শুক্রবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ত্বকের জন্য এসি ক্ষতিকর!

তামিম মেহজাবিন

ত্বকের জন্য এসি ক্ষতিকর!

♦ মডেল : মোনালিসা দীপা ♦ ছবি : আতিক

সাধারণত এসি নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকলে এমনিতেই ত্বক হয়ে ওঠে শুষ্ক ও খসখসে। এভাবে দিনের পর দিন থাকলে ত্বকের সমস্যা হতে পারে। অল্প বয়সে ত্বক কুঁচকে বয়সের ছাপ পড়তে পারে।

 

ভ্যাপসা গরমে স্বস্তির অপর নাম এয়ার কন্ডিশন। আমাদের দেশে বর্তমানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এই অনুষঙ্গটির ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। কিন্তু আপনি কি বলতে পারেন, আমাদের ত্বকের জন্য এসি (এয়ার কন্ডিশনের ঠাণ্ডা হাওয়া) ঠিক কতটা উপকারী?

 

এ বিষয়ে বেয়ার বিজ বডি ওয়াক্স অ্যান্ড বিউটি স্যালনের স্বত্বাধিকারী ও রূপ বিশেষজ্ঞ শারমিন সেলিম তুলি বলেন, ‘এসিতে থাকার ক্ষতিকারক দিক রয়েছে। আমরা হয়তো গরমের হাত থেকে রক্ষা পেতে এবং আরামদায়ক অনুভূতি নিতে কৃত্রিম উপায়ে ঠাণ্ডা ঘরে থাকতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। সম্ভব হলে দিনের বেশিরভাগ সময়ই এসিতে থাকি। কিন্তু এই আবহাওয়াও কখনো কখনো আমাদের ত্বকের ক্ষতির কারণও হয়ে থাকে। এমন পরিবেশে ত্বকের প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা বজায় না রাখা অতিরিক্ত শুষ্কতার কারণ হয়। এভাবে দীর্ঘদিন থাকলে ত্বকের উপরিভাগের  চামড়া শুকিয়ে যায়। একসময় তা কালো ছোপ ছোপ দাগে পরিণত হয়। এই দাগ দূর করা বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তবে প্রথম থেকেই সাবধান থাকলে এ ধরনের সমস্যায় পড়তে হয় না। মুখের ত্বক পরিষ্কার রাখতে হবে। এছাড়া নিয়মিত ব্যবহার্য ময়েশ্চারাইজার দিয়ে ত্বকের আর্দ্রতা ঠিক রাখলে এ ধরনের সমস্যায় পড়তে হয় না।’

 

সাধারণত এসি নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকলে এমনিতেই আমাদের শরীরের পানির অভাব দেখা দেয়। মরু অঞ্চলের বাতাসের মতো শুষ্ক বাতাস ত্বকে যে আর্দ্রতা থাকে তাও বের করে দেয়। ফলে ত্বক হয়ে ওঠে শুষ্ক ও খসখসে। এভাবে দিনের পর দিন থাকলে ত্বকের সমস্যা হতে পারে। অল্প বয়সে ত্বক কুঁচকে বয়সের ছাপ পড়ে যেতে পারে। তাই যারা দীর্ঘ সময় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকেন তাদের ত্বকের প্রতি বিশেষ যত্ন শীল হতে হয়।

♦  যারা এয়ার কন্ডিশন ঘরে থাকেন তাদের প্রচুর পানি পান করা উচিত। শুষ্ক আবহাওয়ায় ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য এটি হতে পারে সহজ ও কার্যকর উপায়। রূপ বোদ্ধারা বরাবরই এসি নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকার ক্ষেত্রে পানি পানের দিকে জোর দিয়ে থাকেন। পাশাপাশি খাবারের তালিকায় রাখুন সবজি এবং ফল। চাইলে ফলের রসও পান করতে পারেন, তবে তা অবশ্যই চিনি ছাড়া। ডাবের পানিও খেতে পারেন।

♦    এসি ঘরে বেশি থাকা হলে অবশ্যই হাতের কাছে ময়েশ্চার লোশন বা পেট্রোলিয়াম জেলি রাখুন। এয়ার কন্ডিশন নিয়ন্ত্রিত ঘরে শুষ্ক আবহাওয়া থেকে মুক্তি পেতে কিছুক্ষণ পর পর ত্বকে ময়েশ্চারাইজার লোশন এবং ঠোঁটে পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করুন। এতে ফ্রেশ লাগবে এবং আর্দ্রতাও বজায় থাকবে।

♦   এয়ার কন্ডিশন বরাবরই ত্বক শুষ্ক করে ফেলে। তাই এই সময় উচ্চ কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনী ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। পারফিউম হিসেবে হালকা কোনো সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারেন। গোসলে মাইল্ড বিউটি সোপ ব্যবহার করতে পারেন। তবে শাওয়ার জেল বা হারবাল সাবান সবচেয়ে বেশি উপকারী।

♦   ঘরের আর্দ্রতা বজায় রাখার চেষ্টা করুন। এক্ষেত্রে এসি চলাকালীন সময়ে এসির সামনে একটি পাত্রে পানি রেখে দিন। এতে ঘরের বাতাসে কিছুটা আর্দ্রতা বৃদ্ধি পাবে।

♦  একটু সময় পেলেই এসি থেকে বেরিয়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় চলে আসুন। এতে আপনার ত্বক আবহাওয়ার সঙ্গে নিজেকে দ্রুত মানিয়ে নেবে এবং ত্বকের আর্দ্রতার ভারসাম্যও ফিরে আসে। তাছাড়া সম্ভব হলে ঘরে এসি ছাড়া থাকার চেষ্টা করুন।

 

 পরিশেষে এয়ার কন্ডিশনিং ঘরে থাকতে হলে নিয়মিত ত্বকের যত্ন নিতে হবে। এক্ষেত্রে শুধু মুখত্বক নয়, পুরো শরীরের প্রতি যত্নবান হোন। পাশাপাশি এমন আবহাওয়ায় তৈলাক্ত এবং ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। পানি এবং তরল জাতীয় খাবার শরীর ও ত্বক দুইয়ের জন্যই উপকারী।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর