শুক্রবার, ৪ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

টিপটপ সারা দিন

শীতকালকে উপভোগ্য করে তুলতে প্রয়োজন ফিট থাকা। বসন-ভূষণের সঙ্গে প্রয়োজন আলাদা যত্ন আত্তি। তাই রপ্ত করতে হয় আলাদা কৌশল।

উম্মে হানি

টিপটপ সারা দিন

♦ মডেল : সোনিয়া খান ♦ ছবি : আতিক

শীত মানেই ফিটফাট সারা দিন। বসন-ভূষণে পুরোদস্তুর ফ্যাশনেবল। সাজগোজ ও লাইফস্টাইলে এই ঋতুটি অন্যসব সময়ের চেয়ে আলাদা। কিন্তু শীতের সময় পানিতেই যত ভয়। ধরলেই যেন গা শিউরে ওঠে। ঠাণ্ডা! তাই বলে তো পরিচ্ছন্নতা থেমে যাবে না। শীতকাল একদিকে যেমন উপভোগ্য, তেমনি এই ঋতুতে যত্নের বেলায়ও সচেতন থাকা উচিত। আমাদের মাথার ত্বক, চুল, হাত-পায়ের ত্বক শরীরের সংবেদনশীল অঙ্গ। নিজেদের প্রতি আমাদের অবহেলার দরুন এগুলোর দিকেও খেয়াল করা হয় না, যা একদম ঠিক নয়। শীতকাল এমনিতেই উৎসবের সময়। একের পর এক পার্টি, বিয়ে, বনভোজন আরও কত উৎসব! তাই শীতের সাজগোজে নানা ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করা হয়। ফলে প্রয়োজন হয় যত্নের।

 

শীতের আবহাওয়ায় মুখত্বকে দেখা দেয় অস্বস্তিকর সমস্যা। ত্বকের উপরিভাগে খড়খড়ে ভাব চলে আসে। অনেকের ত্বকে দেখা দেয় ছোপ ছোপ কালো দাগ। সাদা সাদা ফুঁসকুড়িও দেখা যায় এ সময়। তাই নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার রাখতে হয়। শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে বাইরের ধুলাবালি আর পলিউশন থেকে বাঁচতে যতবার পারা যায়, পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। প্রয়োজনে ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। ফেস টোনিং করাতে চাইলে গোলাপজল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে পারেন। আর আলোচিত রূপ রুটিন কেবল স্বাভাবিক ত্বকের অধিকারীদের জন্য বিবেচ্য। কিন্তু যাদের ত্বক সংবেদনশীল তারা নিজেকে ফ্রেশ রাখবেন কীভাবে? তাদের জন্য একই রূপ রুটিনের সঙ্গে বাড়তি কিছু যত্ন নিতে হবে। সপ্তাহে অন্তত দুদিন বেসন বা মসুর ডাল বাটা দিয়ে স্ক্রাবার তৈরি করে মুখে লাগিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। বাজারে নানা ধরনের ফেসওয়াশ কিনতে পাওয়া যায়। এ ছাড়া শীতকালে প্রচুর সবজি পাওয়া যায়। যখন যেটা হাতের কাছে থাকে, তা খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খানিকটা ত্বকে দিলে ত্বক আলাদা যত্ন পাবে। কিন্তু ত্বক পরিস্কারের পর অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ক্রিম কিংবা লোশন লাগাতে ভুলবেন না। শীতের শুষ্কতা থেকে রক্ষা পেতে ত্বক অবশ্যই ময়েশ্চারাইজ রাখতেই হবে। ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ক্রিম, লোশন বা গ্লিসারিন ব্যবহার করতে পারেন। তবে চাইলে অ্যাসেনশিয়াল অয়েল দিয়েও পরিচর্যা করতে পারেন ত্বকের। এ সময় মুখে শুকনো মেকআপ সামগ্রীর পরিবর্তে লিক্যুইড জাতীয় প্রসাধনী ব্যবহার করা ভালো।

 

শীতকালে শুধু ত্বক নয়, হাত-পাও শুষ্ক, টানটান হতে থাকে। হাত ও পায়ের পাতা অতিরিক্ত শুষ্ক হওয়ার কারণে ফাটতে শুরু করে। এ সময় হাত ও পায়ের ত্বকের যত্নে ম্যানিকিউর এবং পেডিকিউর সুরক্ষার কাজ করে। একটি বড় বাটিতে কুসুম গরম পানিতে হালকা শ্যাম্পু গুলে হাত-পা ভিজিয়ে রাখতে হবে। তাও খুব বেশি সময় নয়, মাত্র ১০  থেকে ১৫ মিনিট। এরপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে হাত পরিষ্কার করে ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিতে হবে। প্রতিদিন ঘুমানোর সময় দুই ভাগ গ্লিসারিনের সঙ্গে এক ভাগ গোলাপজল মিশিয়ে ত্বকে ভালোভাবে লাগিয়ে ঘুমাতে হবে। পেট্রোলিয়াম জেলি বা গ্লিসারিন লাগিয়ে ঘুমাতে যাওয়া ভালো। সম্ভব হলে পায়ে মোজা পরে নিতে পারেন।

 

প্রতিদিন গোসল না করার ফলে চুলও হয়ে পড়ে অনুজ্জ্বল ও ময়লা। তাই নিতান্তই অসুবিধা না হলে প্রতিদিন চুল পরিষ্কার করা একান্ত জরুরি। চুলে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন তেল লাগাতে হবে। তেল মূলত চুলের গোড়ার ময়লা নরম করে তুলে নিয়ে আসে। শুধু তাই নয়, শুষ্ক আবহাওয়ায় ত্বকের রক্ত চলাচল তেল লাগানোর ফলে স্বাভাবিক থাকে। তেল লাগানোর আধা ঘণ্টা বা এক ঘণ্টা পর আগে চুল একবার ঠাণ্ডা পানিতে ধুয়ে নিয়ে শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার লাগাতে হবে।

 

এ সময় বাজার ভরে যায় মজাদার সব নতুন সবজিতে। ফুলকপি, বাঁধাকপি, গাজর, শিম, মটরশুঁটি, লাউ, টমেটো, মুলা, ধনেপাতা, পালংশাক, আরও কত-কী! ভাতের সঙ্গে মজাদার ব্যঞ্জনের বিভিন্ন উপকরণে বাজার সয়লাব হয়ে ওঠে। শীত উপভোগ করতে বেশি বেশি শাক-সবজি খান। তৃপ্তি মিটিয়ে নিন শীতের সবজিতে। এবং বেশি পরিমাণে পানি পান করতে ভুলবেন না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর