নবজাতকের মল পরীক্ষায় অন্ত্রের রহস্যভেদ করতে সক্ষম হলেন বিজ্ঞানীরা। মূলত নবজাতকের অন্ত্রে কোন ধরনের ব্যাকটেরিয়া সর্বপ্রথম অবস্থান নেয়, সে ব্যাপারে পরিষ্কার একটি ধারণা পেতে যুক্তরাজ্যের দুই হাজারের বেশি শিশুর মলের নমুনা বিশ্লেষণ করেন বিজ্ঞানীরা।
গবেষকরা বলছেন, তারা অবাক হয়ে দেখেছেন, নবজাতকের মলে তিন ধরনের অসংখ্য পায়োনিয়ার ব্যাকটেরিয়া থাকে। মায়ের দুধ থেকে সর্বাধিক পুষ্টি শরীরের জন্য সংগ্রহে সহায়তা করে বি ব্রেভ ব্যাকটেরিয়া। ভালো ব্যাকটেরিয়া হিসেবে পরিচিত বি ব্রেভ খাদ্য ভাঙাতে, পুষ্টি শোষণ করতে এবং রোগের কারণ হতে পারে—এমন খারাপ জীবের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করতে পারে।
এছাড়া নবজাতকের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াও পাকস্থলীতে পরিলক্ষিত হয়েছে।
মানুষের অন্ত্রে বসবাসকারী লাখ লাখ বিভিন্ন জীবাণুর ইকোসিস্টেম রয়েছে, মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলে এসব—দিনের পর দিন এ ব্যাপারে নতুন প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। তবে নবজাতকের অন্ত্রে ব্যাকটেরিয়ার বসবাস নিয়ে গবেষণার সংখ্যা কম। কারণ জন্ম নেওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই অন্ত্রের ভেতরের পরিবেশ অনেকটাই বদলে যায়।
পরে পরীক্ষায় আগের রূপ পরিলক্ষিত হয় না।
ব্রিটেনের ওয়েলকাম স্যাঞ্জার ইনস্টিটিউট, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন এবং বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এক হাজার ২৮৮ জন সুস্থ নবজাতকের মলের নমুনা বিশ্লেষণ করেছেন। ওই শিশুদের সবাই যুক্তরাজ্যের হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেছিল এবং তাদের বয়স এক মাসের কম।
বেশির ভাগ নমুনা বিশ্লেষণকালে তিনটি ক্যাটাগরির সঙ্গে মিলে গেছে।
তার মধ্যে বি ব্রেভ এবং বি লঙ্গাম ব্যাকটেরিয়াকে উপকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অন্যদিকে এন্টারোকোকাস ফায়েসেলিস ব্যাকটেরিয়াকে ক্ষতিকর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এই ব্যাকটেরিয়ার ফলে শিশুর অন্ত্রে নানা ধরনের অসুবিধার সৃষ্টি হয়। নমুনায় অংশ নেওয়া বেশির ভাগ শিশুকেই জন্মের পর থেকে মায়ের বুকের দুধ পান করানো হয়েছে। তবে মায়ের দুধ কিংবা বাজারে কেনা দুধ পানে এসব ব্যাকটেরিয়ার আচরণে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়নি।
তবে মায়ের বয়স, জিনগত বিষয় এবং কততম সন্তান জন্ম দিয়েছেন, তার ওপর নবজাতকের অন্ত্রের পরিবেশ নির্ভর করে। যে মায়েরা গর্ভকালে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করেছেন, তাদের সন্তানের অন্ত্রে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি দেখা গেছে। সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/একেএ