সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

হাঁপানি ও হৃদরোগের সম্পর্ক

হাঁপানি ও হৃদরোগের সম্পর্ক

হাঁপানিকে সাধারণভাবে অ্যাজমা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। অ্যাজমা বংশগত রোগ হিসেবে বিবেচিত, যা সচরাচর বাল্যকাল থেকে বিদ্যমান থাকে। বিভিন্ন অ্যালার্জিক কারণে শ্বাসকষ্ট বৃদ্ধি পায়, যেমন- অ্যালার্জিক খাদ্যবস্তু, বাতাসে ভেসে বেড়ানো অ্যালার্জিক বস্তু, ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস ইত্যাদি। এ ধরনের অ্যালার্জিক কারণে শ্বাসকষ্ট হওয়াকেই চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় অ্যাজমা বলা হয়ে থাকে। এর সঙ্গে ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস ও ইমফাইসেমা নামক প্রায় একই ধরনের আরও দুটি অসুস্থতার জন্য মানুষ শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে থাকে। সময়ের আবর্তে এ ধরনের অসুস্থতার কারণে হৃৎপিণ্ড আক্রান্ত হয়ে শ্বাসকষ্ট আরও বেশি বৃদ্ধি পায় এবং তা বেশ জটিল আকার ধারণ করে, রোগী সবসময় শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকে, কাশির প্রকোপ ও তীব্রতা দুই-ই বৃদ্ধি পায়, রোগী কাজ-কর্ম সম্পাদনে অপারগ হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় গতানুগতিক চিকিৎসা রোগীর উপসর্গ কমাতে ব্যর্থ হয়। হৃদরোগ শ্বাসকষ্টের প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। শ্বাসকষ্টের আরও একটি বড় কারণ হিসেবে হৃদরোগকে দায়ী করা হয়। উচ্চ রক্তচাপজনিত হৃদরোগ, হৃৎপিণ্ডের বাল্বের সমস্যা, ইসকেমিক হার্ট ডিজিজ (হৃৎপিণ্ডে রক্ত সরবরাহের স্বল্পতা) কার্ডিও-মাইয়োপ্যাথি, রক্তশূন্যতাজনিত হৃদরোগ এবং বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হৃদরোগ হার্ট ফেইলুর ইত্যাদি। হৃদরোগজনিত শ্বাসকষ্টের সঙ্গে হৃদরোগের অন্য লক্ষণগুলো যেমন- বুকে ব্যথা, বুক ধড়ফড় করা, শারীরিক যোগ্যতা কমে যাওয়া ইত্যাদি বিদ্যমান থাকে।

উপরোল্লিখিত দু'ধরনের (অ্যাজমা ও হৃদরোগ) কারণে শ্বাসকষ্টের মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে।

রোগীর রোগ বৃদ্ধি পেয়ে হার্ট ফেইলুর সৃষ্টি হলে রোগীর লক্ষণগুলো এমন আকার ধারণ করে যে, তখন দুই ধরনের অসুস্থতাকে আলাদা করা প্রায়ই বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। বিশেষজ্ঞ ছাড়া এ রোগের চিকিৎসা অসম্ভব হতে পারে। দুই ধরনের শ্বাসকষ্টের শেষ পরিণতি হার্ট ফেইলুর তাই হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতে চিকিৎসা যুক্তিযুক্ত।

ডা. এম শমশের আলী, সিনিয়র কনসালট্যান্ট, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মুন ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শ্যামলী, ঢাকা।

 

 

সর্বশেষ খবর