার্ড, কাগজপত্র, নিজের আইডি কার্ড, টিফিন বক্স, পানির বোতল, ছাতা— সব জিনিস রাখতে হয়। অনেক সময় ল্যাপটপ বহন করতে হয়। তখন ব্যাগটি আরেকটু বড় হতে হবে। জুতা এবং ব্যাগের রং কাছাকাছি শেডের মধ্যে বাছাই করলে দেখতে দারুণ লাগবে। ভালো ব্র্যান্ডের পারফিউম ব্যবহার করতে পারেন।

 

অফিসে যাওয়ার সময় একটি জিনিস অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। সেটা হলো জুতা নির্বাচন। তবে জুতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে ফ্যাশন বজায় থাকে এবং আরামদায়ক হয় এমন জুতা নির্বাচন করাই ভালো। তাছাড়া শব্দ সৃষ্টি হয় কর্মক্ষেত্রে এমন জুতা অবশ্যই পরিহার করতে হবে। নিজের মানানসই লুকের দিকে একটু সচেতন থাকলেই আপনি সহজে অফিসের সাজের জন্য নিজেকে পারফেক্ট হিসেবে উপস্থাপন করতে পারবেন।

 

উপযুক্ত লুক পেতে কিছু পরামর্শ

— অফিসে যোগদানের আগে দেখে নিন বেশির ভাগ কর্মচারী কী ধরনের পোশাকে অফিস করে। কিছু কর্পোরেট অফিসের পরিবেশে বিজনেস স্যুটই প্রচলিত। আপনার প্রাথমিক পোশাক বাছাইপর্বও হতে হবে এই ভিত্তিতে।

 

— খেয়াল রাখবেন অফিসের পোশাক যেন রং, ডিজাইন বা কাটের দিক দিয়ে উগ্র বা লাউড না হয়।

 

— অফিসে জবড়জং গয়না একদমই মানায় না। ছোট পাথর বা হীরে বসানো প্লেন আংটি অনেক বেশি শোভনীয়।

 

— জুতা এবং ব্যাগ বাছাইয়ে মার্জিত রুচির পরিচয় ধরে রাখা বাঞ্ছনীয়। তাছাড়া এই দুইয়ের রং কাছাকাছি শেডের মধ্যে হলে ভালো হয়।

 

— কর্পোরেট নারীর কিছু বিষয়ে অনেক বেশি  সতর্কতা থাকা প্রয়োজন। বড় গলার জামা, উগ্র কটকটে রঙের পোশাক, পাতলা ফিনফিনে শাড়ি বা জামা, রং ফিকে হওয়া পোশাক, ময়লা কিংবা ছেঁড়া পোশাক একদমই পরিধান করা উচিত নয়।

 

— কর্পোরেট লুক আনতে যুগোপযোগী ফ্যাশনেবল ড্রেসকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত।

 

— অফিসে যাওয়ার সময় হালকা মেকআপই যথেষ্ট। খুব ভারি সাজগোজ একদমই মানায় না।

 

ব্যস্ত সময়ে কর্মক্ষেত্রে পোশাক নিয়ে হয়তো অনেক নারীই মাথা ঘামান না। আবার অনেক নারী বুঝে উঠতে পারেন না অফিসে কেমন পোশাক পরা উচিত। অনেকে বেশি স্মার্ট হতে গিয়ে বেমানান পোশাক পরে নিজেকে সমালোচনার পাত্রী বানান। তাই প্রথমেই মাথায় রাখা দরকার, যে পোশাকটি আরামদায়ক নয় এমন পোশাক এড়িয়ে চলতে হবে। অবশ্যই পোশাকটি এমন হওয়া উচিত যাতে আরাম হয়। কারণ একই পোশাকে আপনাকে থাকতে হচ্ছে অনেকটা সময়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর