শুক্রবার, ৯ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা
প্রচ্ছদ

ক্যাজুয়ালি স্মার্ট সামার

ক্যাজুয়ালি স্মার্ট সামার

♦ মডেল : তাহসান ও পিয়া জান্নাতুল ♦ পোশাক : গ্রামীণ ইউনিক্লো

জাঁকজমক পোশাকে সবসময় স্বস্তির আশা করা যায় না। অপরদিকে ক্যাজুয়াল পোশাকই সেখানে আরামের শেষ ভরসা। কিন্তু আরামের কথা চিন্তা করতে গেলে ফ্যাশন ঠিক থাকবে তো? এই চিন্তার অবসান ঘটেছে আরও অনেক আগে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ফ্যাশন ডিজাইনাররা বাজারে এনেছেন ফিউশনধর্মী ক্যাজুয়াল পোশাক। এই সামারে স্বস্তি আর স্মার্ট লুক সবই পাবেন এমন সব ক্যাজুয়াল পোশাকে। বিস্তারিত লিখেছেন— তানিয়া তুষ্টি

 

ঘরের বাইরে বের হওয়ার আগে নিজেকে একটু পরিপাটি করে নিতেই পছন্দ করেন সবাই। কিন্তু এই সামারে তো আর জাঁকজমক পোশাকে দিনভর নিজেকে মুড়িয়ে রাখা সম্ভব নয়। তাই ক্যাজুয়াল পোশাকই সময়ের ভরসা। অনেকেই এসব পোশাকের জন্য ঢুঁ মারছেন পছন্দের ফ্যাশন হাউসগুলোতে। কেউ আবার টেইলার্স থেকে তৈরি করে নিচ্ছেন সুতি কাপড়ের পোশাক। কিন্তু প্রকৃত অর্থে কেমন হওয়া উচিত গরমের পোশাক? এ নিয়ে প্রায়ই দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকেন অনেকে।

 

মেয়েদের উচিত পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে সুতি কাপড়কেই বেশি প্রাধান্য দেওয়া। আর রং নির্বাচনেও সতর্ক থাকা উচিত। পোশাকের ক্ষেত্রে সাদা, হালকা গোলাপি, হালকা বেগুনি, হালকা নীল, বাদামি, আকাশি, হালকা হলুদ, ধূসরসহ হালকা রঙের পোশাকগুলো প্রাধান্য পাবে। গরমে সাদা ও অন্যান্য হালকা রঙের পোশাক শুধু তাপ শোষণই করে না, সেই সঙ্গে চোখকে দেয় প্রশান্তি। তবে গরমকালে সাদা রঙের পোশাকের জয়জয়কার সবসময়ই। সাদার কাছাকাছি হালকা রংগুলোও এই সময়ে পছন্দের তালিকায় থাকে। আবার পোশাকে খুব বেশি টাইট ফিটিংস হলেও সেটা কিন্তু খুব একটা স্বস্তিদায়ক হবে না। একটু ঢিলেঢালা হলেই বরং ভালো হয়। যারা হাইনেক পরেন তারা এ গরমে একটু কলার ছাড়া বড় গলা পরে দেখতে পারেন। আরাম পাবেন। গরমে ফুল স্লিভ কিংবা থ্রি কোয়ার্টার আরামদায়ক নয়। গরমে খুব উজ্জ্বল আর গাঢ় রং মোটেও শোভন নয়। হালকা রঙের পোশাক পরলে আপনাকে যেমন দেখতে ভালো লাগবে তেমনি আপনি স্বস্তিতে চলাফেরা করতে পারবেন। সুতি কাপড়ের সঙ্গে লিনেন, ধুপিয়ান, ভয়েল, মসলিন, চিকেন ও তাতের কাপড় গরমের জন্য বেশ উপযোগী। উৎসবে পরতে পারেন কৃত্রিম মসলিন বা পাতলা চোষা কাতান। আমাদের দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো বেশির ভাগই সুতি কাপড় দিয়ে তাদের পোশাক তৈরি করে থাকে।

 

গরমের এই সময়টাতে অনেকে স্কার্ট পরতে পছন্দ করেন। পাতলা টি-শার্টের সঙ্গে ঘেরওয়ালা পাতলা কাপড়ের স্কার্ট অনেক বেশি আরামদায়ক হবে। আবার ট্রেন্ডিও বটে। সালোয়ার-কামিজের কথায় এলে সেটিও মন্দ নয়। ঢিলেঢালা ধরনের পাজামা তো আজকাল মেয়েদের বেশ পছন্দ। অন্যদিকে পরিহিত কামিজটি বেশ লম্বা দৈর্ঘ্যের একটি শার্ট বা ফতুয়াবিশেষ। এখানেই ফিউশনের স্পষ্টত প্রকাশ পেয়েছে। পাশ্চাত্য স্টাইলের কলার যুক্ত কুর্তিগুলো আজকাল মেয়েদের অনেক পছন্দের। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস এসব পোশাক তৈরি করছে আরামদায়ক ফেব্রিক্সে। মূলত ট্রেডিশনাল কামিজকে ফ্যাশনেবল করতে প্রতিনিয়ত নতুন আঙ্গিকে তৈরি করা হচ্ছে। এই পোশাকে ক্যাজুয়াল লুকটি যেমন অক্ষুণ্ন থাকছে তেমনি তা হয়ে উঠছে ফ্যাশনেবল। বর্তমানের সালোয়ার-কামিজগুলো একটু ভিন্ন স্টাইলের। একে পাঞ্জাবি সুইট সালোয়ার-কামিজ বলা হয়। কামিজগুলোর নিচের অংশের কাপড় সোজাভাবে কাটা হয় এবং উপড়ের অংশ একটু টাইট ফিটিং হয়ে থাকে। কিন্তু সালোয়ারটি থাকে অপরিবর্তিত। এগুলোর পাশাপাশি গরমের আরামদায়ক পোশাক হিসেবে ফতুয়ার তুলনা হয় না। ফ্যাশনে স্টাইলের পাশাপাশি আরামকে যখন প্রাধান্য দেওয়া শুরু হলো, তখন থেকেই  ফ্যাশনের জগতে ফতুয়ার আনাগোনা। এখন নারী-পুরুষ সমানতালে ফতুয়া পরছেন। ফতুয়াকে ক্যাজুয়াল ঘরোয়া পোশাক হিসেবে গণ্য করা হলেও এর সুবিধা হলো কাজের জায়গা বা অফিসেও বর্তমানে এটি মানিয়ে যায় বেশ সহজে। ফতুয়া তৈরির কাপড়ে নেই কোনো বাধাধরা নিয়ম। সাধারণ সুতি কাপড় দিয়ে যেমন ফতুয়া বানানো যায়, তবে লিনেন কাপড় দিয়ে ফতুয়া তৈরি করলে তা হবে গরমের জন্য সবচেয়ে আরামদায়ক পোশাক। জিন্স প্যান্ট ফতুয়ার সঙ্গে সবচেয়ে উপযোগী। ট্রেন্ডি প্যান্ট আর স্কার্ফে আমাদের মেয়েরা ফতুয়া বেছে নিচ্ছেন সহজেই।

 

ছেলেদের জন্য গরমের উপযোগী পোশাক বলতে প্রথমেই আসে কটন বা সুতি কাপড়ের কথা। আজকাল ফ্যাশন হাউসগুলোতে ছেলেদের জন্য সুতি কাপড়ের বিভিন্ন ধরনের শার্ট পাওয়া যায়। এ সময়ের ফ্যাশনে বাটিক, ভেজিটেবল ডাই, টাইডাই, সুবোরি, স্ক্রিনপ্রিন্ট, ব্লক ইত্যাদির মাধ্যমে ডিজাইন করা শার্ট পাওয়া যাচ্ছে। এসব শার্ট ক্যাজুয়াল হিসেবেও যেমন ব্যবহার করা যাবে, তেমনি ফর্মাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এ শার্টগুলো গরমে আরামের পাশাপাশি ফ্যাশন হিসেবেও চমৎকার। জিওম্যাট্রিক, ফ্লোরাল, লাইন, বিভিন্ন ফর্ম ব্যবহার করে এসব শার্টে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নানা ডিজাইন। সুতি ভয়েল কাপড়ের শার্ট এ মৌসুমে খুবই আরামদায়ক। আরেকটু আরামদায়ক হতে পারে হাফ হাতা শার্ট। রং হিসেবে গরমে বেছে নিতে পারেন নীল, ধূসর, সাদা, অফহোয়াইট, মেরুন ইত্যাদি। তবে হালকা রংই গরমে বেশি মানানসই। যে কোনো পার্টিতে বেছে নিতে পারেন সুতি পাঞ্জাবি।

এ ছাড়া গরমের আরও একটি পোশাক টি-শার্ট। মূলত সুতি কাপড়ে তৈরি টি-শার্টের প্যাটার্ন, ডিজাইন রঙে যে কত ধরনের বৈচিত্র্য রয়েছে সে কথা বলে শেষ করা যাবে না। ক্যাজুয়াল পোশাক হিসেবে ছেলেরা টি-শার্টও বেছে নিতে পারেন অনায়াসে।

 

অনলাইন কেনাকাটায় ট্রেন্ডি

ঘণ্টার পর ঘণ্টা এ দোকান ও দোকান ঘুরে শপিং, মুখে এক রাশ বিরক্তির স্পষ্ট ছাপ আরও কত শত ঝুট ঝামেলা তো আছেই! তাই তো বর্তমান সময়ের অনলাইন শপিং-ই হয়ে উঠছে ঝামেলাহীন মানুষের ভরসার স্থান। শপিং বাজারের নতুন এই ট্রেন্ডটি চালু হয়ে খুব বেশি দূর এগোয়নি। কিন্তু এরই মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে আমাদের দেশের অনলাইন শপিং। বোদ্ধারা মনে করেন, অনলাইন শপিং এখন আগের চেয়ে অনেক সহজ। ক্রেতা-বিক্রেতার মাঝে আস্থার জায়গা তৈরি হয়েছে। বিক্রেতারা নিজের ব্যবসায় ভালোভাবে টিকে থাকার জন্য ক্রেতা আস্থা ধরে রাখার ব্যবস্থা করছেন। পণ্যের প্রতিশ্রুত মান ঠিক থাকছে। একই সঙ্গে পণ্য ডেলিভারি আগের থেকেও সহজ হয়েছে অ্যাপভিত্তিক যানবাহনগুলোর জন্য। আগের মতো কুরিয়ারের অপেক্ষায় দুই থেকে তিন দিন অতিবাহিত হয় না। অর্ডারের সঙ্গে সঙ্গে পণ্য ডেলিভারি সম্ভব হয়। অনলাইন শপিং প্লেস অনেকটাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক-নির্ভর। বর্তমানে ফেসবুকও তাদের পলিসি উন্নত করেছে। এ পলিসিতে ধোঁকাবাজ শ্রেণির ব্যবসায়ীরা বেশিদিন টিকে থাকতে পারে না। বর্তমানে অনলাইন ব্যবসায় যারা আসেন তাদের ভালোভাবে ব্যবসায়িক প্রস্তুতি নিয়েই আসতে হয় এবং ব্যবসা পরিচালনা করতে হয়। ৯ মার্চ থেকে অনলাইনে নিজেদের সার্ভিস উন্মুক্ত করছে গ্রামীণ ইউনিক্লো। তাদের সব ধরনের পোশাকই এখন পাওয়া যাবে তাদের অনলাইন প্ল্যাটফর্মে। এ প্রসঙ্গে গ্রামীণ ইউনিক্লোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হক বলেন, ‘সময় বাঁচানোর জন্য ঘরে বসে মাউসের এক ক্লিকেই নিজের পছন্দকে বেছে নেওয়ার জন্যই আসলে অনলাইন কেনাকাটার জন্ম। বিশ্বব্যাপী তুমুল জনপ্রিয় এই ট্রেন্ড বাংলাদেশেও এখন জনপ্রিয়তা পেয়েছে। মাউসের এক ক্লিকে কেনাকাটার স্বাধীনতা ও আনন্দ দেওয়ার জন্য দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্র্যান্ড গ্রামীণ ইউনিক্লোও এবার শুরু করেছে অনলাইন। ফলে আমাদের লেটেস্ট কালেকশন ও ট্রেন্ডি আউটফিটগুলোর সব মিলবে অনলাইনে। আউটলেট ভিজিট না করেই পাওয়া যাবে কেনাকাটার আনন্দ। আশা করছি আমাদের শো রুমের মতো এখানেও সাফল্য আসবে।

সর্বশেষ খবর