সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ঈদে স্বাস্থ্য সমস্যা ও করণীয়

ডা. সহেলী আহমেদ সুইটি

ঈদে স্বাস্থ্য সমস্যা ও করণীয়

ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। আর এই ঈদে আমাদের সবারই সুস্থতা কাম্য। কোরবানির ঈদ মানে আত্মত্যাগ। আমরা কোরবানি দিই আত্মত্যাগ আত্মশুদ্ধির জন্য। পশুর হাট থেকে শুরু করে দৈনন্দিন জীবনে যে কোনো স্বাস্থ্য সমস্যাই হতে পারে। তাই গরু কেনার সময় যাতে শিং দ্বারা দুর্ঘটনা না ঘটে কিংবা গরু বা খাসি ছুটে গেলে পিছনে পিছনে দৌড়াতে গিয়ে দুর্ঘটনা না ঘটে সেজন্য সচেতন হতে হবে। এছাড়া যারা দীর্ঘদিন ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, কিডনির রোগী তাদের নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে এবং ঈদ বলেই যে ভূরিভোজ করবেন তা কিন্তু নয়। অবশ্যই পরিমিত খাবেন, পর্যাপ্ত সালাদ এবং টকদই খেতে পারেন, পানি সেবনের ব্যাপারেও সচেতন হতে হবে। তবে ধীরগতিতে কিডনি বিকল রোগীরা অবশ্যই বেশি পানি খেলে শরীরে পানি চলে আসবে আর ফলমূলও খুব বেশি খাবেন না, যেমন ডাব, কলা ইত্যাদি বেশি পটাশিয়ামযুক্ত ফল কিডনি রোগীরা খাবেন না। ঈদে ডায়রিয়া থেকে আকস্মিক কিডনি বিকল হতে পারে, তাই ডায়রিয়া হলে খাবার স্যালাইন খাবেন যাতে পানিশূন্যতা বা লবণের ঘাটতি না হয়। ডায়াবেটিস রোগীরা সবসময় ব্লাড সুগার চেক করবেন এবং উচ্চরক্তচাপের রোগীরা ব্লাড প্রেসার মাপবেন নিয়মিতভাবে। ওষুধ নিয়মিত খাবেন কিন্তু মনে রাখতে হবে ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত অ্যান্টিবায়োটিক বা ব্যথানাশক ওষুধ খাবেন না। কারণ আকস্মিক কিডনি বিকল হয়ে রোগী মারাও যেতে পারেন। ওষুধ যেমন জীবন রক্ষাকারী তেমনি ক্ষতিরও কারণ। যাদের বাসায় বয়স্ক রোগী আছে তারা সচেতন থাকবেন। সব সরকারি হাসপাতালে ইমার্জেন্সি সার্ভিস আছে এবং চিকিৎসকরাও ২৪ ঘণ্টা আপনাদের পাশেই আছেন। তাই দুশ্চিন্তার কারণ নেই। আরেকটি বিষয়, পশু জবাইয়ের সময় সতর্ক থাকবেন আশপাশে যাতে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। নিজেরা সচেতন হয়ে নির্দিষ্ট স্থানে বর্জ্য ফেলুন। কারণ পরিবেশ দূষণ থেকে বিভিন্ন রোগ হতে পারে। অতিরিক্ত স্বাস্থ্যবান গরু কিন্তু অসাধু ব্যবসায়ীদের স্টরয়েড ট্যাবলেটের মাধ্যমে মোটাতাজা করে যা খেলে আমরা অসুস্থ হয়ে যাই। তাই অবশ্যই সুস্থ গরু কিনবেন।

গরুর মাংস কষিয়ে অনেকক্ষণ সিদ্ধ করে রান্না করবেন, কারণ অনেক সময় নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় পর্যাপ্ত সিদ্ধ না করলে বোভাইন টিবিসহ বিভিন্ন রোগ হতে পারে। আমরা সবাই সুস্থভাবে সুন্দরভাবে ঈদ করব এটাই আমাদের প্রত্যাশা। সবাইকে অগ্রিম ঈদ শুভেচ্ছা ও ঈদ মোবারক।

লেখক : সহকারী অধ্যাপক, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। ফোন: ০১৫৫৬৩২৭৭৭৩

সর্বশেষ খবর