শুক্রবার, ২৫ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

পাঞ্জাবিতে নতুনত্ব

পাঞ্জাবিতে নতুনত্ব

♦ মডেল : রিপন, সাদমান ও ইমরান ♦ পোশাক ও ছবি : মুসলিম কালেকশন

ছেলেদের ঈদ মানেই পাঞ্জাবি। যদিও কেউ কেউ পোশাকটিকে আদি অকৃত্রিম বাঙালিয়ানার ভূষণ বলে থাকেন। আদিকাল থেকেই উৎসবে ছেলেদের পছন্দের পোশাক হিসেবে পাঞ্জাবির আবেদন অটুট। হাল ফ্যাশনে পাঞ্জাবি তরুণদের পছন্দের অন্যতম ভূষণ। বিস্তারিত জানাচ্ছেন— মোহাম্মদ সুজন

 

১৬ থেকে ৬৬; যাকেই জিজ্ঞেস করবেন ঈদে কী কী নিচ্ছেন? উত্তরের শুরুটাই হবে পাঞ্জাবি দিয়ে।

মূল কথা ঈদ মানেই চমকপ্রদ পাঞ্জাবি। ফ্যাশনেবল এই পোশাকটিকে অনেকে আদি বাঙালিয়ানার ভূষণ বলে থাকেন। কথাটা মোটেও ভুল নয়। সেই আদিকাল থেকেই ঈদ উৎসবে সব বয়সীদের প্রথম পছন্দ পাঞ্জাবি। আদিকালের সেই আবেদন আজও অটুট। তাই তো ঈদকে ফ্যাশন পাড়ার সব বড় বড় শো-রুমগুলো সরগরম। ঈদে হালকা এবং পুরোদস্তুর আরামদায়ক আলখেল্লা পাঞ্জাবির বাজারে লেগেছে আনন্দ আর রঙের ছোঁয়া।

 

 

দিন বদলেছে। তবে ঈদের সকালের চিরায়ত রীতি রয়েছে সেই আগের মতোই। উৎসবের দিনের সকালে সুগন্ধি মাখানো লাল সুতি কিংবা মসলিনি পাঞ্জাবি জড়িয়ে জায়নামাজ হাতে নিয়ে ঈদগাহে যাওয়া। বিকালে সিল্কি পাঞ্জাবি জড়িয়ে পাড়া-মহল্লায় দাপিয়ে বেড়ানো। এ যেন উৎসব আর পূর্ব পুরুষদের চিরচেনা রূপ।

 

এবারের ঈদ আয়োজনে ফ্যাশন হাউসগুলো গুরুত্ব দিয়েছে আবহাওয়ার বিষয়টিকে। গরম ও বৃষ্টির এই ঋতুতে আবহাওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সাজিয়েছে তাদের নানা আয়োজন। পাঞ্জাবি যদিও প্রতি বছর ঈদে সমান আকর্ষণ নিয়েই বাজারে আসে; তবে কাটিং, প্যাটার্ন, লেন্স, কালার এসবে কিন্তু প্রতিবারই কিছু না কিছু নতুনত্ব দেখা যায়।

 

ঈদ ফ্যাশন নিয়ে ফ্যাশন বোদ্ধারা শুরুতেই নজর দেন উৎসবের রঙে। উৎসবের রঙকে তারা বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। তাদের মতে, উৎসবের দিনে রঙিন পোশাকেই উৎসবকে উপভোগ করা উচিত। এ জন্য বেছে নিতে পারেন যে কোনো হ্যাপি কালার। যেমন— লাল, কফি, বেগুনি, কমলা, জলপাই সবুজের পাশাপাশি হালকা আকাশি, সাদা, অফ  হোয়াইট, পিংক, ধূসর ইত্যাদিসহ আরও কতশত রঙ! এসব রঙ থেকে ইচ্ছামতো উৎসবের রঙ বেছে নিতে পারেন।

 

 

মুসলিম কালেকশনের প্রধান ডিজাইনার মো. মুসলিম ঢালী  জানিয়েছেন, ‘সেলাইয়ের বিভিন্ন নকশার মাধ্যমে মুসলিমের পাঞ্জাবিতে বিশেষত্ব ও নতুনত্ব আনা হয়েছে।  লাল, কফি, বেগুনি, কমলা, জলপাই সবুজের পাশাপাশি হালকা আকাশি, সাদা, অফ  হোয়াইট, পিংক, ধূসর ইত্যাদি  রঙ ব্যবহার করা হয়েছে। এ বছর পাঞ্জাবিতে উজ্জ্বল রঙের প্রাধান্য রয়েছে, সঙ্গে রয়েছে ইস্টার্ন এবং ওয়েস্টার্ন কার্ট ডিজাইনের সংমিশ্রণ।

 

এবারের ঈদে পাঞ্জাবিতে রয়েছে শর্ট, সেমি লং এবং ট্রেডিশনাল প্যাটার্ন। শর্ট পাঞ্জাবির চাহিদা কম। পাশাপাশি শরীরের আরামের দিকেও নজর রাখছেন ডিজাইনাররা। সুতি ফেব্রিকই প্রাধান্য দিচ্ছেন প্রায় সব ফ্যাশন হাউজ।

কারণ গরম আর বৃষ্টির এই সময়ে সুতির মতো আরামদায়ক আর কোনো কাপড় হতে পারে না। পাশাপাশি সিল্ক, সেমি সিল্ক, জর্জেট, ভয়েল, খাদি, অ্যান্ডিও কাপড়ও থাকছে। এভাবেই ফ্যাশন হাউসগুলো আলাদা করে সাজিয়েছে চমকপ্রদ সব পাঞ্জাবির ঈদ-কালেকশন।

 

ঈদে ট্র্যাডিশনাল পাঞ্জাবির পাশাপাশি হালকা কারুকাজ করা পাঞ্জাবি থাকছে বেশি। ভারি  কাজের পাঞ্জাবির পাশাপাশি পাঞ্জাবিতে দেখা যাচ্ছে নানা নকশার সমাহার। ছাপা নকশা তো আছেই, সঙ্গে যোগ হয়েছে নানা ধরনের সুতার কাজ। আছে নতুন ও ঐতিহ্যবাহী নানা নকশা। এ ছাড়া পাইপিং, চিকন জরির সুতা, মোটা রঙিন সুতার ব্যবহারে পাঞ্জাবির বাটন প্লেট, কলার ও হাতায় নকশা করা হয়েছে। বুকের দিকে এক বা দুই পকেটের পাঞ্জাবিও আছে। কিছু কিছু পাঞ্জাবিতে কারচুপির কাজ, অ্যামব্রয়ডারি, গলায় এবং হাতে কাজও করা হয়েছে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে।

 

পাঞ্জাবির সঙ্গে সালোয়ার আদি ট্রেন্ড হলেও এখনো সবার প্রধান পছন্দ।  আলিগড়ি, চুড়িদার ও ট্রাউজার স্টাইলের পায়জামা থেকে বেছে নিতে পারেন মানানসই পায়জামা। এ ছাড়া প্রিন্স কোট ও কটি পরতে পারেন পাঞ্জাবির সঙ্গে। এসব নান্দনিক কটি পাঞ্জাবির সঙ্গে যোগ করে নতুন লুক। তাই পাঞ্জাবির সঙ্গে ম্যাচিং করে কিনে নিন আপনার পছন্দের কটি বা প্রিন্স কোট।

 

 

রাজধানীসহ সারা দেশের বিভিন্ন শপিং মল এবং ফ্যাশন হাউসগুলো থেকে পাবেন পছন্দের পাঞ্জাবি। কেনা যাবে ১৫০০ থেকে ৬০০০ টাকার মধ্যে।

যেহেতু গরম, পাঞ্জাবিতে ভারি নকশা বা কাজ কম, তাই দামও রয়েছে হাতের নাগালে। পাঞ্জাবিগুলো পাবেন বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্ক, পুলিশ প্লাজা, পিঙ্ক সিটিসহ বিভিন্ন শপিংমলে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর