শনিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

ওষুধ থেকেও ফুসফুসের রোগ!

অধ্যাপক ডা. একেএম মোস্তফা হোসেন

ওষুধ থেকেও ফুসফুসের রোগ!

বিভিন্ন কারণে ওষুধ সেবন করি, কখনো চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী, কখনো বিনা পরামর্শে। এর মধ্যে কিছু কিছু ওষুধ আমাদের ফুসফুসের নানা সমস্যা করে। ওষুধজনিত কারণে সমস্যার বিবরণ দেওয়া হলো :

হাঁপানি বেড়ে যাওয়া : হাঁপানি রোগীদের ওষুধ সেবনে  সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত; কারণ নিম্নে  উল্লেখ করা ওষুধগুলো হাঁপানি বাড়িয়ে দিতে পারে : প্রেসারের ওষুধ (মেটোপ্রোলল, এটিনোলল), গ্লুকোমার ওষুধ (টিমোলল); ব্যথানাশক ওষুধ (অ্যাসপিরিন, ডাইক্লোফেনাক, ন্যাপরো ক্সেন, মরফিন); অ্যান্টিবায়োটিকস  (এমক্সি-সিলিন, সেফালোস্পোরিন)।

খুসখুসে কাশি হওয়া : উচ্চরক্তচাপের ওষুধ ACE Inhibitor (র্যামিপ্রিল, লিসিনোপ্রিল, কার্ডোপ্রিল) খেলে খুসখুসে/ শুকনা কাশি হতে পারে। তবে ওষুধ বন্ধ করলে কাশি বন্ধ হয়ে যায়।

ফুসফুসে পানি জমে যাওয়া : অ্যাসপিরিন, ওপিয়াম জাতীয় ওষুধ (মরফিন, পেথেড্রিন), স্যালবিটামল (অতিমাত্রায়), হাইড্রোক্লোরোথায়াজাইড, মানসিক রোগের ওষুধ (ক্লোরপ্রোমাজিন, মিলেরিল) ইত্যাদি ওষুধের কারণে কখনো বুকে পানি জমে যেতে পারে। এমনকি এ কারণে রোগীর মৃত্যুও ঘটতে পারে।

অ্যালভিওলাইটিস : এ রোগে ফুসফুসের অক্সিজেন ও কার্বন-ডাই-অক্সাইডের চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে, ফলে রোগীর শ্বাসকষ্ট ও কাশি হয়। ক্যান্সারের ওষুধ (বুসালফান, মিটোমাইসিন, ক্লোরামা-বিউসিল, ব্লিওমাইসিন); এন্টিবায়োটিকস (নাইট্রোফুরান-টয়েন, পেনিসিলিন, সালফোনামাইড); হূদরোগের ওষুধ (কুইনিডিন, এমিওডেরন); খিঁচুনির ওষুধ (ফেনিটয়েন, কার্বামাজেপিন) বেশি সময় ধরে সেবন করলে এ রোগ হয়।

ফুসফুসের রক্তনালিতে জমাটবদ্ধ রক্ত :  জন্ম নিয়ন্ত্রণের ওষুধ (ইসট্রোজেন+ প্রোজেস্টেরন) বেশি সময় ধরে খেলে ফুসফুসের রক্তনালিতে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে বা অন্য জায়গা থেকে জমাটবদ্ধ রক্ত ফুসফুসের

রক্তনালিতে আটকা পড়ে, এতে শ্বাসকষ্ট, কাশির সঙ্গে রক্ত, হার্টফেইলর হয়। মনে রাখবেন প্রতিকার নয় প্রতিরোধ সর্বদা উত্তম। এছাড়া ওষুধ গ্রহণের পূর্বে চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

অন্যথায় হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

লেখক : বক্ষব্যাধি ও অ্যাজমা বিশেষজ্ঞ, মেডিনোভা, মালিবাগ, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর