শিরোনাম
শুক্রবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ঘরে বসেই জিম

ঘরে বসেই জিম

মডেল : জাহিদ হাসান পাপ্পু ♦ ছবি : টিপু সুলতান

সুস্থ এবং সুন্দর জীবন গড়তে ফিট থাকা আবশ্যক। কিন্তু সকালে ঘুম থেকে উঠে অফিস আর সারাদিনের ব্যস্ততা শেষে ক্লান্ত শরীর নিয়ে ঘরে ফেরা- ফিট থাকা আর হচ্ছে কোথায়! সবই সম্ভব, আর তা হবে প্রতিনিয়ত ঘরে বসেই।

 

সুস্থতার মূলমন্ত্র কী? অন্য সবার মতো আপনিও মন খুলে বলবেন নিয়ন্ত্রিত লাইফস্টাইল। দৈনন্দিন ব্যস্ততা আর অনিয়মিত লাইফস্টাইলই যেন সবার সঙ্গী হয়ে উঠেছে। সব কিছুর জন্য প্রতিনিয়ত ব্যস্ততার ওপর আঙ্গুল তুলে তো আর কার্যসিদ্ধি হবে না! সমাধান খুঁজে বের করতে হবে নিজেকেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘রোজকার ব্যস্ততাকে ছাপিয়ে নির্দিষ্ট আমাদের প্রত্যেককেই একটি সময় বের করে নেওয়া উচিত। কেননা, পরিশ্রম সুস্থ এবং সুন্দর জীবন বয়ে আনে। আর এ জন্য জিমের শিডিউল ঠিক করতে হবে না। দিন শেষে ঘরে বসেই সেরে নিতে পারবেন। এ জন্য ঘরবন্দী হয়ে মাত্র কয়েকটি সহজ ব্যায়ামই যথেষ্ট।’

 

প্রথমে ব্যায়ামগুলোকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নিন। শরীরের উপরের অংশের জন্য, শরীরের নিচের অংশের জন্য, পেটের জন্য। তবে ব্যায়ামগুলো রোজকার শিডিউল না বানিয়ে একদিন অন্তর অন্তর করাটা বিজ্ঞানসম্মত। আর প্রতিটি ব্যায়াম ১০ বার করে তিন রাউন্ড করলে ভালো।    

 

পুশ-আপ : এই ব্যায়ামের সঙ্গে আমরা পরিচিত। ঘরবন্দী ব্যায়াম হিসেবে এটি বেস্ট। নিজের শরীরের ক্ষমতা বুঝে এটা করতে হয়। হাতের আর পায়ের পাতার ওপর ভর দিয়ে উপুড় হয়ে শুয়ে শরীর একবার তুলুন আর আর একবার নামান।

রোয়িং : এখানে ডাম্বেলের বদলে আপনি হাতে নিতে পারেন দুটি পানির বোতল। এরপর মেরুদণ্ড টানটান রেখে হাঁটু সামান্য ভাঁজ করে সামনের দিকে ঝুঁকুন। যেন মাটি থেকে কিছু তুলছেন, ঠিক সেই ভঙ্গি। এর পর পানির বোতল ধরা হাত দুটিকে মাটির দিক থেকে আপনার শরীরের দিকে টানুন।

সাইড বেন্ড : হাতে পানির বোতল দুটি ধরে রাখুন। পা দুটি সামান্য ফাঁক করে হাত দুটিকে মাথার উপরে তুলে, শরীরটাকে একবার বাঁ দিকে আনত করুন আর একবার ডান দিকে করুন।

স্কোয়াট : ব্যায়াম খালি হাতে করতে পারেন আবার হাতে কোনো ভারী জিনিস নিয়েও। হিপের ওপর জোর দিয়ে চেয়ারে বসার মতো করে মেঝেতে অর্ধেক বসুন।

লাঞ্জ : এখানে একটা পা সামনে এবং আরেকটা পা পিছনে। দুটি পায়ের মধ্যে দূরত্ব রাখুন কমপক্ষে তিন ফুট। মেরুদণ্ড সোজা রেখে হাঁটুকে ৯০ ডিগ্রি ভাঁজ করে মাটি স্পর্শ করুন।

সিটেড টুইস্ট : হিপের ওপর ভর দিয়ে মেঝেতে বসতে হবে। হাঁটুটাকে ভাঁজ করে কোমরের কাছে এনে শূন্যে ধরুন। পর্যায়ক্রমে শরীরটাকে একবার বাঁ দিকে আর একবার ডান দিকে ঘোরান।

প্ল্যাঙ্ক : কনুই আর দুই পায়ের পাতার ওপর ভর দিয়ে শরীরটাকে শূন্যে সমান সরলরেখায় রাখুন। এক্ষেত্রে মাটির সঙ্গে সমান্তরালভাবে থাকবে শরীর।

 

ব্যায়ামে খাদ্যাভ্যাস

ব্যায়াম করলে সকালের নাস্তা এবং দুপুরের খাবারে প্রোটিন রাখুন। তবে রাতের খাবারে প্রোটিন না রাখলেও চলবে। আর রাতে যদি ব্যায়াম করে থাকেন তবে হালকা খাবার খান।

 

০. জিমে বা ব্যায়ামে যাওয়ার এক ঘণ্টা আগে কার্বোহাইড্র্রেট জাতীয় খাবার খেতে হবে। এক্ষেত্রে ফল খেতে পারেন।

০. ব্যায়ামের আগে টোস্ট, কর্নফ্ল্যাকস খেতে পারেন। এ ছাড়া জটিল কার্বোহাইড্রেট হিসেবে কলাও খেতে পারেন।

০. আমিষভোজীরা ডিমের সাদা অংশ, ভেজানো ছোলা ও ওটস খেতে পারেন। যারা এসব খেতে নারাজ তারা ফল খান।

০. এ ছাড়া ব্যায়ামের আগে অবশ্যই এক গ্লাস পানি পান করে নেবেন। এর ফলে শরীর ভালোভাবে আর্দ্র থাকবে।

 

সতর্কতা : খালি পেটে কখনই ব্যায়াম করবেন না। ব্যায়ামের ফলে যে চাপ পড়বে সেটি শরীরের শর্করার মাত্রা কমিয়ে দিতে পার। যার ফলে হাইপোগ্লেসিমিয়া হয়ে শরীর অবসন্ন হয়ে যেতে পারে। তাই কখনই খালি পেটে ব্যায়াম করতে যাবেন না।

 

০. সকালে ঘুম থেকে শরীরচর্চা শেষে একটু ভরপেট খাওয়া-দাওয়া করতে হবে। এক্ষেত্রে দুটো ডিমের সাদা অংশ, দুটো ব্রেড স্যান্ডউইচ, একটা কলা বা আপেল খেতে পারেন।

০. ব্যায়াম শেষে প্রোটিন জাতীয় খাবার যেমন- ডিম বা মুগডাল খেতে পারেন। আর ছুটির দিনগুলোয় সকালে ব্যায়ামের পর স্যুপ খেতে পারেন। এক্ষেত্রে চিকেন বা ফিশ স্যুপ হলে ভালো।

 

কতটুকু খাবেন?

ব্যায়ামের পর কতটুকু খাবার খাবেন তা নির্ভর করে আপনার শরীরের ওজনের ওপর। যারা একটু কম ওজনের (৫৫ কেজি বা তার আশপাশে) তারা একটু কম খাবেন। যাদের ওজন ৬০-৬৫ তারা মাংসপেশি ধরে রাখতে একটু বেশি খাবেন। মাংসপেশি ধরে রাখতে বেশি বেশি প্রোটিন প্রয়োজন। আবার ব্যায়ামভেদে খাবার খাওয়াও জরুরি। অর্থাৎ যোগাসন করলে কম খাবেন। বিপরীতে ঘাম ঝরানো ব্যায়াম করলে বেশি খাবেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর