শুক্রবার, ১৩ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

বদলে যাচ্ছে শার্টের ট্রেন্ড

এ কে রাসেল

বদলে যাচ্ছে শার্টের ট্রেন্ড

♦ মডেল : আদর আহম্মেদ ও সজীব খান ♦ পোশাক : ইজি ♦ ছবি : শওকত মোল্লা

ফরমাল বা ক্যাজুয়াল; পোশাক হওয়া চাই রঙিন। এটাই এখন ট্রেন্ড। ছেলেদের পোশাকের দুনিয়ায় রঙের বাহার একটু ধীর গতিতে এলেও তা ধীরে ধীরে নিজের জায়গা করে নিয়েছে। আগে ছেলেদের মধ্যে জামাকাপড় নিয়ে খুব একটা মাথাব্যথা ছিল না। কিন্তু এখন তারাও বেশ সচেতন হয়ে উঠেছে। মৌসুমের রঙের ট্রেন্ড এবং হাল ফ্যাশনের স্টাইলে মিলিয়ে সাজিয়ে তুলছে নিজেকে।

 

সব ঋতুতেই ফ্যাশনে বড় জায়গা ছিল শার্টের দখলে। বেশ কিছুকাল আগেও একরঙা শার্টে ট্রেন্ড ছিল রমরমা। সেই ফ্যাশন ট্রেন্ড আবার ফিরে আসতে শুরু করেছে। কিন্তু এখানেই ডিজাইনাররা দেখিয়েছেন তাদের মুনশিয়ানা। এখন একরঙা শার্টের ওপর চলছে নানা রকম প্রিন্টেড এবং নকশার বাহার। তবে সময় এবং ট্রেন্ডের খাতিরে পরিবর্তন এসেছে ডিজাইনে, কাপড় আর প্যাটার্নে।

 

ছেলেদের পছন্দের ব্র্যান্ড ইজির ডিজাইনার এবং কর্ণধার তৌহিদ চৌধুরী বলেন, ‘ছেলেরা এখন বেশ রঙিন। তাদের পুরো ফ্যাশনই যেন রঙিন দুনিয়া। বর্তমানে তারা সেই সব রং বেছে নিচ্ছে যেগুলোকে আমরা ‘মেয়েলি’ বা ‘ফেমিনিন’ বলে থাকি। তবে এর মধ্যেও ভিন্নতা রয়েছে। নানান নকশা আর শেডের ভিড়ে তারা দিন এবং রাতকে আলাদাভাবে প্রাধান্য দিচ্ছে। দিনে হালকা মেজাজের রং বেছে নিলেও রাতে অথবা কোনো পার্টি শোতে উজ্জ্বল রং বেছে নিচ্ছে। আর সেই রঙিন দুনিয়ার পোশাকে ভিন্ন আমেজ এনে দিয়েছে একরঙা কাপড়ের ওপর নানা নকশা।’

 

শার্টের ট্রেন্ড এখন প্রিন্টেড ডিজাইন। আরেকটু বুঝিয়ে বললে বিভিন্ন মোটিভে তৈরি প্রিন্টেড শার্ট এখন ফ্যাশনে ইন। মোটিভ একটি শৈল্পিক ব্যাপার। এখানে ডিজাইনারের কল্পনার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে থাকেন। তাই মোটিভ প্রিন্টের ক্ষেত্রে ভালো করে খেয়াল রাখা উচিত কালার কনট্রাস্টে। প্রিন্টের রং হালকা হলে কাপড় গাঢ়, প্রিন্ট জমকালো হলে কাপড় রাফের মধ্যে বেশি মানায়। তবে মোটিভের প্রিন্ট ক্যাজুয়ালি পরাই ভালো। ফরমালে তা শতভাগ মানানসই নয়। এ ক্ষেত্রে জিন্স প্যান্ট অথবা চিনোস নিতে পারেন। স্ক্রিন প্রিন্টের মধ্যেই বেশি ফোটে মোটিভ ডিজাইন।

 

ফরমাল শার্ট বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একরঙা অথবা স্টাইফের মধ্যে হয়ে থাকে। আবার বড় বড় ডিজাইনের প্রিন্ট করা শার্ট ফরমালে বেমানান বললেই চলে। তাই ট্রেন্ডি ফরমাল শার্ট নিতে হলে চোখ দিতে হবে ছোট ছোট ডিজাইনের প্রিন্টে। সে ক্ষেত্রে বল প্রিন্ট, রেকট্যাংল প্রিন্ট, ট্রাঙ্গেল প্রিন্টের মতো জিওম্যাট্রিক ডিজাইন বেছে নিন। এ ধরনের ডিজাইনের বিষয় ছোট হওয়ায় তা স্ক্রিন প্রিন্টের মধ্যে না নেওয়া ভালো। সে ক্ষেত্রে টেক্সচারই খাপে খাপ।

 

সব ডিজাইনের মতো প্রিন্টের ডিজাইনেও মোটিভ রয়েছে। যার বেশিরভাগই বিশেষ কোনো চিত্রকর্ম বা পরিবেশ থেকে নেওয়া। গাছ, পশুপাখি, মাছ, এন্টিক কোনো মাস্ত, টেরাকোটা, লেখা অথবা কোনো সাইন থেকেও আসতে পারে এমন ডিজাইনগুলো। ডার্ক কালারের ফ্লোরাল ডিজাইনও এখন ফ্যাশনে দারুণ চলছে। তবে এই ধরনের শার্টে আরেকটি বিষয় মাথায় রাখলে ভালো। তা হচ্ছে— শার্টের লাইনিং এবং পকেট। কলার, প্লাকেটের লাইনিংয়ে কনট্রাস্ট কালার মানানসই। সঙ্গে লাইনিংয়ের কাপড়েরই বুক পকেট। ক্যাজুয়াল গেটআপেই যুৎসই এমন ডিজাইন।

ফেব্রিকের ক্ষেত্রে দুটি বিষয় মাথায় রাখতে হয়। প্রথমত সময়; অর্থাৎ বর্তমানে চলছে বর্ষাকাল। ভাপসা গরমের এই সময়ে কাপড় হওয়া চাই আরামদায়ক। আবার বিবেচনায় রাখতে কাকভেজা বৃষ্টির কথাও। সুতির পোশাক এ সময়ের আদর্শ। তবে কটনের সঙ্গে লিনেন, ভিসকসের মিশ্রণেও কাপড়ের নমনীয়তা থাকে ঠিকঠাক। দ্বিতীয়ত, কাপড়ের সঙ্গে মিল থাকা চাই প্রিন্টের। তাই বেছে নিন সেই ডিজাইনের শার্ট যার কাপড় প্রিন্টের সঙ্গে মানানসই। এরপরই আসে প্যাটার্নের কথা। বর্তমানে বেশি ফিটিং মানানসই নয় আবার বেশি ঢোলাও ছেলেদের মন ছুঁয়ে যেতে পারছে না। সেমি ফিটিংস গ্রীষ্মে স্বাচ্ছন্দ্যের জন্যও ঠিকঠাক।

 

কোথায় পাবেন :

নতুন আর ফ্যাশনেবল এসব শার্টের কালেকশন পেতে ঘুরে আসতে পারেন ইজি, প্লাস পয়েন্ট, ক্যাটস আই, মেনজ ক্লাব, ওয়েসটেক্স, এক্সট্যাসি, রিচম্যান, আর্টিস্টি, ব্যাঙ, সিলভার রেইন, সিল ইত্যাদি হাউস থেকে। এ ছাড়া মেট্রো শপিং, বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্ক, পলওয়েল মার্কেট, ফরচুন প্লাজা, পুলিশ প্লাজা, এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেট, বঙ্গবাজার ও আজিজ সুপার মার্কেটেও পাবেন এসব কালেকশন।

সর্বশেষ খবর