৫ ডিসেম্বর, ২০১৭ ১৪:৪৭

স্ট্রোকের পর পড়ে যাওয়া রোধে সাবধানতা

শম ফারহান বিন হোসেন

স্ট্রোকের পর পড়ে যাওয়া রোধে সাবধানতা

প্রতীকী ছবি

স্ট্রোকের পরে সহজে এবং নিরাপদে চলাফেরা করার বিষয়টি স্বাভাবিক নয়। জীবনের অনেক ক্ষেত্রে স্ট্রোকের প্রভাব থাকে এবং নিরাপদ জীবনযাপনের জন্যে রুপান্তর কিংবা উপযুক্ত পরিবর্তনের প্রয়োজন পরে। উদাহরণ স্বরূপ ঘরে, টয়লেটে পরে যাওয়া এবং দুর্ঘটনা এড়াতে বাড়ির পরিবেশ স্ট্রোক রোগীর জন্যে উপযোগী করে পরিবর্তন করতে হয়। রোগীর সামর্থ্য, সক্ষমতা, বিচারবিবেচনা এবং সমর্থন এর উপর নির্ভর করে জীবনকে উপযোগী করে তুলতে হয়। নিরাপত্তা ও সাবধানতা অবলম্বন করলে প্রাত্যহিক জীবনের পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রণ ও স্বাধীনতা বজায় রাখা যায়।
স্ট্রোক একজন মানুষকে বিভিন্নভাবে আক্রান্ত করে। স্ট্রোকের ধরণ, ব্রেইনে ইঞ্জুরি লেভেল এবং রোগীর সার্বিক স্বাস্থ্য এর উপর নির্ভর করে রোগীর উন্নতির লক্ষণ। দুর্বলতা, প্যারালাইসিস, ভারসাম্যহীনতা ও সমন্বয়হীনতা, ব্যথা, স্মৃতিজনিত বা চিন্তাগত সমস্যা, ক্লান্তি এসব সমস্যা একজন মানুষের গৃহ জীবনকে পরিবর্তন করে।
স্ট্রোকের পর কিভাবে নিরাপদ থাকতে হবে?
স্ট্রোক রোগী এবং সেবাশুশ্রূষাকারীর জন্যে অকুপেশনাল থেরাপিসট দৈনিক কাজ সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনা, বাড়ির পরিবেশ পরিবর্তন ও উপযোগী করে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করেন। যেমনঃ
নিরাপদ জীবনযাপন
•ব্যয়াম ও কাজের মাধ্যমে মাংশপেশির সঞ্চালন এবং ভারসাম্য ঠিক রাখা
•সমতল এবং আঁটসাঁট জুতা পরিধান
•ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার ও সাপ্লিমেনট গ্রহণ করা যদি হাড়ের শক্তি বর্ধনের প্রয়োজন হয়
•সীমাবদ্ধতা এবং চলাচলের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে থেরাপিসট এর পরামর্শ অনুসরণ করা
•চলাচলের সময় আসবাবপত্রের উপর ভর করে না চলা, থেরাপিসট প্রদানকৃত সহায়ক সামগ্রী ব্যবহার করা।
বাড়ির নিরাপত্তা
•রান্নাঘর, শোবার ঘর, গোসলখানার চলাচলের পথ পরিষ্কার এবং শুকনা রাখা
•পিচ্ছিল মেঝে পরিহার করা, প্রয়োজনে মোজা ব্যবহার করা
•সিঁড়িতে উঠা নামার ক্ষেত্রে হ্যান্ডরেইল বা হাতল ব্যবহার করা
নিরাপদ ও সহায়ক সামগ্রীর ব্যবহার
মাঝেমাঝে পড়ে যাওয়া রোধ এ সহায়ক ও নিরাপদ সামগ্রী ব্যবহারের প্রয়োজন হয়। যেমনঃ
•টয়লেট চেয়ার
•টাব বেঞ্চ
•হুইলচেয়ার
•লম্বা হাতলের ব্রাশ
•লাঠি
•মডিফাইড বা কিছুটা পরিবর্তিত ব্যবহার্য সামগ্রী
•ইলেকট্রিক টুথব্রাশ ও রেজর ইত্যাদি।
ট্রান্সফার বা স্থানান্তর
•স্ট্রেচার বা এ্যাম্বুলেন্সে স্থানান্তরে অবশ্যই দেহের গুরুত্বপূর্ণ অংশ যেমন মাথা, ঘাড়, কোমর এ সাপোর্ট দিতে হবে
•হাত-পা টানাটানি করা যাবেনা, এতে শোলডার সাবলেক্সাশন বা কাঁধের জয়েন্ট দুর্বল হয়ে যায়।
•হুইলচেয়ার থেকে বিছানায়, বিছানা থেকে হুইলচেয়ার, হুইলচেয়ার থেকে চেয়ার যে কোন জায়গায় স্থানান্তর এর সময় অবশ্যই আক্রান্ত পা, কোমর এ সাপোর্ট দিতে হবে। এক্ষেত্রে থেরাপিসটের দেখানো নিয়মে ট্রান্সফার বা স্থানান্তর করা উত্তম।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, সুস্থ হওয়া পর্যন্ত অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। চিকিৎসকগণদের এবং সেবাশুশ্রূষাকারীর পরামর্শ, উপদেশ এবং ধৈর্যের মাধ্যমে আত্মনির্ভরতা ফিরে আসা সম্ভব।

লেখকঃ ক্লিনিক্যাল অকুপেশনাল থেরাপিসট, অকুপেশনাল থেরাপি বিভাগ, সিআরপি-মিরপুর, ঢাকা।

বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর