শিরোনাম
শুক্রবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

চুলচর্চার ভুলগুলো

চুলচর্চার ভুলগুলো

♦ মডেল : রাফিয়া আহমেদ ♦ ছবি : আনোয়ার হোসেইন এনাম

চুলে এই প্যাক, সেই প্যাক, আরও কত নানা রকমফের তেলেসমাতি! সবকিছুর মূলে উদ্দেশ্য একটাই; আর তা হলো- দীঘল কালো ঝলমলে চুল। আসলে নারীর সৌন্দর্যের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ চুল। সেই চুল নিয়ে নারীরা করে এক্সপেরিমেন্ট। নিজেকে সবার সামনে দৃষ্টিনন্দনভাবে উপস্থাপন করতেই তো এই গবেষণা! কিন্তু গবেষণার ভুলে আবার সাধের চুলগুলোর কোনো প্রকার ক্ষতি করছেন না তো! জেনে নিন ভুলগুলো... লিখেছেন- ফেরদৌস আরা

 

চুল নিয়ে নানা এক্সপেরিমেন্ট। আজ এই প্যাক তো কাল অন্যটা। আরও কত শত কেরামতি! কিন্তু পরিচর্যায় যদি কোনো ভুল থেকে যায় তবেই তো কেল্লাফতে। তা ছাড়া শ্যাম্পু করা, তেল দেওয়া এগুলো তো প্রতিদিনকার ঘটনা। এর আর নতুন কী! কিন্তু এসব ভাবনায় চুলে যত্নে আবার কোনো ভুল করে বসছেন না তো? তবে চুলের পরিচর্যার সময় কিছু সাধারণ ভুলের কারণে উপকার না হয়ে বরং অপকারই বেশি হয়। জেনে নিন কিছু ভ্রান্ত ধারণা...

 

সপ্তাহে দু-একদিন শ্যাম্পু ব্যবহার

ইশ! শুরুতেই গলদ। কাজে হোক আর অবসরেই, রোজ একবার হলেও আমরা বাইরে বেরোই। আমাদের চারপাশে ধুলোবালি আর নানা দূষণে চুল হয়ে যায় নাজেহাল। তাই আমাদের দেশের আবহাওয়ায় রোজ নিয়ম করে শ্যাম্পু করা উচিত। প্রতিদিন যারা বাইরে বেরোন তাদের জন্য এই পাথেয়টি মাস্ট। কিন্তু যারা ঘর ছেড়ে খুব একটা বাইরে বেরোন না তারা সপ্তাহান্তে তিন দিন করে শ্যাম্পু করতে পারেন। আর এই নিয়ম যে কোনো ঋতুতেই মেনে চলা উচিত। শীতকালে ধুলোর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় খুশকির মতো সমস্যাও দেখা দেয় বেশি। তাই নিয়ম করে রোজ শ্যাম্পু করুন।

 

রোজ কন্ডিশনিং করতে নেই

প্রচলিত এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসুন। রোজ শ্যাম্পু করে চুল পরিষ্কার তো করলেন কিন্তু চুলের সঠিক ময়েশ্চার! এ তো শ্যাম্পুর সঙ্গেই ধুয়ে গেছে। তাহলে বুঝুন, কেন রোজ শ্যাম্পুর পর কন্ডিশনিং জরুরি! কিন্তু তাই বলে তেলতেলে চুলে কন্ডিশনিং করতে যাবেন না। এতে আপনার অস্বস্তির মাত্রা আরও বেড়ে যাবে। সঙ্গে মাথার স্ক্যাল্পের ক্ষতিসাধন ঘটতে পারে। শুষ্ক চুলে প্রতিবার, মিশ্র চুলে একদিন পর পর কন্ডিশনিং করা উচিত। তবে হ্যাঁ, চুলের গোড়ায় কোনোমতেই লাগানো যাবে না।

 

চুলের স্বাস্থ্যে রোজই তেল

আগের দিনে মা-খালারা সকাল হলেই চুলে তেল দিতে উঠোনে বসে যেতেন। হেয়ার এক্সপার্টদের মতে, রোজ চুলে তেল লাগানোর প্রয়োজন নেই। রোজ চুলে তেল দিলে চুল তেল চিটচিটে হয়ে যায়। আর তাতে ঝামেলা বাড়ে। বিউটিশিয়ানদের মতে, ‘রোজ নয় তবে চুল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও ঝলমলে রাখার জন্য সপ্তাহে একদিন চুলের গোড়ায় এবং পুরো চুলে তেল লাগাতেই হবে। চুল শুষ্ক ও ভঙ্গুর হলে দুই দিন পর পর তেল ম্যাসাজ করা ভালো।

 

কেমিক্যালযুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার

আজকাল চুলের যত্নে নানা কেমিকেলযুক্ত প্রোডাক্টের ব্যবহার বেড়েছে। যা লাভের চেয়ে ক্ষতির পরিমাণটাই বেশি। ভালো মানের পণ্য যাচাই না করেই শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, তেল, হেয়ার স্পেপ্র ইত্যাদি ব্যবহারে চুলকে করে উষ্ক শুষ্ক এবং চুল পড়ার সমস্যা তৈরি করে। বিউটি ক্লিনিকের এক্সপার্ট বা ডাক্তাররা অতিরিক্ত কেমিক্যালযুক্ত প্রোডাক্টের ব্যবহারে মাথার স্ক্যাল্পের ভীষণ ক্ষতিও হচ্ছে বলেও সাবধান করে দিচ্ছেন।

 

আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার

রোজই চুল শুকাতে হেয়ার ড্রায়ার! একবার কি ভেবেছেন কতটা ক্ষতি হচ্ছে আপনার চুলের। তা ছাড়া ঘন ঘন হেয়ার স্ট্রেইট বা কার্লিং। এক্সপার্টদের মতে, খুব প্রয়োজন না হলে এগুলো ব্যবহার না করাই ভালো। তবে, ফ্যাশনে কিছুটা ভিন্নতা দেখাতে এর ব্যবহার করবেন না তা নয়, এক্সপার্টের পরামর্শে এসব যন্ত্রের ব্যবহার করুন। তবে শুধু এসব যন্ত্রের ব্যবহার করলেই চলবে না, পাশাপাশি নিয়ম করে নিতে হবে ঘরোয়া যতœও।

 

ক্লান্তি দূর করতে হট শাওয়ার

সারা দিন পর ক্লান্ত শরীরে বাড়ি ফিরে হট শাওয়ার আপনাকে রিল্যাক্স করতে সাহায্য করে ঠিকই। কিন্তু এই হট শাওয়ার আপনার চুল এবং স্ক্যাল্পেরও ক্ষতি করে। গরম পানিতে চুল থেকে তার স্বাভাবিক ময়েশ্চার ও ন্যাচারাল এসেনশিয়াল অয়েল কেড়ে নেয়। তাই হট শাওয়ার নিলেও চুলে কখনো গরম পানি দেওয়া ঠিক নয়। গরম তেল মালিশে চুল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল থাকে। এমন ধারণা ভুল। গরম তেল হেয়ার ফলিকলে ক্ষতি করতে পারে।

 

ঘন ঘন রঙিন কেশ!

চুলের রং করাবেন সাদা চুল হলে। কিন্তু আজকাল ফ্যাশনের অন্যতম কারণ হিসেবে হেয়ার কালারের ব্যবহার বাড়লেই তা ঘন ঘন করা উচিত নয়। এক্সপার্টদের মতে, বছরে তিনবারের বেশি রং করা উচিত নয়। কেননা, কেমিক্যালযুক্ত হেয়ার কালার চুলের ক্ষতি করতে পারে। এবং এর জন্য বাড়তি যত্ন ও প্রয়োজন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর