শুক্রবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা
শেষ প্রচ্ছদ

গরমের হেয়ারকাট

আবদুল কাদের

গরমের হেয়ারকাট

♦ মডেল : স্বরণ ও তাহমিদ ♦ মেকওভার : শোভন মেকওভার ♦ ছবি : নেওয়াজ রাহুল

ছোট চুল গরমের আরাম। সঙ্গে ট্রেন্ডি কাট। ব্যাস; দেখাবে দারুণ ফ্যাশনেবল। তবে, ট্রেন্ডি ফ্যাশনে নয়, চুল আর পেশার ধরন বুঝে হেয়ারকাট বাছুন। তবেই আপনি হয়ে উঠবেন স্টাইলিশ

 

গরম হানা দিয়েছে নগরজীবনে। দীর্ঘদিনের ঠাণ্ডা আবহাওয়া ভোল পাল্টে তাপ ছড়াচ্ছে। তবে, নাগরিক জীবন তো থেমে নেই। থেমে নেই উৎসব, পার্বণ আর পার্টির মতো নানা আয়োজন। যে যার মতো সাজগোজ নিয়ে পুরোদস্তুর চিন্তিত। গ্রীষ্মে কেমন হবে চুলের কাট, কোন রঙে রাঙাবেন চুল, কোন সেলেবের কাটে সাজবেন তা নিয়ে নেটে ঢুঁ মারা চলছেই।

 

কেমন হবে চুলের কাট?

চুলের কাট ও স্টাইল দুটিই নির্ভর করে আপনার চুলের ধরন কী রকম তার ওপর। অর্থাৎ চুল বেশি সোজা না কোঁকড়ানো, হালকা না ঢেউ খেলানো। ইচ্ছামতো চুলের কাট নেবেন সেই গুড়ে বালি। হেয়ার এক্সপার্টই বাতলে দেবে চুলের কাট কী রকম হবে। আপনার গায়ের রং, ব্যক্তিত্বের ধরন, এবং কী ধরনের কাজ আপনি করেন বা কিছুই করেন না, সব কটির ওপর নির্ভর করবে সম্পূর্ণ হেয়ার স্টাইল।

 

রাজধানীর নিকেতনে তারই পরামর্শ দিয়ে থাকেন জেন্টস বিউটি এক্সপার্ট শোভন সাহা। শোভন মেকওভার স্কিন স্টুডিওর পরিচালক। কসমিটোলজিস্ট হিসেবে তিনি বলেন, ‘গরম যতই হোক ছেলেরা একেবারে ছোট চুলে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। আর ট্রেন্ডেও সম্পূর্ণ ছোট চুল বেমানান। তবে চুলের কাটছাঁটে বয়স, গায়ের রং, শরীরের গঠন এবং পেশাকে মাথায় রেখেই হেয়ার কাট বাছা উচিত।’

 

ছেলেদের খুব ছোট হেয়ার কাট এখন বেশি চলছে। তবে এক কাটিং সবার জন্য নয়। মূলত ম্যান টু ম্যান ভ্যারি করে হেয়ার স্টাইল। ছোট কাটের সঙ্গে বিভিন্ন স্টাইলিং প্রোডাক্ট ব্যবহার করে চুলে স্পাইক করাটাও যে এখন ক্রিকেট, ফুটবল আর ফিল্মি জগতের প্রধান ফ্যাশন। তবে যাদের বড় চুল রাখার ইচ্ছা তারাই কেবল ফুটবলারের মতো স্টাইল করে চুল বেঁধে রাখতে পারেন। আবার বডি বিল্ডার হলে শুধু ব্যাক ব্রাশই যথেষ্ট।

 

কেমন হবে কালার?

গ্রীষ্মে প্রকৃতি অনেক রঙিন হয়ে ওঠে। তাই এই সময়ের লুক রেঞ্জ করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন হেয়ার কালার। কালারের কিছু শেড দিয়ে কালারফুল রিবনও করাতে পারেন আপনার চুলে। তবে, গ্রীষ্মকালে চুলে যে কোনো লাইট কালার ব্যবহার করতে পারেন। যেহেতু গরম জেঁকে বসেছে, তাই হালকা রঙেই রঙিন হয়ে উঠতে পারেন। ব্লন্ড, ব্রাউন, ম্যাজেন্টা রেড এই রংগুলো খুবই প্রাধান্য পাচ্ছে হাল ফ্যাশন ট্রেন্ডে। তবে একটু রাফ অ্যান্ড টাফ লুক চাইলে কালার ওয়াক্স ব্যবহার করে সাদা, বাদামি, বেগুনি, নীল, সবুজ রঙের হেয়ার এক্সটেনশন লাগিয়ে নিতে পারেন দুই-একদিনের জন্য। এসব কালার যে কোনো সময় শ্যাম্পু করলেই চলে যাবে। ফলে এই  মৌসুমে যেমন খুশি রঙে সাজুন।

 

মানানসই দাড়ির কাট

সময়টাই এখন ফ্যাশনের। তাই তো ছেলেরা এখন হেয়ার কাটিংয়ের সঙ্গে মানিয়ে যায় এমনভাবে দাড়ির কাটিং করান। ব্লেড দিয়ে শেভ করার চেয়ে ছেলেরা ট্রিমার দিয়ে ট্রিম করাতেই বেশি নিরাপদ বোধ করেন।

 

নিত্যনতুন সেটআপ

কিছু কিছু হেয়ার কাট সুন্দর করে সেট রাখার জন্য ছেলেদের প্রতিদিনই হেয়ার সেল, ক্রিস, ওয়াক্স, মুজা, স্প্রে বা ট্রেমগোরারি কালার ব্যবহার করতে হয়। এসব ব্যবহারের পর প্রতিদিন অবশ্যই শ্যাম্পু করতে হবে। তা ছাড়া এই গরমের পাশাপাশি আইপিএল এবং আসন্ন বিশ্বকাপ ফুটবলকে মাথায় রেখে প্রিয় খেলোয়াড়ের হেয়ার স্টাইলে সেজে ওঠার আগ্রহ দেখা যাচ্ছে অনেক তরুণের। অনেক ছেলে আবার সুপার স্টার/মডেল/অভিনেতাকেও ফলো করে হয়ে ওঠতে চান আকর্ষণীয়। তবে যত যাই হোক, এক্সপার্টের পরামর্শ ছাড়া যে কতটা মানাবে তা আপনি নিজেই ভালো বলতে পারবেন। কেননা, একজন এক্সপার্টই বলতে পারবেন আপনাকে কোন কাটছাঁটে মানাবে। কেননা, ছোট করে চুল কেটে ফেলার পর তা বড় করার তাত্ক্ষণিক সুযোগ নেই।

 

ট্রেন্ডি হেয়ার স্টাইল

  ফাঙ্কি হেয়ার স্টাইল ছেলেদের সব সময়ই খুব ফ্যাশনেবল। দুটি পাশেই অসমান করে সম্পূর্ণ মাথাটি স্পাইক করে এবং ক্রাউন এরিয়াতে হাইলাইট করে নিলেই হলো।

  স্পাইক কাট তারুণ্যের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয়। সবদিকের চুলই ছোট করে কেটে সামনের চুলগুলো জেল দিয়ে স্টাইল করা যায়।

  ফেড কাটিংয়ে পেছনে ও কানের ওপরে চুলটা একদম থাকেই না বলা চলে। কানের এক ইঞ্চি ওপর থেকে আর পেছনে মাথার অর্ধেক ওপর থেকে কাটা শুরু হয়।

  মাথার পেছনের দিকে ও পাশের চুলগুলো ট্রিম করে কাটা হয়। আর সেখান থেকে ওপরের দিকে ক্রমান্বয়ে চুল বড় ও কিছুটা খাড়া থাকে। এই স্টাইলটা কয়েক বছর ধরেই গরমে বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।

►  যারা খুব খেলাপ্রিয়, তারা বাজ কাটের ফ্যান। খেলোয়াড় এবং সেনারা এই স্টাইল করে থাকেন। এই কাটে চুল ট্রিমার মেশিনে কাটা হয়। চুলের দৈর্ঘ্য থাকে এক ইঞ্চির চার ভাগের এক ভাগ। গোসলের পরও এই চুল আঁচড়ানোর দরকার পড়ে না।

►  ঘন লম্বা চুল অনেকেরই পছন্দ। মাথার চুল লম্বা হলে দুই কাঁধের ওপর ছড়িয়ে নানা আঙ্গিকে বহু স্টাইল করতে পারবেন অনায়াসেই। এই চুল সাধারণত বিভিন্নভাবে স্টাইল করে রাখা যায়। লম্বা চুলে পনিটেল করে রাখলেও মানায়। আবার কিছুটা চুল খোলা রেখে অল্প কিছু চুল নিয়ে এলোমেলো ঝুঁটিও করা যায়।

ফায়ারকাটও এখন বেশ জনপ্রিয়। চুলে স্প্রে করে এক ধরনের পাউডার ছড়িয়ে বিশেষ রাসায়নিক লাগিয়ে নেওয়া হয়। এরপর লাইটার দিয়ে চুলে আগুন ধরানো হয়। আগুন জ্বলা অবস্থায় চিরুনি দিয়ে আঁচড়ানো আর কাঁচি দিয়ে ছাঁটাও চলতে থাকে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর