রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

শীতে বাড়ে অ্যাজমার প্রকোপ

শীতে বাড়ে অ্যাজমার প্রকোপ

সারা বিশ্বের প্রায় ১০ কোটি লোক শ্বাসনালির অ্যাজমায় আক্রান্ত। এদের ৯০% এরও বেশি অত্যাধুনিক চিকিৎসা পায় না এবং অনেক রোগী মারা যায়। এ মৃত্যুর ৮০% প্রতিরোধ করা সম্ভব যদি আধুনিক চিকিৎসা ও ডাক্তারের তদারকির মাধ্যমে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণের শিক্ষা দেওয়া যায়। অ্যাজমা বা হাঁপানি আসলে শ্বাসনালির অসুখ। যদি কোনো কারণে শ্বাসনালিগুলো অতিমাত্রায় সংবেদনশীন হয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন ধরনের উত্তেজনায় উদ্দীপ্ত হয় তখন বাতাস চলাচলের

পথে বাধার সৃষ্টি হয়ে শ্বাস নিতে বা ফেলতে কষ্ট হয়। তবে গ্রীষ্মকালের তুলনায় শীতকালে প্রকোপ একটু বেশি। এর অন্যতম কারণ ধূলা বালি ও বিভিন্ন অ্যালাজেন দ্রব্য।

কাদের হতে পারে হাঁপানি : যে কোনো বয়সের স্ত্রী, পুরুষ, শিশু-কিশোর যে কারও হতে পারে। যাদের রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়দের হাঁপানি আছে তাদের এ রোগ হওয়ার আশঙ্কা প্রবল। আবার দাদা-দাদির থাকলে (বাবা-মায়ের না থাকলেও) নাতি-নাতনি বা  ছেলেমেয়েরা এ রোগে আক্রান্ত

হতে পারে। মাতৃকুল থেকে হাঁপানিতে আক্রান্ত

হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।

অ্যাজমা কি ছোঁয়াচে : না, অ্যাজমা ছোঁয়াচে রোগ নয়। পারিবারিক বা বংশগতভাবে অ্যাজমা হতে পারে। কিন্তু ছোঁয়াচে নয়। অ্যাজমায় আক্রান্ত মায়ের বুকের দুধ খেয়ে শিশুদের অ্যাজমায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই।

মায়ের সংস্পর্শ থেকেও হওয়ার আশঙ্কা নেই । 

অ্যাজমা রোগের প্রধান উপসর্গ বা লক্ষণগুলো হলো :

বুকের ভেতর বাঁশির মতো সাঁই সাঁই আওয়াজ। শ্বাস নিতে ও ছাড়তে কষ্ট। দম খাটো অর্থাৎ ফুসফুস ভরে দম নিতে না পারা। ঘন ঘন কাশি। বুকে আঁটসাঁট বা দম বন্ধ ভাব। রাতে ঘুম থেকে উঠে বসে থাকা।

চিকিৎসা : রক্তের বিশেষ পরীক্ষা ও বুকের এক্স-রে। স্কিন প্রিক টেস্ট : রোগীর চামড়ার ওপর বিভিন্ন এলার্জেন দিয়ে পরীক্ষা করা হয় এবং এই পরীক্ষাতে কোন জিনিসে রোগীর অ্যালার্জি আছে তা ধরা পড়ে।

স্পাইরোমেট্রি বা ফুসফুসের ক্ষমতা দেখা : এই পরীক্ষা করে ফুসফুসের অবস্থা সম্পর্কে সঠিক ধারণা করা যায়।

এলার্জেন পরিহার : হাঁপানির হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার সবচেয়ে সহজ পন্থা হলো যে জিনিসে অ্যালার্জি তা যতদূর সম্ভব এড়িয়ে চলা।

ওষুধ প্রয়োগ : প্রয়োজন

মতো ওষুধ ব্যবহার করে রোগী সুস্থ থাকেন।

ভ্যাকসিন : অ্যালার্জি দ্রব্যাদি এড়িয়ে চলা ও ওষুধের পাশাপাশি ভ্যাকসিনও অ্যাজমা রোগীদের সুস্থ থাকার অন্যতম চিকিৎসা পদ্ধতি। আগে ধারণা ছিল অ্যাজমা একবার হলে আর সারে না। কিন্তু বর্তমানে চিকিৎসা ব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। প্রথম দিকে ধরা পড়লে অ্যালার্জিজনিত অ্যাজমা রোগ একেবারে সারিয়ে তোলা সম্ভব। প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।

অধ্যাপক ডা. গোবিন্দ চন্দ্র দাস, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ, কনসালটেন্ট, দি অ্যালার্জি

অ্যান্ড অ্যাজমা সেন্টার, পান্থপথ, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর