শনিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ডিম কি নিশ্চিন্তে খেতে পারবেন?

অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ

ডিম কি নিশ্চিন্তে খেতে পারবেন?

প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় বিশেষ করে নাস্তার সময় সবাই ডিম খেতে পছন্দ করেন। সময় স্বল্পতার জন্য ভাতের সঙ্গে তরকারির বিকল্প হিসেবে ডিম ভাজি অনেককে খেতে হয়। প্রশ্নটা হলো প্রতিদিন বা নিয়মিত ডিম খাওয়া যাবে কি যাবে না, এ নিয়ে বিভ্রান্তি বা দ্বিধা-দ্ব›দ্ব ছিল এবং এখনো আছে। বিশেষ করে যাদের বয়স একটু বেশি, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, স্ট্রোক বা হƒদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন এমন রোগী অথবা যাদের রক্তে চর্বির পরিমাণ বেশি, তাদের ডিম খেতে নিষেধ বা সম্পূর্ণ বর্জন করতে বলা হতো। অনেকেই আবার ডিমের কুসুম বাদ দিয়ে শুধু সাদা অংশটুকুই খেতে বলতেন। এর কারণ একটাই, তা হলো ডিম খেলে কোলেস্টেরল বাড়ে, তাতে উচ্চরক্তচাপ, স্ট্রোক এবং হƒদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। এতদিনের এই ধারণাটা আসলে সত্যি নয়। ডিম খেলে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা ততটা বৃদ্ধি পায় না। একজন পূর্ণ বয়স্ক সুস্থ মানুষ দৈনিক গড়ে ৩০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত কোলেস্টেরল গ্রহণ করতে পারেন। আর একটি ডিমে রয়েছে মাত্র ২০০ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল। তাই বিশেষজ্ঞরা এমনকি আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন এখন আর তাদের খাদ্যের গাইড লাইনে ডিম খাওয়াকে নিরুৎসাহিত করছেন না। যে কোনো ব্যক্তি ডিমের সাদা অংশ খেলে কোনো সমস্যা তো হবেই না, এমনকি কুসুমসহ সম্পূর্ণ ডিম খেলেও উচ্চরক্তচাপ, কোলেস্টেরল ও হƒদরোগের ঝুঁকি থাকে না। একটি বড় গবেষণায় প্রতীয়মান হয়েছে, প্রতি সপ্তাহে পাঁচ-ছয়টি ডিম আহারে হƒদরোগ, স্ট্রোক বা অন্যান্য ধরনের হƒদরোগের কোনো ঝুঁকি নেই। ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে বলা হয়, দিনে একটি ডিম হার্টের জন্য ক্ষতিকর নয়। ডিমে আছে ভিটামিন এ, ই, বি৬, বি১২, ফলেট, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক, ম্যাঙ্গানিজ,  সেলেনিয়াম, অ্যামাইনো এসিড ইত্যাদি। ডিম খেলে এগুলো সহজলভ্য। ডিমের মধ্যে যে প্রোটিন, ভিটামিন বি১২, রাইবোফ্লেবিন, ফলেট ও ভিটামিন ডি রয়েছে, তা কোলেস্টেরল বৃদ্ধির ক্ষতিকর প্রভাব কমিয়ে দেয়। অনেকে হাঁস বা মুরগির ডিম এমনকি সাদা বা লালচে ডিম খাওয়া নিয়ে দ্বিধাদ্ব›েদ্ব ভুগেন, আসলে সব ধরনের ডিমের পুষ্টিগুণ একই রকম। কেউ আবার কাঁচা ডিম খেতে পছন্দ করেন, এমনকি কাঁচা ডিমের পুষ্টিগুণ বেশি বলে মনে করেন, এ ধারণাটাও সত্যি নয়। কাঁচা ডিম খেলে সালমোনেলা জাতীয় ব্যাক্টেরিয়ায় আক্রান্তের ঝুঁকি থাকে।

লেখক : ডিন, মেডিসিন অনুষদ, বঙ্গবন্ধু শেখ

মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর