শুক্রবার, ১১ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

আজ তোমার গায়ে হলুদ

ফেরদৌস আরা

আজ তোমার গায়ে হলুদ

♦ মডেল : ইমন ও সুষমী ♦ পোশাক : কে-ক্রাফট ♦ মেকওভার : শোভন মেকওভার ♦ ছবি : রিয়াজ আহমেদ

গায়ে হলুদের রীতি সুদীর্ঘ অতীত থেকে চলে আসছে। তবে গায়ে হলুদ উৎসবটা এখন রং ও ছন্দের খেলা। তাই তো এই দিনে সাজ-পোশাকে অনন্য হয়ে ওঠার আকাক্সক্ষা থাকে সব বর-কনেরই...

 

বিয়ে মানেই মহাযজ্ঞ। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার প্রথম ধাপ হলো গায়ে হলুদ। আর এ অনুষ্ঠানই সবচেয়ে বেশি জাঁকজমকপূর্ণ হয়ে থাকে। তাই কনের সাজ-পোশাক সবকিছুতেই চাই পরিপূর্ণতা। কুটুমবাড়িতে বিয়ের তত্ত্ব পাঠানো থেকে শুরু করে হলুদের স্টেজে বর-কনেকে আশীর্বাদস্বরূপ হলুদের ছোঁয়া দেওয়া সবই কেবল হলুদ সন্ধ্যার আয়োজনকে কেন্দ্র করে। আর বাঙালির এই গায়ে হলুদের রীতি চলে আসছে বহুকাল আগে থেকে। সব ঠিক থাকলেও আয়োজনের ভোল পাল্টেছে। এখন গায়ে হলুদ মানে রং এবং নানা ছন্দের খেলা। তাই তো এই দিনে সাজ-পোশাকে বর-কনের সঙ্গে পরিবার, প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সবাই মেতে ওঠেন হলুদ সন্ধ্যার উৎসবের আনন্দে।

 

হলুদ সন্ধ্যায় কনের সাজ

‘গায়ে হলুদ’ নামটির সঙ্গে মিল রেখে আবহমানকাল থেকে কনেরা হলুদ রঙের শাড়ি ব্যবহার করে আসছে গায়ে হলুদে। এক সময় গায়ে হলুদের জন্য নির্ধারিত ছিল কেবল হলুদ শাড়িই। বর্তমান সময়ে এরকম ধারণার একটু পরিবর্তন হচ্ছে। এখন কেবল হলুদ নয়, বরং একরঙা লাল, কাঁচা মেহেদির রং, সবুজও চলতে পারে। আর শাড়ি সব সময় হলুদ হতে হবে এমন কোনো নিয়ম নেই। আপনি চাইলে ভিন্ন রঙে নিজেকে রাঙিয়ে নিতে পারেন। কনের পোশাক অবশ্যই তাদের গায়ের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে কিনতে হবে। গায়ে হলুদের বিশেষ নিয়মের কথা মাথায় রেখেই ফ্যাশন হাউসগুলো গায়ে হলুদের পোশাকের কালেকশনে হলুদ, মেরুন, গ্রিন প্রভৃতি রঙের কম্বিনেশনে ব্লক ও প্রিন্টের শাড়ি তৈরি করছে। ফেব্রিক হিসেবে রাখছেন মসলিন, সিল্ক, কটন, জামদানি। শাড়িতে খুব জমকালো কাজ না থাকলেই ভালো। এ অনুষ্ঠানে বরপক্ষের ও কনেপক্ষের আত্মীয়রাও একই ধরনের বা আলাদা রঙের শাড়ি পরলেই ভালো। আলাদা রঙের উভয় পক্ষকে সহজেই আলাদা করা যায় এবং দেখতেও ভালো লাগে।

 

এবার আসি গয়নায়। গায়ে হলুদের গয়না মানেই ফুলের গয়নার সাজ। গায়ে হলুদে কনের সাজে কাঁচা ফুলের গয়নাই বেশি মানানসই। এ ছাড়া শুকনো ফুলের সঙ্গেও পুঁতি-জরির কাজ, স্টোন দিয়ে তৈরি কৃত্রিম ফুলের মালা কিনতে পাওয়া যায়। যা আপনার শাড়ির রঙের সঙ্গে ম্যাচ করে অর্ডার দিয়ে বানিয়েও নিতে পারেন। যেমন গয়নাই পরা হোক না কেন, ফুলের আকার ছোট হলেই ভালো। সাজের একটু ভিন্নতা আনতে চাইলে রুপা বা পুঁতির গয়নাও পরতে পারেন। হাতে থাকতে পারে ফুলের গয়না। বাজুতে ফুল এবং হাতভর্তি কাচের চুড়ি। তবে পায়ে বা হাতে শুধু একটা আঙ্গুলে আংটি পরতে পারেন। পরতে পারেন কোমরের বিছাও।

গায়ে হলুদের মেকআপ হালকা হলে ভালো। গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে একটা ঘরোয়া ভাব সব সময় বজায় থাকে। বেস মেকআপ হালকা হলে ভালো দেখায়, চোখ দুটিকে সুন্দর করে ফুটিয়ে তুললেই হলো। সঙ্গে ঠোঁটে ন্যাচারাল লিপস্টিক। লিপস্টিক গাঢ় হোক তবে গ্লসি নয়। চুলে করতে পারেন খোঁপা, খোঁপায় পরতে পারেন ফুল। এ ছাড়া  খোঁপার পরিবর্তে লম্বা বিনুনি করে ফুলের মালা জড়িয়ে দিতে পারেন বেণিতে বা অন্য কোনোভাবে বেণিকে ডেকোরেট করতে পারেন।

 

হলুদ সন্ধ্যায় বরের সাজ

গায়ে হলুদে বরদের পাঞ্জাবি সাধারণত সুতি, সিল্ক অথবা হাফ সিল্কের হয়ে থাকে। হলুদ, সোনালি, লাল কিংবা সাদা পাঞ্জাবিতে দারুণ দেখায় বরদের। বিভিন্ন দোকানে পাওয়া যাবে বরদের পোশাক। পাঞ্জাবিতে যে কোনো একটা রঙের প্রাধান্য থাকা চাই। যে কোনো রঙের পাঞ্জাবির সঙ্গেই সাদা রঙের চুড়িদার পরা ভালো। এখন অনেকে জিন্সও পরছেন।  চাইলে রং-বেরঙের কটি জড়িয়ে নিতে পারেন। তবে পোশাকের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কটি নির্বাচন করতে পারলে ভালো। পায়ে থাকতে পারে চামড়ার চটি। অনেকে একসঙ্গে হলুদ করেন। তখন একটু নকশাকাটা ভারী পাঞ্জাবি পরতেই পারেন। অনেকেই শেরওয়ানি ছাঁটের পাঞ্জাবি পরেন। সবই ভালো দেখাবে। আয়োজনটাই যে স্পেশাল। আর সেখানে গিয়ে কিনে নিতে পারবেন পছন্দ মতো পোশাক। পাঞ্জাবির সঙ্গে মিল রেখে বরও পরতে পারেন হাতে বানানো পাগড়ি এবং ওড়না। তবে বরের পোশাকও তার গায়ের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে কিনতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর