শুক্রবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

হাত-পায়ের যত্নে পারলারের সমাধান

হাত-পায়ের যত্নে পারলারের সমাধান

ছবি : ফারহান আহমেদ

♦  শীতে অনেকের অতিরিক্ত ত্বক ফেটে যায়। এমন সমস্যা হতে পারে বংশগত কারণেও।
♦   ত্বক শুষ্ক হলে পানির কাজ করার পরই ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার লোশন লাগাতে হবে।
♦  বিশেষজ্ঞদের মতে, এ সময় ত্বকের সুরক্ষায় দুই ঘণ্টা পর পর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত।

 

আমাদের দেশে শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কম থাকায় অন্যান্য সময়ের তুলনায় শরীর শুষ্ক হয়ে যায় বেশি। এই ঋতুতে অল্প আর্দ্রতা, সূর্যের আলো ও ঠান্ডা বাতাসের কারণের হাত-পা এর ত্বকে শুষ্কতা দেখা দেয়। অনেকের আবার বংশ বা জিনগত কারণেও হাত-পার চামড়া শুষ্ক হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, বয়স চল্লিশ পেরোলে তেল ও ঘাম গ্রন্থির সংখ্যা কমে যায়। ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে বিজ্ঞ চর্ম বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এ ছাড়া পেশাগত কারণে, অতিরিক্ত সাঁতার কাটা, গরম পানিতে গোসল বা ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহারেও এমন সমস্যা দেখা দেয়।

 

অনেক সময় এই শুষ্কতা বিপদ ডেকে আনে। অতিরিক্ত শুষ্কতার ফলে হাত-পা ফেটে অনেক সময় রক্তও বের হতে থাকে। হাত-পা ভালো রাখার জন্য প্রথম ট্রিটমেন্টটা পারলার বা বিউটি ক্লিনিক থেকে শুরু করাটাই ভালো। হাত-পা ফেটে গেলে সেই ফাটা অংশে ইনফেকশন দেখা দিতে পারে। পারলারে অনেক যতœ করে ফাটা চামড়া পরিষ্কার করে মোলায়েম করে তোলা হয়। এক্ষেত্রে পারলারের প্রথম সমাধানই হলো পেডিকিউর ম্যানিকিউর। এখন বিউটি ক্লিনিকগুলোতে এক্সট্রা হাইড্রেসেনের জন্য পাবেন প্যারাফিন ওয়াক্স পেডিকিউর ম্যানিকিউর। পারলার থেকে ট্রিটমেন্ট করিয়ে এসে সেই ইফেক্টটা ধরে রাখতে বাড়িতে অ্যাপ্লাই করতে হবে কিছু ঘরোয়া টোটকা। নিয়ম মেনে সেই দাওয়া ব্যবহার করলেই রুক্ষতার শীতেও হাত-পা থাকবে সতেজ।

 

নিয়মিত গোসলের পর সঙ্গে সঙ্গে হাত- পায়ে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে। শরীর হালকা ভেজা থাকা অবস্থায় ময়েশ্চারাইজার লোশন ব্যবহারের ত্বক ময়েশ্চার থাকে দীর্ঘক্ষণ। এ ছাড়া খালি পায়ে বাড়িতেও হাঁটা যাবে না। হাত-পা যেন নোংরা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। নোংরা হয়ে গেলে হাত-পা ধুয়ে সঙ্গে সঙ্গে ময়েশ্চারাইজার লোশন ব্যবহার করুন। সম্ভব হলে সব সময় হাত-পা মোজা ব্যবহার করবেন। তবে পা মোজার ক্ষেত্রে অবশ্যই ঘরে পরার জন্য এবং বাইরে পরার জন্য আলাদা হতে হবে। মোজা অবশ্যই প্রতিদিন খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।

 

২-৩ দিন পর পর রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে হাত-পা শ্যাম্পু, অ্যান্টি সেপটিক লোশন, গ্লিসারিনযুক্ত পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখবেন। এরপর লেবু আর ব্রাশ দিয়ে ভালোভাবে হাত-পা ঘষে নিতে হবে। পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালো করে হাত-পা ধুয়ে পেট্রোলিয়াম জেলি বা ময়েশ্চারাইজার লোশন ব্যবহার করতে হবে। মনে রাখবেন, শীতে হাত-পা নরম রাখতে দিনে কয়েকবার ময়েশ্চারাইজার বডি লোশন লাগানোর প্রয়োজন হয়। এরপরও সমস্যা নিয়ন্ত্রণে না এলে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শগত হিলিং ক্রিম বা অক্সেন্টমেন্ট ব্যবহার করতে হবে। পাশাপাশি হাত-পা এর তালুতেও  পেট্রোলিয়াম জেলি লাগান। হাত-পা এর তালু অনেকটা মসৃণ হয়ে আসবে।

 

এ ছাড়া এক টেবিল চামচ দুধের সর বা মাখনে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস ও গ্লিসারিন মিশিয়ে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে দুই হাতে সেটা ঘষে লাগিয়ে নিতে পারেন। সম্ভব হলে প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে হাত ও আঙ্গুলগুলো আমন্ড অয়েল মালিশ করে নিন। পায়ের যতেœ সমান পরিমাণ গোলাপ জল এবং গ্লিসারিন মিশিয়ে নিয়ে প্রতি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পায়ের গোড়ালি ও পাতায় ম্যাসাজ করুন। চাইলে গুড়াঁ দুধ, মধু ও এক চামচ লেবুর রস ভালোভাবে মিশিয়ে পায়ে ১০-১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। তারপর ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে ফেলুন।

 

শোভন সাহা

কসমোলজিস্ট, শোভন মেকওভার

সর্বশেষ খবর