২৭ মার্চ, ২০২৪ ১৫:৩৩

ডায়াবেটিসজনিত মাংসপেশির অসাড়তা নিউরোপ্যাথি কী?

ড. মো. সফিউল্যাহ প্রধান

ডায়াবেটিসজনিত মাংসপেশির অসাড়তা নিউরোপ্যাথি কী?

ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি হলো একটি স্নায়ুবিক রোগ যা সাধারণত ডায়াবেটিস রোগের জটিলতা হিসেবে দেখা যায়। প্রায় ৫০ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগী এ সমস্যায় ভুগে থাকেন, যা শরীরের বিভিন্ন অংশকে প্রভাবিত করে।

ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি কয়েক ধরনের হতে পারে। যেমন : ১. পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি। ২. অটোনমাস নিউরোপ্যাথি। ৩. ফোকাল নিউরোপ্যাথি। ৪. প্রক্সিমাল নিউরোপ্যাথি।

লক্ষণ : পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি : এটি সাধারণত হাত ও পায়ের স্নায়ুকে প্রভাবিত করে এবং অসাড়তা বা অবশ ভাব, ঝিনঝিন ভাব, ব্যথা এবং দুর্বলতা সৃষ্টি করে।

অটোনমাস নিউরোপ্যাথি : এক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ অঙ্গ নিয়ন্ত্রণকারী স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যেমন : হৃৎপিণ্ড, রক্তনালি, মূত্রাশয় এবং অন্ত্র। লক্ষণগুলোর মধ্যে রক্তচাপ, হৃৎস্পন্দন, হজমে সমস্যা এবং মূত্রাশয়ের কার্যকারিতার পরিবর্তন হতে পারে। এ ছাড়াও মাথাঘোরা  বা অতিরিক্ত ঘাম, যৌন সমস্যা, রুচি কমে যাওয়ার মতো সমস্যাও দেখা যেতে পারে। 

ফোকাল নিউরোপ্যাথি : এটি শরীরের নির্দিষ্ট জায়গায় যেমন : মুখ, হাত বা পায়ের স্নায়ুর একটি গ্রুপকে প্রভাবিত করে। লক্ষণগুলোর মধ্যে আক্রান্ত স্থানে হঠাৎ তীব্র ব্যথা বা দুর্বলতা, বুকে ব্যথা, মুখের এক পাশ অবশ হয়ে যাওয়া, হাতে শক্তি কম অনুভব করা, দৃষ্টির সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

প্রক্সিমাল নিউরোপ্যাথি : প্রক্সিমাল নিউরোপ্যাথিতে পা, নিতম্ব বা ঊরুর স্নায়ুকে প্রভাবিত করে এবং ব্যথা, দুর্বলতা এবং পেশির ভারসাম্য হ্রাস করে। এ ছাড়াও বুকে বা পেটে ব্যথা হতে পারে।


ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথির ঝুঁকির কারণ :

- অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস 

- উচ্চ রক্তচাপ 

- উচ্চ কোলেস্টেরল

- ধূমপান 

- অতিরিক্ত ওজন

- কিডনি ডিজিজ 

প্রতিরোধ :

ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি প্রতিরোধের সবচেয়ে ভালো উপায় হলো জীবনধারা পরিবর্তন। 

রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখা : রক্তে শর্করার মাত্রা যতটা সম্ভব স্বাভাবিকের কাছাকাছি রাখতে পারলে স্নায়ুর ক্ষতি প্রতিরোধ করা সম্ভব। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ডায়াবেটিসের ওষুধ সেবন করতে হবে।

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস : চর্বি এবং কোলেস্টেরল কম এমন খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। 

নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম-

নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ বা হাঁটাহাঁটির অভ্যাস রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। 

ধূমপান ত্যাগ করতে হবে-

ধূমপান ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথির ঝুঁকি বাড়ায়। তাই ধূমপান ছেড়ে দিলে অনেকাংশেই এই ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

চিকিৎসা : রিহেব-ফিজিও চিকিৎসা অত্যন্ত কার্যকরী সে ক্ষেত্রে এভিডেন্স বেইজড চিকিৎসা প্রটোকল প্রয়োগ করতে হবে। এন্ট্রি অক্সিডেন্ট, সাপ্লিমেন্ট, ভিটামিনস চিকিৎসকের পরামর্শে নেওয়া যেতে পারে।


লেখক :  রিহেব-ফিজিও বিশেষজ্ঞ, সহযোগী অধ্যাপক (আইআইএইচএস) ও কনসালটেন্ট (ডিপিআরসি), শ্যামলী, ঢাকা

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর