শুক্রবার, ২০ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা
সুস্বাস্থ্য

খোস-পাঁচড়ায় করণীয়

খোস-পাঁচড়ায় করণীয়

খোস-পাঁচড়া (Scabies) ত্বকের একটি ছোঁয়াচে রোগ। এটি ‘Sarcoptes Scabiei’ নামক অতি ক্ষুদ্র পরজীবী কীট (Tiny Mite) দ্বারা হয়ে থাকে। এই পরজীবী কীট ত্বকের নিচে গর্ত করে বাস করে। অতি ক্ষুদ্র বলে চোখে ধরা পড়ে না। বিশ্বব্যাপী প্রায় যে কোনো বয়সের মানুষের খোস-পাঁচড়া হতে পারে। হতে পারে বছরের যে কোনো সময়। তবে শীতকালে খোস-পাঁচড়ার প্রকোপ অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেড়ে যায়।

 

অত্যন্ত ছোঁয়াচে একটি রোগের নাম স্ক্যাবিস বা খোস পাঁচড়া, যা সারকপটিস স্ক্যাবি নামক ক্ষুদ্র মাইট দ্বারা হয়। মাইট উকুনের মতো ছোট জীবাণু। এটি কোনো যৌনরোগ নয়। যেহেতু রোগটি ছোঁয়াচে, সেহেতু খুব সহজেই পরিবারের অন্য সদস্যরা আক্রান্ত হয়। সাধারণত একই বিছানায় শোয়া বা ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে থাকলে, একই কাপড়-চোপড় ব্যবহার করলে রোগটি ছড়িয়ে পড়ে। ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে থাকার ফলে মাইট আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর থেকে অন্যদের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে আবার আক্রান্ত ব্যক্তির কাপড়-চোপড় ব্যবহারের মাধ্যমেও রোগ ছড়িয়ে পড়ে। কারণ মাইট শরীরের বাইরে অর্থাৎ কাপড়-চোপড়, কাঁথা-বালিশ, আসবাবপত্রে দুই-তিন দিন বেঁচে থাকতে পারে।

 

চেনা যায় যেভাবে : ত্বকের ওপর অনেক সোজা অথবা ‘ঝ’ আকারের কালো সুতার মতো ছোট ছোট রেখা দেখতে পাওয়া যায়, এটাকে বারো বলে। এ রেখার শেষভাগে ছোট দানা অথবা পানিযুক্ত ছোট দানা থাকে। এ দানাগুলোই মাইটদের আবাসস্থল। এখানে ডিম পাড়ে।

 

উপসর্গ : এ রোগের বিশেষ এবং প্রধান উপসর্গ হলো সারা শরীর চুলকানো। এ চুলকানি বিশেষত রাতের বেলায় বেশি হয়। রাতের বেলা বিছানার গরমের জন্য মাইটগুলো চামড়ার নিচে চলাচল করতে শুরু করে, ফলে রাতের বেলা বেশি চুলকানি অনুভূত হয়।

আক্রান্ত স্থান : আক্রান্ত স্থানে দানা দেখা যায়। স্থানগুলো হলো— হাতের আঙ্গুলের ফাঁকে, কবজিতে, কনুই ও কনুইয়ের সম্মুখ ভাগে, স্তনের বোঁটায়, নাভি, তলপেট এবং যৌনাঙ্গের আশপাশে এবং শরীরের ভাঁজগুলোতে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে হাত ও পায়ের তলায় ও গালেও দেখা যায়।

ফোঁড়া : তাছাড়া ত্বকে অনেক দিন ধরে স্ট্রোটোকক্কাল ইনফেকশনের কারণে কিডনির মারাত্মক জটিলতা যেমন— একুইট গ্লোমারিউলো নেফ্রাইটিস হয়।

 

জটিলতা : সময়মতো চিকিৎসা না করালে চামড়া ও কিডনির নানা সমস্যা দেখা দেয়। যেমন- একজিমাটাইজেশন; অর্থাৎ চামড়া কালো ও পুরু হয়ে যায়। ইমপেটিগো দানাগুলো বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া দিয়ে আক্রান্ত হয়ে ক্ষতের সৃষ্টি করে।

 

প্রতিকার : পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা ও আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ পরিহার করা। আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা করতে হবে। বিছানো তোশক রোদে দিতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, রোগীকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।

 

চিকিৎসা : খোস পাঁচড়ার জন্য নির্দিষ্ট ওষুধ রয়েছে, যা নির্দিষ্ট নিয়মে ব্যবহার করলে খোস পাঁচড়া সেরে যায়। ওষুধের পাশাপাশি কাপড়-চোপড় সিদ্ধ করে কাচতে হবে এবং বিছানো তোশক রোদে দিতে হবে।

 

 

লেখক—

ডা. দিদারুল আহসান

চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ

আল-রাজী হাসপাতাল, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর