শুক্রবার, ৪ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

দাগমুক্ত ত্বকের জন্য

দাগছোপ সৌন্দর্যে বাধা। বিউটি ক্লিনিকগুলো দাগছোপের সমাধান হিসেবে নানা ট্রিটমেন্ট দিয়ে থাকে। পাশাপাশি ঘরোয়া পাথেয় গ্রহণেরও পরামর্শ দেয়...

দাগমুক্ত ত্বকের জন্য

♦ মডেল : রিভা ♦ ছবি : আরিয়ান

♦ দাগছোপের প্রতিকারে গোসলের আগে হলুদের মাস্ক ব্যবহার করা ভালো।
♦ আলু কুরিয়ে তাতে লেবুর রস মিশিয়ে মাস্ক হিসেবে মিশ্রণটি ট্রাই করতে পারেন।
♦ যে কোনো ময়েশ্চারাইজারের সঙ্গে ‘ভিটামিন ই’ ক্যাপসুল মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন।

 

ত্বকের খুঁত ঢাকতে আমরা কত কিছুই না করি। ত্বকের ধরন অনুযায়ী মেকওভার, মাসে অন্তত একবার বিউটি কেয়ার আরও কত কী! এতে সাময়িকভাবে দাগছোপ গা ঢাকা দেয় ঠিকই, কিন্তু কমে না। এক্ষেত্রে প্রথমেই জানতে হবে ত্বকের এই দাগছোপের কারণ।

ত্বকের দাগছোপ নানা রকম সমস্যা থেকেই হতে পারে। যার সাধারণ একটি সমস্যা হলো সানবার্ন। দীর্ঘদিনের এমন সমস্যা মুখে ছোপ ছোপ দাগের সৃষ্টি করতে পারে। এ ছাড়াও হরমোনাল, ব্লাড পলিউশন, কিডনির সমস্যা; এমনকি মহিলাদের প্রেগন্যান্সির সময়ও মুখে দাগছোপ দেখা দিতে পারে। নিত্যদিনের কেয়ারলেস লাইফস্টাইল, পলিউশন ইত্যাদি ত্বকে পিম্পল, ব্লাকহেডস, হোয়াইটহেডস, ডার্কসার্কেল ইত্যাদি সমস্যা তৈরি করে থাকে। আর এ ধরনের দাগছোপের সমস্যাগুলোকে ক্লিনিক্যাল ভাষায় পিগমেন্টেশন বলা হয়ে থাকে। মূলত সূর্যের তাপ বা রোদ থেকেই পিগমেন্টেশনের সমস্যা হয়। তাই বলে যদি আপনাদের বলি, সূর্যের রোদ পুরোপুরি এড়িয়ে চলতে, সেটা তো সম্ভব নয়। অর্থাৎ দাগছোপ সম্পূর্ণভাবে আটকানোর রাস্তা নেই। এমনটাও নয়, দাগছোপ আটকানোর পথ না থাকলেও, তা হালকা করার উপায় কিন্তু রয়েছে। আমাদের দেশের বিউটি ক্লিনিকগুলো পিগমেন্টেশনের চিকিৎসা করে থাকে। তবে বিউটি ক্লিনিকগুলো পিগমেন্টেশনের ধরন বুঝে ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয়। তন্মধ্যে স্পট লাইটেনিং, ডি-পিগমেন্টেশন, ডি-ট্যান, মেলানোকিয়ার, অ্যান্টি-স্পটিং ট্রিটমেন্ট বেশ ভালো।

শুধুমাত্র ট্রিটমেন্টের ওপর ভরসা করলেই চলবে না। সঙ্গে অবশ্যই নিয়মিত হোমকেয়ার এবং সানব্লক ব্যবহার করতে হবে। আর তা কার্যকরী করতে বেশি কাঠ-খড় পোড়ানোরও প্রয়োজন নেই। রান্নাঘরে  উঁকি মেরে দেখুন, দেখবেন সমাধান মিলছে এবং একটা নয়, একগাদা!

♦  হলুদেরও ব্লিচিং প্রপার্টি হাইপারপিগমেন্টেশন থেকে শুরু করে ত্বকের যে কোনো দাগছোপ হালকা করতে অব্যর্থ। পাশাপাশি ত্বককে বিভিন্ন জীবাণুর হাত থেকেও রক্ষা করে। এক চা-চামচ হলুদগুঁড়ো এবং লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে দাগের ওপর লাগান। ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। মিশ্রণটি ব্যবহারের পর অন্তত এক ঘণ্টা রোদে বেরোবেন না।

♦  দাগছোপ দূর করতে আলুও কিন্তু ভীষণ কার্যকরী। এর ক্যাটেকোলেজ নামক উৎসেচক ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। আলুর খোসা ছাড়িয়ে স্লাইস করে নিন। স্লাইসের ওপর কয়েক ফোঁটা পানি দিয়ে তা ত্বকে সার্কুলার মোশনে ঘষুন। ৫-১০ ঘষার পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ভালো ফল পেতে প্রতিদিন দু’বেলা করে একমাস ট্রাই করুন।

♦  ত্বকের জেদি দাগছোপের সমস্যা চন্দন অব্যর্থ। এটি কমপ্লেকশন উজ্জ্বল করতেও সাহায্য করে। ২ টেবিল চামচ চন্দনগুঁড়ো খানিকটা গোলাপজলের সঙ্গে মিশিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন। কমপক্ষে আধঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন।

♦  ত্বকে নতুন কোষ তৈরিতে ‘ভিটামিন ই’ কার্যকর। গবেষণা বলছে, যত তাড়াতাড়ি ত্বকের সেল রিনিউয়াল হবে, ততই দ্রুত হ্রাস পাবে দাগছোপ। আধকাপ মুলতানি মাটি, এক টেবিল চামচ পেঁপে এবং দু’টো ‘ভিটামিন ই’ ক্যাপসুল একসঙ্গে মিশিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন। এটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এছাড়া ‘ভিটামিন ই’ অয়েলও সরাসরি মুখে লাগাতে পারেন।

 

শোভন সাহা

কসমোলজিস্ট, শোভন মেকওভার

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর