শুক্রবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

রিসিপশন পার্টি

রিসিপশন পার্টি

হবিয়ের রিসিপশনের বর্ণাঢ্য আয়োজন চমকে দিতে পারে সবাইকে। সত্যিকারের রিসিপশনের এ ছবিগুলো তুলেছে- ড্রিমি ওয়েডিং

বিয়ে মানেই মধুময় অধ্যায়ের সূচনালগ্ন। আর এ বিয়ে অনুষ্ঠানের কয়েক পর্বের মধ্যে বিদায়ী পর্ব রিসিপশন বা বৌভাত আয়োজন। শেষ পর্বে এ আয়োজনের সাজে কেউ চায় আধুনিকতা, কেউ আবার চায় ঐতিহ্যের সাজের ছোঁয়া। আধুনিকতা আর ঐতিহ্যের মাঝেও প্রতি বছর চলে নানান নিরীক্ষা। আজ রইল বর-কনের রিসিপশনের চিরচেনা সাজ-পোশাকের গল্প।

 

রিসিপশন বা বৌভাতে কনের সাজ

বৌভাত বা রিসিপশনের সাজেও চাই আভিজাত্যের ছোঁয়া। বিয়ের পর্বটা শেষ হলেই চলে আসে রিসিপশন বা বৌভাত। আর এ অনুষ্ঠানের কথা বললে প্রথমেই আসে বিয়ের ও বৌভাতের শাড়ির ব্যাপার। তবে সঙ্গে অবশ্যই গয়না বাছাইয়েও থাকা চাই পরিপাটি ভাব। বিয়ের শেষ অনুষ্ঠান বলে কথা, কোনোরকম ঘাটতি থাকা যাবে না। বৌভাতে শাড়ির সাজে এমন স্নিগ্ধতা থাকা চাই, যেন নবপরিণীতা বধূর চেহারায় ফুটে ওঠে প্রসন্ন ও মনোমুগ্ধকর আবেদন। বিয়েতে সাধারণত ট্র্যাডিশনাল শাড়ি পরলেও রিসিপশন বা বৌভাতে ট্রেন্ডি ধাঁচের শাড়িই বৈচিত্র্য আনে। বৌভাতে বেছে নিন ফ্যাশনেবল, ট্রেন্ডি হালকা কাজ ও রঙের শাড়ি। রং হতে পারে সোনালি, পিয়াজি, সফট পিঙ্ক, পিচ এমনকি সাদাও। অনেকেই সাদা পরছেন বৌভাতে, এমনকি বিয়েতেও। বৌভাতে ভালো লাগবে সিফন, মসলিন আর হালকা কাজের জামদানি। সঙ্গে বেছে নিন বিপরীত রঙের ওড়না। সাদার শুভ্রতা আপনাকে অনন্য করে তুলবে।

 

আজকাল রিসিপশনে মসলিন, নেটের ওপর লেইসের নকশা, জামদানি শাড়ি বেছে নিচ্ছেন কনেরা। রিসিপশন বা বৌভাতে অফহোয়াইট কিংবা হালকা রঙের শাড়ি মানিয়ে যাবে সব রঙের ত্বকের সঙ্গেই। লাল রংটা উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ কিংবা ফর্সা ত্বকে ভালো লাগবে। উজ্জ্বল বাহারি রং আর কারুকাজের শাড়ির সমারোহ বিয়েতে অন্য রকম মাধুর্য নিয়ে আসে। রিসিপশন বা বৌভাতেও ঠিক তেমনটাই। তবে কনে একটু ভারি গড়নের হলে বেনারসি কিংবা কাতান না পরে জামদানি, জর্জেট, সিল্ক শাড়ি পরিধান করা ভালো। আর একটু হালকা গড়নের হলে সহজেই মানিয়ে যাবে বেনারসি, কাতান, মসলিনসহ সব ধরনের শাড়ি। বিয়ের দিন শাড়ি পরলে রিসিপশনের পোশাকে ভিন্নতা আনতে অনেকেই এখন গাউন, সারারা, লেহেঙ্গা, ঘাগড়ার মতো ট্রেন্ডি কিংবা ফিউশন পোশাক পরছেন রিসিপশনে। ইদানীং খুব একটা গাঢ় রঙের শাড়ি বৌভাতে পরা হয় না। বিয়েতে লাল, মেরুন, ম্যাজেন্টার মতো গাঢ় রং পরলে রিসিপশনের ভালো লাগবে চাপা সাদা, বাদামি, সোনালি, সফট পিংক, কলাপাতা, হালকা বেগুনির মতো রং। হালকা রঙের শাড়ির সঙ্গে মডার্ন এবং ফিউশন ব্লাউজ বেশ মানায়। ব্লাউজের হাতায় ফ্রিলের ব্যবহার ফিউশন লুক আনবে। এখন ব্লাউজে কোমর পর্যন্ত নামানো ঝুল চলছে। বিয়ের দিন ট্রেডিশনাল ধাঁচের সাজলে রিসিপশনে বোট নেক কিংবা জেট নেক প্যাটার্নের ব্লাউজের ট্রেন্ডি লুক আনবে।

 

কনের সাজ ও গয়না

বিয়েতে যেমন একসঙ্গে অনেক বেশি গয়না পরলেই জমকালো লাগে, এদিনে লুক হয় ঠিক তার উল্টো। হালকা রঙের রিসিপশনের পোশাকের সঙ্গে সাজে ফুটিয়ে তুলতে পারেন উজ্জ্বলতা কিংবা ন্যাচারাল লুক। তবে সাজ যেমনই হোক সাজে  যেন থাকে স্নিগ্ধতা। ফোলানো কিংবা চেপে রাখা হেয়ার স্টাইল রিসিপশনের সাজে ভালো লাগবে। আবার কম ফোলানো চুলের সাজে আভিজাত্য খেলা করে। এছাড়া লুজ খোঁপা, লুজ বেণিও  বৌভাতের ন্যাচারাল সাজের সঙ্গে খুব মানিয়ে যায়। শুধু সোনার গয়না নয়, রিসিপশনে ভালো লাগবে হীরা, মুক্তা, স্টোন, ব্রোঞ্জ বা কপার, এন্টিকের গয়নাও। এ ধরনের ট্রেন্ডি গয়না চাপা সাদা কিংবা হালকা রঙের বৌভাতের শাড়ির সঙ্গেও দারুণ মানানসই। রিসিপশনের সাজে ভিন্নতা আনবে রুপার গয়নাও। পাশ্চাত্যের পোশাকের সঙ্গে কাটা কাজের গয়না বেশ নজর কাড়বে। পুঁতি বা মুক্তার হালকা নকশার চার-পাঁচ লহরের মালা, গলাজুড়ে ভরটা নকশার চোকার পরতে পারেন রিসিপশনে। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে উজ্জ্বল কাপড়ের লেস বা পাথর বসানো বটুয়া বা ক্লাচ ব্যাগ রাখুন।

রিসিপশন বা বৌভাতে বরের সাজ

রিসিপশন বা বৌভাত বিয়ের একেবারে শেষ পর্ব। এ দিনটি বরের সাজে চাই মনোমুগ্ধতার ছোঁয়া। তবেই বরকে অন্যরকম দেখাবে। সাধারণত বিয়ের অনুষ্ঠানে শেরওয়ানি পরলেও রিসিপশন বা  বৌভাতে বর স্যুট-টাই বা ফরমাল গেটআপেই বেশি মানায়। ফরমাল গেটআপ হিসেবে বর এদিন ওয়েস্টার্ন স্টাইলের স্যুট, সঙ্গে শার্ট ও ম্যাচিং প্যান্ট এবং চকচকে স্যু পরে থাকেন। আজকাল বরের ভিন্ন রকম লুক নিয়ে আসতে অনেকেই প্রিন্স কোটকে বেছে নেন। সোনালি, কালো বা হালকা কোনো রঙের হতে পারে পোশাক। রুচি অনুযায়ী স্যুট বা বেজারকেও বেছে নিতে পারেন। আধুনিক ফ্যাশনের সঙ্গে মিলিয়ে বেছে নিতে পারেন  বৌভাতের স্যুটের কালার ও ডিজাইন। স্যুটে গাঢ় রং নিয়ে এলে দেখাবে সবার চেয়ে আলাদা। যেমন চকোলেট, মেরুন, গাঢ় নীল। বর্তমানে এক কালার ও ওয়ান বাটন কোট বেশ ভালো চলছে। তবে পোশাক যেন খুব বেশি ভারী না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। স্যুটের সঙ্গে শার্ট ও টাই নির্বাচন করুন সচেতনভাবে। অনুষঙ্গ হিসেবে গলায় সোনার চেইন, হাতে আংটি ও ঘড়ি থাকতে পারে। পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে জুতা পরলে যেমন ভালো দেখাবে, তেমনি ভালো দেখাবে হাতঘড়ি পরলেও। স্যুট বা কোটের সঙ্গে চকচকে স্যু ফরমাল লুক নিয়ে আসবে আপনার পুরো সাজসজ্জায়। চুলের স্টাইলের ক্ষেত্রে মুখের গড়নের সঙ্গে মানানসই স্টাইল বেছে নিন। স্পাইক করতে পারেন সামনের চুলগুলো অথবা ব্যাক ব্রাশ করে নিতে পারেন। চুলে জেল ব্যবহার করে পছন্দ মতো যে কোনো সেটিংও করে নেওয়া যায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর