১৯ জুলাই, ২০১৬ ১৬:২৯

যেসব কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কিডনি

যেসব কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কিডনি

কিডনি মানবদেহের অত্যন্ত আবশ্যক অঙ্গ। শিমের বিচির আকৃতির দুইটি কিডনি মেরুদন্ডের প্রত্যেক পার্শ্বে বক্ষ পিঞ্জরের ঠিক নিচে অবস্থিত। প্রত্যেক দিন কিডনি ১২০-১৫০ লিটার প্রস্রাব, বর্জ্য এবং অতিরিক্ত তরল ফিল্টার করে যার ফলে মানবদেহে বর্জ্য জমে না। কিডনি ইলেক্ট্রোলাইট স্তরকে স্থিতিশীল রাখে এবং হরমোন উৎপাদন করে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, লোহিত রক্তকণিকা তৈরী করে এবং হাড়কে শক্ত রাখে। 

শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ যথাযথভাবে কাজ করার জন্য সুস্থ কিডনি অত্যাবশ্যক। আমাদের অজান্তে অনেক সময় কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই কিডনির সুস্থতার জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরী। নিচে কয়েকটি কারণ উল্লেখ করা হলো যেগুলো আমাদের কিডনির উপর প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করে এবং ধীরে ধীরে আমাদের কিডনির মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে। 
 

পর্যাপ্ত পানি পান না করা: কিডনির অন্যতম প্রধান কাজ হলো রক্ত ফিল্টার করা এবং বিষাক্ত পদার্থ এবং বর্জ্য থেকে মুক্ত আমাদের দেহকে মুক্ত করা কারণ এগুলো দেহের ক্ষতি করে। পর্যাপ্ত পানি পান না করলে এসব বিষাক্ত পদার্থ এবং বর্জ্য দেহে জমতে থাকে যা অবশেষে কিডনির মারাত্মক ক্ষতি করে। 

অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ: যথাযথভাবে কাজ করার জন্য দেহের সোডিয়াম দরকার। কিন্তু অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ কিডনির ক্ষতি করে। অনেকে প্রচুর লবণ খান যা রক্তচাপ বাড়ায় এবং কিডনির উপর চাপ সৃষ্টি করে। 

অতিরিক্ত চিনি গ্রহণ: গবেষণায় দেখা গেছে দিনে দুই বা ততোধিক চিনিযুক্ত পানীয় গ্রহণ করলে প্রস্রাবে চিনির পরিমাণ বেড়ে যায়। প্রস্রাবে প্রোটিনের উপস্থিতি এই লক্ষণ প্রকাশ করে যে কিডনি ঠিকমতো কাজ করছে না। 

প্রস্রাব আটকে রাখা: অনেকেই আমরা নানা কারণে প্রস্রাব আটকে রাখি। নিয়মিত এরকম করলে চাপ বাড়ে যার ফলে কিডনি বিকল হয়ে যেতে পারে এবং কিডনিতে পাথর হতে পারে। প্রস্রাবের বেগ হলে সাথে সাথে প্রস্রাব করা উচিত।

ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থের ঘাটতি: কিডনি সঠিকভাবে কাজ করাসহ সার্বিক সুস্বাস্থ্যের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত জরুরী।  ভিটামিন বি-৬ এবং ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটিতির কারণে কিডনিতে পাথর হতে পারে অথবা কিডনি বিকল হয়ে যেতে পারে।

অতিরিক্ত কফি পান: ক্যাফেইন রক্তচাপ বাড়াতে পারে এবং কিডনির উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে লবণের মতো। দীর্ঘদিন অতিরিক্ত কফি পানে কিডনির ক্ষতি হতে পারে।  

অতিরিক্ত প্রাণীজ প্রোটিন গ্রহণ: অতিরিক্ত প্রাণীজ প্রোটিন (বিশেষ করে লাল মাংস) কিডনির উপর বিপাকীয় চাপ বাড়ায়। যত বেশী প্রাণীজ প্রোটিন গ্রহণ করা হবে কিডনির কাজ করা তত কঠিন হবে যার ফলে কিডনির ক্ষতি সাধিত হয়।

পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব: দীর্ঘদিন পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে কিডনি রোগসহ দেহে অনেক সমস্যা দেখা দেয়। ঘুমের সময় দেহ ক্ষতিগ্রস্ত কিডনি কোষ মেরামত করে। তাই ঘুমের অভাবে এ কাজ ব্যাহত হয়। 

ব্যাথানাশক ঔষধ অতিরিক্ত গ্রহণ: ব্যাথানাশক ঔষধের ক্ষতিকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। অতিরিক্ত ব্যাথানাশক ঔষধ গ্রহণ মারাত্মক কিডনি সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

অতিরিক্ত মদ্যপান: অতিরিক্ত মদ্যপান কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। মদ কিডনির উপর চাপ বাড়ায়। ফলে কিডনি ধীরে ধীরে বিকল হয়ে যায়।


- ইন্টারনেট অবলম্বনে মো. সুজন মিয়া

 

বিডি-প্রতিদিন/ ১৯ জুলাই, ২০১৬/ আফরোজ

সর্বশেষ খবর