শুক্রবার, ২০ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

চাই খুশকিমুক্ত চুল

চাই খুশকিমুক্ত চুল

♦ লেখা : নূরজাহান জেবিন ♦ মডেল : পিউলী ♦ মেকওভার : ওমেন্স ওয়ার্ল্ড ♦ ছবি : রাফিয়া আহমেদ

উজ্জ্বল কালো চুলের প্রশংসা না করে থাকতে পারেন না কেউই! আপনি কীভাবে চুলের যত্ন নেন সেটাই ছিল অনেকের কাছে রহস্যের ব্যাপার!  আসলে, ব্যস্ত জীবনে চুলের যত্ন না নিলে স্ক্যাল্পে দেখা দেয় খুশকির মতো সমস্যা। ভাবনা নেই, নিয়ম মেনে চুলের যত্ন নিতে পারলে সবই সম্ভব।

 

চলছে বর্ষাকাল। বাইরে বেরোলেই চুলের দফারফা। হঠাৎ বৃষ্টি আর রোদে শুধু যে ত্বকেরই ক্ষতি হয় তা তো নয়, তার ওপর আর্দ্রতা বাড়ার কারণে অনেকের দেখা দেয় খুশকির সমস্যা। আসলে চুল নিয়ে ভুল করতে নারাজ আজকালকার সুন্দরীরা। তাই রইল পরামর্শ...

 

খুশকি কেন হয়?

আসলে চুলে খুশকির সমস্যা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। মাথার স্ক্যাল্পের মৃত কোষগুলো ঝরে যায়। আর এগুলোই হলো খুশকি। শীতকালে বাতাসের আদ্রতা কম থাকার ফলে খুশকি হয়। তবে বাদ যায় না বর্ষাকালেও। কেননা, বর্ষায় ফাঙ্গাসের সংক্রমণ হলেও খুশকি হয়। বেশ কয়েক দিন চুল ধোয়া না হলে আর মাথার ত্বক ঘেমে থাকলে ফাঙ্গাস হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এ ছাড়া নিম্নমানের পণ্য ব্যবহারেও চুল হারায় উজ্জ্বলতা। মাথার স্ক্যাল্প তার নিজস্বতা হারিয়ে ফেলে। আবার চিকিৎসা বিজ্ঞান এও বলছে যে, অনেক সময় সেবোরিক ডার্মাটাইটিস নামক রোগের কারণেও নাকি খুশকি হতে পারে। তবে এ রোগে খুশকির পাশাপাশি মাথার ত্বকে ছোট ছোট দানার মতো কিছু গোটা হয়ে থাকে এবং রোগীর মাথার ত্বকে অতিরিক্ত চুলকানি হয়। অন্যান্য রোগের মতো খুশকিও বংশগত কারণে হতে পারে। আবার দীর্ঘদিন মানসিক চাপ বা অতিরিক্ত ক্লান্তিতে থাকলে খুশকি হতে পারে। মাথার ত্বক বুঝে খুশকির ধরনও বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। অনেক সময় মাথার স্ক্যাল্পে ব্রণের মতো হয়ে প্রচণ্ড চুলকানি হয়। তবে সব ধকলের শেষ পরিণতি হয় চুল পড়ে পাতলা হয়ে যাওয়া।

 

মাথার তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন :

এ ধরনের ত্বকে খুশকি লুকায়িত থাকে। এ জন্য মৌরি ও সমপরিমাণ পানি সারা রাত ভিজিয়ে রেখে পরদিন ভালো মতো বেটে মাথার ত্বকে ঘণ্টা দেড়েক লাগিয়ে রাখুন। তারপর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। মৌরি এমনই আরেকটি উপকারী প্রাকৃতিক উপাদান। খুশকি দূরীকরণে উপকারী।

 

মাথার শুষ্ক ত্বকের যত্ন :

মাথার ত্বক শুষ্ক হলে শীতের এই সময়ে বিড়ম্বনাটাও বেশি। গুঁড়া খুশকি বেড়ে যায়। এ জন্য দেড় টেবিল চামচ মেথি ও দেড় টেবিল চামচ শুকনা আমলকী এক কাপ পানিতে সারা রাত ভিজিয়ে রেখে পরদিন ভালো করে বেটে নিন। সঙ্গে ২-৩ চামচ মধু মেশান। মিশ্রণটি চুলের গোড়ায় ব্যবহার করুন। খুশকি দূর হবে।

 

চুলের রুক্ষতায় :

এ সময়ে চুলে রুক্ষ ভাবলেশটা বেশি থাকে। রুক্ষ আবহাওয়ায় মৃদু শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। ১ কাপ গরম পানিতে ৫-৬টা রিঠা সারা রাত ভিজিয়ে রেখে পরদিন তা দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এটি শ্যাম্পুর কাজ করে। এ ছাড়া রোজ শ্যাম্পু করার জন্য শ্যাম্পুর সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে নিলে ভালো। বাসায় থাকাকালীন কেবল চুলে তেল ব্যবহার করবেন। অন্যথায় চুলে বেশি ময়লা জমতে পারে। বাইরে বেরোনোর আগে ভালো মতো চুল বেঁধে নিন বা স্কার্ফ দিয়ে চুল ঢেকে রাখতে পারেন।

 

মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখুন :

অনেকেই অনেক কথা বলে থাকেন। শ্যাম্পুতে থাকা নানা ধরনের কেমিক্যাল চুল শুষ্ক করে দেয়, চুল রুক্ষ হয়ে যায় ইত্যাদি। প্রতিদিন শ্যাম্পু না করলে খুশকির সমস্যা আরও বাড়বে। আবার শুধু বাইরে বেরোলেই যে স্ক্যাল্পে ময়লা জমে তা নয়, বাড়িতে থাকলেও ঘাম জমে স্ক্যাল্পের ক্ষতি হতে পারে। সব কথার মূল কথা হলো— মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখা। এ জন্য আবার অতিরিক্ত কেমিক্যালযুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার না করে মাইল্ড বা বেবি শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন।

 

সঠিক শ্যাম্পু বেছে নিন :

আপনার চুলের প্রকৃতি অনুযায়ী বেছে নিন সঠিক শ্যাম্পু। আপনার চুলের ডগা শুষ্ক হলে হাইড্রেটিং ফর্মুলা শ্যাম্পু বেছে নিন। স্ক্যাল্প খুব শুষ্ক হলে মেন্থলজাতীয় উপাদান খুব কার্যকর। আবার চুল তৈলাক্ত হলে হাইড্রেটিং বা ময়েশ্চারাইজিং শ্যাম্পু এড়িয়ে ব্যালেন্সিং শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। শ্যাম্পু ব্যবহার করার সময় আরও একটি জিনিস মাথায় রাখবেন তা হলো সঠিক পরিমাণ। যতটা প্রয়োজন ঠিক ততটুকু শ্যাম্পুই ব্যবহার করুন। পাশাপাশি কন্ডিশনিং করুন সঠিকভাবে।

 

চুলের যত্নে প্যাক :

চুলে নানা রকম প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। চুলের ধরন বুঝে বাড়িতে থাকা ফল পেস্ট করে ব্যবহার করতে পারেন। সপ্তাহে একদিন আমলকীর পেস্ট দিতে পারেন। এ ছাড়া টকদই ও লেবুর রসের সঙ্গে চাইলে মধু মিশিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে চুল ঝরঝরে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর