শুক্রবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

ভালোবাসার ভ্যালেন্টাইন

ভালোবাসার ভ্যালেন্টাইন

♦ মডেল : অপু বিশ্বাস ও আজিমুদ্দৌলা ♦ পোশাক : জেন্টাল পার্ক ও ইয়াং কে (কে ক্র্যাফট) ♦ মেকওভার : পারসোনা ♦ ছবি : রাফিয়া আহমেদ

প্রতি বছর ১৪ ফেব্রুয়ারিতে ভ্যালেন্টাইনস ডে উপলক্ষে বিশ্বব্যাপী বইতে থাকে উৎসব জ্বর। ভালোবাসার জোয়ারে ভাসে সবাই। তাৎপর্যময় এই দিনের ইতিহাস সাক্ষী দেয় প্রেমিক-প্রেমিকার অনন্য ভালোবাসাকে। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের মূল নায়ক-নায়িকাকে সর্বোচ্চ স্বীকৃতি দিতে ভোলে না এ যুগের প্রেমিকযুগল। ভালোবাসার ভ্যালেন্টাইন নিয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন তানিয়া তুষ্টি

 

ভালোবাসা, সম্পর্কটি মোড়া একটি আবেগধর্মী শর্তে। এ সম্পর্কের গভীরতাও যেন অতলস্পর্শী। হাজারও মানুষের ভিড়ে বিশেষ একজনের সঙ্গে নিজের সমস্ত আবেগ, অনুভূতি, দুঃখ-কষ্ট ভাগ করে নেওয়ার এ এক অপার আনন্দ।

কিছুকাল আগ পর্যন্ত যখন যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজলভ্য ছিল না তখনো প্রেম ছিল দুরন্ত। কোনো বাধা সে প্রেমকে দমাতে পারেনি। চিঠি, চিরকুটে যোগাযোগ আর কালেভদ্রে দুয়েকবার দেখা হওয়া ছিল পরম আরাধ্য। সে ভালোবাসার জন্য হয়েছে অনেক ত্যাগ। ঘটেছে স্মরণীয় অনেক ঘটনা। প্রেমপাগল যুগল ভবিষ্যৎ ভাবনা না ভেবেই করেছে অনেক কিছু। আজ যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় ভালোবাসার ধরন বদলেছে কিছুটা। তার পরও ভালোবাসার আবেদন কমেনি এতটুকু। একজন আরেকজনের জন্য এখনো নিয়ে চলেছে অসংখ্য চ্যালেঞ্জ। তাদের এই প্রচেষ্টায় হয়তো বাঁচিয়ে রেখেছে ভালোবাসার বিমূর্ত প্রতীককে। যুগে যুগে ভালোবাসা দিবস সবার মননে হয়েছে অনন্য। বছর ঘুরে একবার আসা বিশেষ এই দিনে সবাই তাদের কাছের মানুষটিকে কাছে পেতে চায়। তাকে খুশি করার জন্য থাকে নানা ধরনের পরিকল্পনা ও আয়োজন। আপনিও নিশ্চয় এর ব্যতিক্রম নন। এরই মধ্যে পরিকল্পনা নিয়েছেন ভালোবাসা দিবসে পছন্দের মানুষটির জন্য আপনি কী করবেন। প্রথমত তাকে খুশি করতে এমন কোনো আচরণ যা তাকে আবেগাপ্লুত করে, দৃঢ়তা পায়। কিছু উপহার দেওয়া তাকে খুশি করতে আর সর্বোপরি তার সামনে সুন্দরভাবে উপস্থিত হওয়া।

 

কারও কাছে এসব আয়োজন কিছুটা বাড়াবাড়ি। অথচ বিশেষ দিনে বিশেষ মানুষটির জন্য কিছু করার আবেদন বিফলে যায় না। একটু হলেও দোলায়িত করে হৃদয়ের কোনায় জমে থাকা তরল ভালোবাসাকে। আপনিও চাইলে ভালোবাসার এই দিনে এক অনন্যভাবে চমকে দিতে পারেন আপনার ভালোবাসার মানুষটিকে। দেখবেন প্রিয় মানুষটি একে দারুণ উপভোগ করবে। তাকে আনন্দিত করে আপনিও কম তৃপ্ত হবেন না।

 

বছরজুড়ে থাকে নানা কাজের চাপ। বিশেষ এই দিনে ব্যস্ততা থেকে ছুটি নিয়ে প্রিয়জনকে সময় দিতে পারেন। আর সাধ্যের মধ্যে রাখতে পারেন পরিপূর্ণ একটি আয়োজন।  বিশেষ এই দিনে প্রিয় মানুষটির সান্নিধ্যে যেতে প্রথমেই যে বিষয়টি আসে তা হলো পোশাক নির্বাচন। তার সামনে কীভাবে উপস্থিত হবেন? দিনের বিশিষ্টতায় কী রঙের পোশাক মানানসই। এসব নিয়ে হয়তো ভেবেছেন কিংবা কিছুই ভাবেননি। প্রেমে আস্থা থাকায় ভাবছেন তার সামনে আলাদা করে উপস্থিত হওয়ার কী আছে? কিন্তু এই বিশেষ দিনে বিশেষভাবে তৈরি হওয়ার প্রয়োজনীয়তা থেকেই যায়। অনেক যুগল আবার একই রঙের পোশাক কিনে নেন আগেভাগেই। তারপর দুজনের একই পোশাকে উপস্থিতি আলাদা ভাবার্থ সৃষ্টি করবে।

 

ভালোবাসার সঙ্গে গোলাপি রঙের জোর সম্পর্ক থাকায় পোশাকটি বেছে নিতে পারেন এই রঙে। ইদানীং লাল রংকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে সবাই। প্রিয় মানুষটির পছন্দের কোনো রং থাকলে সেটিকেও প্রাধান্য দিতে পারেন। এই দিনে মেয়েরা পরতে পারেন শাড়ি, সালোয়ার কামিজ অথবা ট্রেন্ডি কোনো পোশাক। ছেলেদের জন্য শার্ট, পাঞ্জাবি বেশ মানানসই। তবে সবটাই বেছে নিতে হবে নিজের গড়ন ও অভ্যাসের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে। ঝলমলে রোদ, হালকা শীত, বসন্ত সর্বোপরি ভালোবাসার ভ্যালেন্টাইনকে ভাবনায় রেখে নিজেকে উপস্থাপন করা শ্রেয়।

 

কাছে আসার গল্প

পছন্দের মানুষটি নিয়ে ঘুরতে যেতে পারেন যেকোনো দিন। কিন্তু বিশেষ দিনে ঘোরাঘুরি তৈরি করবে নতুন ভাবার্থ। অবশ্য কাছের মানুষটি সঙ্গে থাকলে সবই ভালো লাগে। তবুও তার পছন্দের কোনো জায়গায় ঘুরতে গেলে ভালোলাগা আরও বাড়বে। যতক্ষণ আপনি তার সামনে থাকছেন মনোযোগটি থাকুক তার প্রতিই। একজনের সঙ্গে অপরের আত্মিক টান সৃষ্টির মোক্ষম সুযোগ হতে পারে। বিশেষ অথবা ঐতিহ্যবাহী কোনো যানবাহনে ঘোরা হতে পারে আপনাদের জন্য স্মৃতিময়।

 

ভালোবাসা অনিঃশেষ

এই অমোঘ সত্যকে ধারণ করে বিশেষ দিনে ভালোবাসাকেও করতে পারেন সংজ্ঞায়িত। এ দিনে দুজনে মিলে শপথ নিতে পারেন নতুনভাবে পথচলার। একে অন্যকে সম্মানের স্থানে রেখে ভালোবাসা আরও মজবুত করার। এতে আগামী দিনগুলো হবে ভালোবাসায় পরিপূর্ণ। অনেক কথা মুখে বলা হয়ে ওঠে না। আজকের এই বিশেষ দিনে মনের মাধুরী মিশিয়ে লিখে ফেলুন চিঠি। সেকেলে রীতিতে ভালোবাসার এই প্রকাশ কিছুটা হাসির খোরাকও জোগাতে পারে দুজনের। কিন্তু এটাই হতে পারে প্রিয় মানুষটির জন্য চমক। অল্প কথায় সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা চিঠিটি দিতে পারেন সুন্দর একটি খামে। নিজ হাতে তৈরি করলে তার গ্রহণযোগ্যতা আরও বেড়ে যাবে। অনেকে হয়তো ভালোবাসা দিবসে প্রিয় মানুষকে প্রথম না বলা কথা বলবে। তাদের উত্তেজনা অন্যদের চেয়ে একটু বেশিই। সেজন্য রোমান্টিক রাতের খাবারের পরিকল্পনা দারুণ কাজে দেবে। এ ছাড়াও প্রেমিক যুগল বা নবদম্পতিদের জন্যও ক্যান্ডেল লাইট ডিনারের উপযোগিতা কিন্তু কম নয়। তবে একেবারেই যদি এত আনুষ্ঠানিকতা না করতে চান মনোরম পরিবেশ বেষ্টিত কোনো রেস্টুরেন্টে বসতে পারেন মনের মানুষটির সঙ্গে।

 

প্রিয় মানুষটিকে চমকে দিতে বিশেষ কোনো স্থানে করতে পারেন আনন্দ আয়োজন। সে জায়গাটি সাজাতে পারেন ভালোবাসাময় স্বর্গরাজ্যে। পাশ থেকে ভেসে আসতে পারে সুমধুর গান। আর মজার সব খাবার তো থাকতেই পারে। কিছু না জানিয়ে আপনার এই আয়োজন তাকে অভিভূত করবেই। ভৌগোলিক দূরত্ব মনের টানের কাছে কিছুই না। এমন দিনে যারা নিতান্তই দূরে অবস্থান করবেন তাদের জন্য ভরসা হতে পারে ফোন আর ফেসবুক। নিয়মিত আপডেট দেওয়া, কথা বলা, কিছু সময় পর পর ছোট বার্তা পাঠানো একে অন্যের উপস্থিতি জানান দেবে। ভালোবাসা দিবসের এই আনন্দকে বহাল রাখতে মাঝে মাঝেই হতে পারে এমন কিছু সারপ্রাইজিং ট্যুর। এভাবেই রচিত হবে আপনাদের কাছে আসার গল্প।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর