শুক্রবার, ৬ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

বর্ষায় যেমন সাজ

নূরজাহান জেবিন

বর্ষায় যেমন সাজ

♦ মডেল : উপমা তানহা ♦ ছবি : শওকত মোল্লা ♦ পোশাক : কাপড় ই বাংলা

বর্ষা মৌসুম চলছে। বলা নেই কওয়া নেই, হুটহাট বৃষ্টি এসে ভিজিয়ে দিবে এটাই স্বাভাবিক। জীবন থেমে থাকবে না। কলেজ, টিউশন বা অফিস, বাড়ি থেকে বেরোতে তো হবেই। আর বেরোলেই হয় বৃষ্টি নয় তো কাদায় মাখামাখিতে পুরো সাজটাই মাটি।

 

বাদল দিনের পোশাক

আমাদের দেশের আবহাওয়ার জন্য সুতির কাপড় সবচেতে বেশি আরামদায়ক। তবে বৃষ্টিতে সুতির কাপড় ভিজলে সহজে শুকাতে চায় না। তাই সুতির কাপড় এড়িয়ে জরজেট, সিল্ক ধরনের সিনথেটিক কাপড় পরা যেতে পারে। ফ্যাশনবোদ্ধারা মনে করেন পাতলা সুতির পোশাকই এ সময়ের উপযুক্ত পোশাক। তবে এ সময় প্রিন্ট ফিউশন বেশ মানানসই। কেননা, হঠাৎ বৃষ্টিতে আপনি ভিজে গেলেও প্রিন্টের কাপড়ের জন্য তা খুব একটা বোঝা যাবে না। যাদের সিনথেটিক কাপড়ে সমস্যা হয় না তারা হালকা সিল্ক, সিফন, জরজেট ইত্যাদি কাপড় পরতে পারেন। এতে কাপড় ভিজে গেলেও তা বোঝা যাবে না। আবার তাড়াতাড়ি শুকিয়েও যাবে। আর যে ধরনের কাপড়ই পরা হোক না কেন, এ সময় একটু ঢিলেঢালা পোশাক পরা ভালো। এতে বৃষ্টিতে ভিজলেও কাপড় গায়ের সঙ্গে লেগে দৃষ্টিকটু লাগবে না। আর রঙের কথা বললেই চোখের সামনে ভেসে উঠবে যে কোনো উজ্জ্বল রং। সে ক্ষেত্রে ডিজাইনাররা নীল রংকেই প্রাধান্য দেন বেশি।

 

বর্ষা মৌসুমে অল্প বৃষ্টিতেই রাস্তাঘাট কাদা হয়ে যায়। তাই এ সময় একটু উঁচু হিলযুক্ত স্যান্ডেল পরা ভালো। তবে ভেজা রাস্তায় যেন পিছলে না যায়, সে রকম স্যান্ডেল বাছাই করতে হবে।

 

বর্ষার সাজকাহন

বর্ষায় মেকআপ হওয়া চাই হালকা আর সিম্পল। এ সময় গাঢ় আর লিক্যুইড লিপ কালার একদম বাদ। এমন বাদলা দিনে হালকা সাজকেই বেশি গুরুত্ব দেন রূপবিশেষজ্ঞরা। এ সময় পানিনিরোধক মেকআপ-সামগ্রী ব্যবহারের পরামর্শ দিলেন আকাঙ্ক্ষা’স গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডের রূপবিশেষজ্ঞ জুলিয়া আজাদ। তিনি বলেন, ‘উজ্জ্বল রঙের পোশাকের সঙ্গে চোখের মেকআপটা হওয়া চাই আকর্ষণীয়। যেহেতু বৃষ্টির দিন, তাই আইলাইনারটা বাদ দেওয়াই ভালো। এ সময় পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে বেছে নিতে পারেন গাঢ় নীল অথবা সবুজ রঙের কাজল। চোখে একটু বড় করে কাজল লাগিয়ে তা হাত দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে দিন। শ্যাডোর ক্ষেত্রে বেছে নিতে পারেন গোলাপি বা ছাই রং। যে রঙের শ্যাডো বেছে নেবেন, সেটি চোখের ওপরের অংশে হালকা এবং নিচের অংশে গাঢ় করে লাগান। ব্যাস কমপ্লিট!

 

 

চাই বাড়তি সচেতনতা

বর্ষার রিমঝিম বৃষ্টি এখন নিত্যদিনের সঙ্গী। আর এ সময় জানালার ধারে বসে বসে কফি খেতে পারলে একেবারে মন্দ হবে না। মনসুন বৃষ্টি যতই শহর ভাসিয়ে দিক, কাজ তো থেমে থাকে না। তা হলে উপায়? রইল টিপ্স!

 

  বর্ষা মানেই ভ্যাপসা গরম। যতই বৃষ্টি  হোক না কেন, রোদ উঠলে যেই সেই। তাই এ সময় চাই আরামদায়ক ও ঢিলে-ঢালা পোশাক। এক্ষেত্রে সুতি, নাইলন, ডেনিম বেস্ট। দেখতে যেমন ভালো লাগে তেমনই সহজে শুকিয়েও যায়। রংটা গাঢ় হলেই ভালো। তবে সাদা পোশাক, বিশেষত সুতির হলে, সেটা বৃষ্টির দিনে ভুলেও নয়! ভিজে গেলেই সর্বনাশ!

বর্ষাকালে উপযুক্ত এক জোড়া জুতা খুবই দরকার। কাদা-পানিতে নষ্ট হবে না, এরকম স্লিপার জুতা ব্যবহার করুন। রাবারের ফ্ল্যাটস বেস্ট। পায়ের ত্বক এই নোংরা পানি থেকে বাঁচিয়ে রাখুন। কেননা, এই পানিতে রয়েছে হাজার রকমের জীবাণু।

প্রয়োজনে দিনে দুইবার গোসল করুন। আর অবশ্যই জীবাণুনাশক সাবান ব্যবহার করবেন। শাওয়ার জেল হলে সবচেয়ে ভালো। ঘামে বা বৃষ্টিতে শরীর ভিজলে দ্রুত গোসল সেরে শুকিয়ে নিন।

বৃষ্টিতে ভিজে গেলে ফাটাফাটি হেয়ার স্টাইলের বারোটা বাজতে বারো সেকেন্ডও লাগবে না! তাই বর্ষায় চুলের কাটছাঁট আর সাজ রাখুন সিম্পল। এ সময় চুল ট্রিমিং করার উপযুক্ত সময়। বর্ষায় ছোট চুল মেনটেইন করা সব থেকে সহজ। তবে চুল ভেজা রাখা মোটেও ঠিক নয়। অসুখ করতে পারে। তাই ভেজা চুল ভালো করে শুকিয়ে নিয়ে তবে বাঁধবেন, নইলে মাথার ত্বকেও নানা সমস্যা হতে পারে।

এ মৌসুমে বেশি বেশি মৌসুমি ফল খেতে পারেন। আম, কাঁঠাল, বেল, কলা, পেয়ারা, শসা, গাজর, ও জাম্বুরা ত্বকে এনে দেয় প্রাণ। এ ছাড়া খালি পেটে ছোলা ভেজানো বা মুগের ডাল ভেজানো খেলে ত্বক জীবাণুমুক্ত থাকবে। যদিও এগুলো খুব বেশি দামি নয়।

►  ত্বকের যত্নে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত। তৈলাক্ত ত্বকে পানির মাত্রা বেশি থাকে। রুক্ষ ও শুষ্ক ত্বকে এসপিএফ ৩০ মাত্রার অধিক সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর