মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

কিডনির কর্মক্ষমতা কমে বার্ধক্যে

ডা. সহেলী আহমেদ সুইটি

কিডনির কর্মক্ষমতা কমে বার্ধক্যে

বিশ্বের উন্নত দেশে কিডনি বিকল অর্থাৎ ধীরগতিতে কিডনি বিকলের প্রথম ও প্রধান কারণ ডায়াবেটিস কিন্তু বাংলাদেশে প্রথম এবং প্রধান ধীরগতিতে কিডনি বিকলের কারণ গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস অর্থাত্ কিডনির ইনফেকশন, যদিও ডায়াবেটিস কিডনি বিকলের দ্বিতীয় কারণ তবু বাংলাদেশেও ডায়াবেটিসের প্রকোপ বেড়েই চলেছে। সেক্ষেত্রে খুব শিগগির ডায়াবেটিসও ধীরগতিতে কিডনি বিকলের প্রথম ও প্রধান কারণ হতে পারে। এ ছাড়া উচ্চরক্তচাপ  Obstructive Uropathyও দীর্ঘদিন ওষুধ সেবনসহ নানা কারণে CKD হয়। তাই ৪০ বছরের বেশি হলেই আপনার কিডনি সুস্থ আছে কিনা দেখে নিন, কারণ বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিডনির কর্মক্ষমতা হ্রাস পেতে থাকে। তাই বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিডনির প্রতি যত্নবান হতে হবে। এবার আসা যাক আকস্মিক কিডনি বিকল প্রসঙ্গে। সাধারণত বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে Rota Viral Diarrhoea কারণে আকস্মিক কিডনি বিকল  (AKI) হয়। এ ছাড়া মহিলাদের গর্ভপাত জনিত Septicaemia  অথবা ইনফেকশনের কারণেও আকস্মিক কিডনি বিকল হয়। মহিলাদের ডেলিভারি বা সন্তান প্রসবের পর অধিক রক্তক্ষরণ ও আকস্মিক কিডনি বিকল হয়। এ ছাড়া কিডনির পাথরসহ যে কোনো অ্যান্টিবায়োটিকের কারণেও আকস্মিক কিডনি বিকল হয়। কিডনি সুস্থ কিনা সে জন্য কিডনি পরীক্ষা বা Renal Function Testকরতে হবে। যেমন রক্তের -CBC (Complete Blood Count)-Serum Creatinine (রক্তের ক্রিয়েটিনিন।  -Urine -R/M/E (প্রস্রাবের পরীক্ষা) -US‰ of NUB e PVR (আলট্রাসনোগ্রাফি)-X-Ray of NUB e lumbosacal spine তাই সবাইকে কিডনি রোগের ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। যত্নবান হতে হবে কিডনি রোগ প্রতিরোধে।

কিডনি রোগ প্রতিরোধে করণীয় : ১. যে সব রোগী দীর্ঘদিন ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপে ভুগছেন তারা আজই কিডনি পরীক্ষা করে জেনে নিন কিডনি সুস্থ আছে কিনা, আর ব্লাড সুগার ও উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন কিডনি সুস্থ রাখার জন্য। ২. চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো অবস্থাতেই ব্যথানাশক ওষুধ কিংবা অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না। ৩. মহিলারা যেখানে-সেখানে গর্ভপাত করবেন না। কারণ ইনফেকশন বা অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে কিডনি বিকল হতে পারে। ৪. ডায়রিয়া হলে যাতে পানিশূন্যতা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। সে জন্য খাবার স্যালাইন খাবেন। ৫. শিশুদের খোসপাঁচড়া হলে অবহেলা না করে চিকিত্সকের পরামর্শ নেবেন। ৬. মহিলাদের প্রস্রাবে ইনফেকশন প্রতিরোধে পরিমাণ মতো পর্যাপ্ত পানি খাবেন। প্রস্রাব আটকে রাখবেন না। ৭. কিডনির পাথর প্রতিরোধে পর্যাপ্ত পানি খাবেন, যাতে ছোট পাথর হলে প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। ৮. পুরুষদের প্রোস্টেট গ্লান্ড বড় হয়ে গেলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। সুতরাং কিডনির যত্ন নিন এবং সুস্থ জীবনযাপন করুন।

লেখক : সহকারী অধ্যাপক, কিডনি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর