শুক্রবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

সন্তানের বন্ধু বাবা-মা

সাইফ ইমন

সন্তানের বন্ধু বাবা-মা

ছবি : আর্কাইভ

বাবা-মা- অভিভাবক। বিচক্ষণ শিক্ষকও একজন ভালো বন্ধু। এতে যতই জেনারেশন গ্যাপ থাকুক না কেন, মনে রাখবেন বয়স বন্ধুত্বের মাঝে বাধা নয়। তবেই আপনি হয়ে উঠতে পারবেন সন্তানের চোখে সেরা একজন।

 

আচ্ছা! সফল সম্পর্কে ভিত কী? অন্য আট-দশজন মানুষের মতো আপনার মনও বলবে বন্ধুত্বের গল্প। বন্ধুত্বের মাঝেই আছে দৃঢ়তা আর বন্ধন। সেই তালিকায় বাবা-মা ও সন্তানের সম্পর্ক তবে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এই বেশ কিছুকাল আগে অর্থাৎ সাদা-কালো জমানার যুগে বাবা-মা সন্তানের কাছে ছিল কেবল অভিভাবক। কিন্তু দিন বদলেছে। এখনকার ছেলে-মেয়েরা স্বাধীনচেতা। তাদের মানুষের মতো মানুষ করে তুলতে আপনাকে তাদের জগতের একজন হয়ে উঠতে হবে। এজন্য বন্ধুত্বই ভালো উপায়। জেনে নিন কীভাবে আপনার সন্তানের চোখে একজন ভালো বন্ধু হয়ে উঠবেন।

 

♦  আমরা অনেকেই ভুলে যাই যে, ছোট্ট বাচ্চাদের এক নিজস্ব অনুভূতি, ভালো লাগা, পছন্দ-অপছন্দের বিষয় রয়েছে। কিন্তু মনে রাখা প্রয়োজন সন্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে প্রথমেই নিজের সন্তানকে স্বতন্ত্র ব্যক্তি মনে করতে হবে। যদিও সে আপনার সমকক্ষ নয়, তবুও ওকে আপনার অধস্তন ভাববেন না। ওকে প্রকৃত মানুষ ভাবলে, ওর নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাসও বাড়বে।

♦   বন্ধুত্বের প্রথম শর্তই হলো বিশ্বাস। একে অপরকে নির্ভয়ে সব কথা শেয়ার করার অধিকার। আপনার সঙ্গে ও যেন সব ধরনের কথা নির্দ্বিধায় শেয়ার করে তা বুঝিয়ে দেবেন। বাচ্চারা সাধারণত ভুল করে বেশি। এক্ষেত্রে ওকে নরমভাবে ওর ভুলটা ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন। এতে ও আপনাকে বিশ্বাস করতে শুরু করবে।

♦  সন্তানকে কোনোভাবেই তিরস্কার করবেন না। আর তা করার আগে নিজে একবার ভেবে দেখুন আপনি নিজে সমালোচনার ঊর্ধ্বে কিনা! আপনি যে উপদেশটা দেবেন তা আপনি নিজে রোজকার জীবনে আদৌ প্রয়োগ করেন কি না! তাই সন্তানের কাছে নিজের ভরসা ধরে রাখতে যে কোনো রকমের দ্বিচারিতা থেকে দূরে থাকুন।

♦  সন্তানের খেলার সঙ্গী হয়ে উঠলে একেবারে মন্দ হবে না। রোজকার সংসার, অফিসের দায়িত্ব ঠেলে সন্তানের সঙ্গী হয়ে উঠুন। আর জীবনের নানা টানাপড়েন সামলাতে গিয়ে যদি সন্তানের ভিতরের মনুষত্বকে জাগিয়ে রাখার চেষ্টা করুন। আপনার নিজের সন্তানের খেলার সঙ্গী হয়ে উঠলে নিজেও অনাবিল আনন্দ পাবেন।

♦  একজন প্রকৃত বন্ধুর কর্তব্যই হলো, তার বন্ধুকে সব কাজে সহযোগিতা করা এবং উৎসাহ দেওয়া। আপনার সন্তানের উদ্যম ও প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়ে উৎসাহ দেওয়ার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে কাজের ভুলগুলোকে ধরিয়ে দিন। ওর পাশে সব সময় থাকার চেষ্টা করুন। নিজের কাজ নিজে করার প্রতি উৎসাহ দিন। আর কাজ শেষে তাকে বাহবা দিতে ভুলবেন না। এতে সে আপনাকে বেস্ট ফ্রেন্ড ভাবতে শুরু করবে। তাই সন্তানের বন্ধু হয়ে উঠতে পারলে তাকে মানুষ করা সহজ হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর